লালমনিরহাটে বউ-জামাই মেলা অনুষ্ঠিত
কুড়িগ্রাম প্রতিনিধিঃ লালমনিরহাটে মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে প্রতি বছরের মতো এবারও লালমনিরহাটের সদর উপজেলার বড়বাড়ি শহীদ আবুল কাশেম ডিগ্রি কলেজ মাঠে ১৫ দিনব্যাপী গ্রাম-বাংলার ঐতিহ্য বৌ-জামাই মেলার আয়োজন করা হয়।
গত সোমবার ১৬ ডিসেম্বর বিকেলে মেলার উদ্বোধন করেন বিএনপির রংপুর বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যক্ষ আসাদুল হাবীব দুলু। ১৬ ডিসেম্বর থেকে শুরু হওয়া এ মেলা চলবে আগামী ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত।
সরেজমিনে দেখা গেছে, বউ-জামাই মেলার প্রথম দিন ছিল উপচেপড়া ভিড়। মেলায় এসে আনন্দ উপভোগ করেছেন অনেকে। জেলার বিভিন্ন এলাকা ছাড়াও আশপাশের জেলা থেকে দর্শনার্থীরা মেলায় এসেছেন। মেলায় হরেক রকমের পিঠা ও নানা প্রজাতির মাছ নিয়ে দোকানিরা পসরা সাজিয়ে বসেছেন। এবার বউ-জামাই মেলায় বড় বড় মাছের স্টল, পিঠা স্টল ও অন্যান্য প্রসাধনী পণ্যের স্টল স্থান পেয়েছে। এদিকে মেলা উপলক্ষে সদর উপজেলার ৪টি ইউনিয়নের প্রায় প্রতিটি বাড়িতে এসেছেন মেয়ে ও তাদের জামাইরা। মেলায় গিয়ে শ্বশুরবাড়ির জন্য কিনেছেন বড় মাছ ও নানা রকমের মিঠা।
মেলায় আসা দর্শনার্থীরা জানান, অনেক আশা নিয়ে মাছ ও পিঠা নিতে এ মেলায় এসেছি। কিন্তু বিক্রেতারা মাছ ও পিঠার দাম বেশি বলছেন। তবে দাম যাই হোক গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য ধরে রাখার জন্য মেলায় আসা বউ ও জামাই পছন্দমতো মাছ ও পিঠা কিনে শ্বশুরবাড়ির দিকে রওনা দিচ্ছেন।
বিক্রেতারা জানান, বেশি দাম দিয়ে বিভিন্ন জিনিসপত্র কিনতে হচ্ছে। এ কারণে বেশি দামে বিক্রি করতে হয়। মেলায় বিক্রি বেশি হয় তাই লাভ কম করি।
মেলা আয়োজক কমিটির আহ্বায়ক ফারুক সিদ্দিকী বলেন, গ্রামীণ ঐতিহ্যকে ধরে রাখতে বউ-জামাই মেলার আয়োজন করা হয়েছে। জামাই মেলা থেকে বড় মাছ কিনে শ্বশুরবাড়ি যাবে আর হরেক রকম পিঠা খাবে। এ ছাড়া নতুন প্রজন্মের শিশুরা বিলুপ্ত প্রায় অনেক প্রজাতির মাছের সঙ্গে পরিচিত হতে পারবে। সব মিলিয়ে গ্রাম-বাংলার হারানো ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতেই মূলত এ ব্যতিক্রমী মেলার আয়োজন করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, এই মেলাটির তাৎপর্য হলো এ অঞ্চলের জামাইরা তাদের স্ত্রীদের নিয়ে মেলায় আসেন। তারপর বড় বড় মাছ নিয়ে শ্বশুড় বাড়িতে যাবে। শাশুড়ি দুপুরের রান্না করবেন। শ্বশুড়বাড়ির সবাই বড় মাছ দিয়ে দুপুরের খাবার খাবেন। খেয়ে আবার বিকেলে পিঠার মেলায় এসে পিঠা খাবেন এবং বিভিন্ন গ্রামীণ নাটক ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান উপভোগ করবেন।