সোমবার, ৬ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ -muktinews24(তথ্য মন্ত্রনালয় কর্তৃক নিবন্ধনকৃত, রেজি নং-৩৬)

দেশের প্রতিটি মানুষের জীবনমান উন্নত করতে চাই : প্রধানমন্ত্রী

দেশের প্রতিটি মানুষের জীবনমান উন্নত করতে চাই : প্রধানমন্ত্রী

মুক্তিনিউজ২৪ ডট কম ডেস্ক : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, এদেশের প্রতিটি মানুষের জীবনকে অর্থবহ করে তাদের জীবনমান উন্নত করতে চাই। আমার বাবারও এটিই লক্ষ্য ছিল

 

জাতির পিতা যে স্বাধীনতা এনে দিয়েছেন, সেটা যাতে ব্যর্থতায় পর্যবসিত না হয়, সেদিকে সকলকে লক্ষ্য রাখার নির্দেশনাও দেন তিনি।

বৃহস্পতিবার (১৭ আগস্ট) গণভবন থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সর্বজনীন পেনশন স্কিমের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে সংযুক্ত হয়ে এ কথা বলেন।

 

শেখ হাসিনা বলেন, শোকের মাসেই আমরা এই পেনশন স্কিম উদ্বোধন করছি। কারণ আমার পিতা হয়তো দেখবেন। তিনি খুশি হবেন। তার প্রিয় দুখী মানুষের মুখে হাসি ফোটানোর জন্য আমরা সর্বজনীন পেনশন চালু করছি। এতে তাদের অর্থনৈতিক সুরক্ষা থাকবে। কারও কাছে হাত পাততে হবে না।

 

প্রায় ১০ কোটি মানুষের পেনশন সুবিধার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আজকের দিনটি আমাদের অনন্য সাধারণ দিন। কারণ বাংলাদেশের ইতিহাসে এই দিনটি স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে। আজ আমরা আমাদের উন্নয়নের পরিকল্পনা, সেখানে তৃণমূলের মানুষ, অবহেলিত মানুষকে অন্তর্ভুক্ত করতে পারছি।’

 

সর্বজনীন পেনশন সুবিধা প্রণয়নের কারণ উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের সরকারি অফিসাররা পেনশন পায়। তাদের অবসর জীবন-যাপনে তাদের একটা সুরক্ষা আছে। কিন্তু আমাদের সাধারণ মানুষ যখন কর্মক্ষমতা হারায় তখন তো তাদের আর কোনো সুযোগ থাকে না।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা ৯৬ সালে ক্ষমতায় আসার পর বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতা, প্রতিবন্ধী ভাতা—বিভিন্ন ভাতা চালু করি। এর কারণ হলো, অন্তত একজন বয়োবৃদ্ধ যেন তার বাড়িতে স্থান পায়। তার হাতে যেন কিছু টাকা থাকে, তিনি যেটা খরচ করতে পারেন। সংসার বা পরিবারের কাছে তার একটা মূল্য থাকে।’

 

আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘অনেক আগে, আমি বাংলাদেশে আসার পর আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে একটা উদ্যোগ নিয়েছিলাম। কারণ আওয়ামী লীগের নেতারা সব সময় খুব নির্যাতিত হয়েছে। সব সময় তাদের ওপর কারাযন্ত্রণা, তাদের ছেলে-মেয়েরা কষ্ট ভোগ করেছে, তাদের ওপর অকথ্য অত্যাচার, তাদের ধরে নিয়ে নির্যাতন, মেরে ফেলা, গুম করে ফেলা। এই অবস্থা থেকে আমাদের নেতাকর্মী ও তাদের পরিবারের সুরক্ষার জন্য আমরা একটা উদ্যোগ নিয়েছিলাম। সেটা হচ্ছে আওয়ামী ফাউন্ডেশন গঠন করে তার মাধ্যমে এ ধরনের একটি পেনশন ব্যবস্থা আমরা কিন্তু প্রবর্তন করি।’

 

শেখ হাসিনা বলেন, শোকের মাসেই আমরা এই পেনশন স্কিম উদ্বোধন করছি। কারণ আমার পিতা হয়তো দেখবেন। তিনি খুশি হবেন। তার প্রিয় দুখী মানুষের মুখে হাসি ফোটানোর জন্য আমরা সর্বজনীন পেনশন চালু করছি। এতে তাদের অর্থনৈতিক সুরক্ষা থাকবে। কারও কাছে হাত পাততে হবে না।

