সান্তাহার রাধাকান্ত হাটে সামান্য বৃষ্টিতেই পানি জমে বেচাকেনায় ব্যবসায়ীদের ভোগান্তি
এএফএম মমতাজুর রহমান
আদমদীঘি (বগুড়া) প্রতিনিধি ঃ
বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলার সান্তাহার পৌরসভার এক মাত্র হাট সান্তাহার রাধাকান্ত হাট। সান্তাহার পৌরভবনের উত্তর-পশ্চিমে ২০০ মিটার দূরে এই হাটের অবস্থান। এটি পৌরসভার এক মাত্র প্রধান হাট। এলাকাবাসী জানিয়েছে প্রায় দেড় শত বছর পূর্বে রাধাকান্ত নামের এক ব্যক্তি এই হাটের জায়গা দান করেন। তাঁর নামেই এ হাটের নাম হয় রাধাকান্ত হাট। বর্তমান এ হাটের সমস্যার শেষ নেই। সমস্যা সমাধানের উদ্যোগও নেই পৌরসভার। এ হাটের পানিনিষ্কাশন ব্যবস্থা অকেজো হয়ে পড়েছে। দীর্ঘদিন ধরে এ অবস্থা চলছে। উপজেলার সান্তাহার পৌরসভার রাধাকান্ত হাটে সামান্য বৃষ্টিতেই পানি জমে যায়। আর ভারী বৃষ্টি হলে হাঁটু পানি জমে, সৃষ্টি হয় জলাবদ্ধতার। দোকানে পানি ঢুকে পড়ে। এতে হাটের ব্যবসায়ী, দোকানি ও ক্রেতারা ভোগান্তিতে পড়েন। হাটের ব্যবসায়ীরা জানান, হাটের পানিনিষ্কাশন ব্যবস্থা অকেজো হয়ে পড়েছে। দীর্ঘদিন ধরে এ অবস্থা চলছে। তাঁদের ভোগান্তিরও শেষ নেই।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, এখানে হাট বসে সপ্তাহের শনি, মঙ্গল ও বুধবার। শনি ও মঙ্গলবার শহরের আশপাশের এলাকার চারপাশ থেকে লোকজন আসেন। সকাল থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত ক্রেতা-বিক্রেতার আগমনে হাট সরগরম হয়ে ওঠে। বুধবার বসে গামছা ও লুঙ্গির হাট। পাবনা, সিরাজগঞ্জ, জয়পুরহাট ও নওগাঁ থেকে ক্রেতা ও বিক্রেতারা এই হাটে আসেন। ভোর থেকে রাত পর্যন্ত কেনাবেচা চলে। প্রতি হাটে প্রায় অর্ধকোটি টাকার লেনদেন হয়। চলতি ১৪৩০ বাংলা সনে এই হাট ৫৬ লাখ ৩০ হাজার টাকায় ইজারা দেওয়া হয়েছে। হাটের ইজারা মূল্য ও টোল হার বৃদ্ধি পেলেও এর দৃশ্যমান কোনো উন্নয়ন হয়নি। হাটে আসা জয়পুরহাটের আক্কেলপুর উপজেলার কানুপুর গ্রামের সবজি ব্যবসায়ী জহির মিয়া বলেন, ‘অনেক মেহনত করে ও অতিরিক্ত ভাড়া দিয়ে কাঁচা সবজি নিয়ে সান্তাহার রাধাকান্ত হাটে আসি। যেদিন সামান্য বৃষ্টি হয়, সেদিন হাটে হাঁটু পানি জমে। বৃষ্টির দিন বিক্রি খুব কম হয়। ফলে লোকসান গুনতে হয়। একই কথা বলেন, সান্তাহার শহরসংলগ্ন সান্দিড়া গ্রামের মাছ ব্যবসায়ী সহরাব আলী। গামছা ও লুঙ্গি ব্যবসায়ী তছলিম উদ্দীন বলেন, যেদিন বৃষ্টি হয়, সেদিন কেনাবেচা অনেক কমে যায়। দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে এখানে ব্যবসায়ীরা আসেন। হাটের মুদিদোকানি নিহার চন্দ্র বলেন, ‘বহুদিন ধরে আমি এই হাটে ব্যবসা করে আসছি। হাটের অবকাঠামোর তেমন কোনো উন্নয়ন হয়নি। দূরের ব্যবসায়ীরা হাট থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন। সান্তাহার পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর নজরুল ইসলাম বলেন, বর্তমানে রাধাকান্ত হাটের কোনো কমিটি নেই। এর সার্বিক বিষয় পৌরসভা দেখভাল করে থাকে।
এ ব্যাপারে সান্তাহার পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী রেজাউল করিম বলেন, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর থেকে কিচেন মার্কেট প্রকল্পের অধীনে রাধাকান্ত হাটের উন্নয়ন করার প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। ইতিমধ্যে দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। দরদাতাদের দেওয়া দর ও কারিগরি দিক মূল্যায়ন করার কাজ চলছে।