জাতির পিতা যে স্বাধীনতা এনে দিয়েছেন, সেটা যাতে ব্যর্থতায় পর্যবসিত না হয়, সেদিকে সকলকে লক্ষ্য রাখার নির্দেশনাও দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

 

 

শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের সরকারি চাকরিজীবীরা পেনশন পান। যারা চাকরি করে না তারা তো পান না। কাজেই এটা সরকারি চাকরিজীবীর জন্য নয়। যারা সরকারি চাকরি করেন, বেতন পান, তাদের জন্য এটা প্রযোজ্য হবে না। সরকারি চাকরির বাইরে যে জনগোষ্ঠী, শুধুমাত্র তাদের জন্য এই ব্যবস্থাটা আমরা করেছি। এটা করে তারা সম্মানজনকভাবে বাঁচতে পারে। যার ফলে মানুষের মধ্যে যে বৈষম্য আছে সেটাও দূর হবে।

 

সরকারপ্রধান বলেন, বাংলাদেশের ওপর দিয়ে অনেক ঝড় বয়ে গেছে। একদিকে করোনা অন্যদিকে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ। এরই মধ্যে মিলিটারি ডিক্টেটরদের হাতে গড়া দলের ধ্বংসযজ্ঞ। এসব মোকাবিলা করে দেশ এগিয়ে নিচ্ছি। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, দারিদ্র্য ও অতিদারিদ্র্য দূরীকরণ, সামাজিক নিরাপত্তাসহ সব খাতে সেবা দিচ্ছি।

তিনি আরও বলেন, বাবা-মা-ভাই সবই তো হারিয়েছি। আমার তো কেউ নাই। ১৯৮১ সালে দেশে এসে কাউকে তো দেখিনি, যারা আমায় বিদায় দিয়েছে। কিন্তু আমি পেয়েছি, এই দেশের মানুষকে আমার পাশে। আমি মনে করি, এই দেশের মানুষই আমার আপনজন। এদেশের প্রতিটি মানুষের জীবনকে অর্থবহ করে তাদের জীবনমান উন্নত করতে চাই। আমার বাবারও এটিই লক্ষ্য ছিল।

 

অর্থমন্ত্রী আ হ ম মোস্তফা কামাল ও বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন।

 

জানা গেছে, সর্বজনীন পেনশনে রয়েছে ৪টি স্কিম। প্রবাসী বাংলাদেশি নাগরিকদের জন্য প্রবাস স্কিম। বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মচারীদের প্রগতি স্কিম। স্বকর্মে নিয়োজিত নাগরিকদের জন্য সুরক্ষা স্কিম। স্বকর্মে নিয়োজিত স্বল্প আয়ের নাগরিকদের জন্য সমতা স্কিম।

 

উদ্বোধনী অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্যসচিব মো. তোফাজ্জল হোসেন মিয়া। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন অর্থবিভাগের সিনিয়র সচিব ফাতেমা ইয়াসমিন।

 

শুরুতে চার শ্রেণির ব্যক্তি পেনশন কর্মসূচির আওতায় আসছেন। তারা হচ্ছেন- প্রবাসী বাংলাদেশি, বেসরকারি চাকরিজীবী, অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতের কর্মী এবং অসচ্ছল ব্যক্তি।

 

মাসিক চাঁদা ধরা হয়েছে সর্বনিম্ন ৫০০ টাকা আর সর্বোচ্চ ৫ হাজার টাকা পর্যন্ত। তবে কর্মসূচি পরিবর্তন এবং চাঁদার পরিমাণ বাড়ানোর সুযোগ থাকছে।

 

পেনশন কর্তৃপক্ষের ওয়েবসাইট চালু হয়েছে গতকাল বুধবার। ওয়েবসাইটের ঠিকানা www.upension.gov.bd। এতে বলা হয়েছে, ‘সর্বজনীন পেনশন স্কিমে অংশগ্রহণ করে আপনার ভবিষ্যৎ আর্থিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করুন।’ ওয়েবসাইটের ঠিকানায় পেনশন স্কিমগুলো সম্পর্কে প্রাথমিক তথ্য উল্লেখ করা আছে।

বিভাগ
শেয়ার করুন

মতামত লিখুন