শুক্রবার, ৩রা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ -muktinews24(তথ্য মন্ত্রনালয় কর্তৃক নিবন্ধনকৃত, রেজি নং-৩৬)

তিতুমীর কলেজ ‘নাট্যদলের’ ৪র্থ প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত

তিতুমীর কলেজ ‘নাট্যদলের’ ৪র্থ প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত

মুক্তিনিউজ২৪ ডট কম ডেস্ক : নাটককে জীবনের দর্পণ বলা হয়। মানব জীবনের নানা ঘটনার শৈল্পিক অভিব্যক্তিই প্রকাশ পায় নাটকে। রাজধানীর  সরকারি তিতুমীর কলেজে নাট্যদলের ৪র্থ প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে “আনন্দ আয়োজন” উদযাপিত হয়েছে। নাটকের মাধ্যমে জীবনের প্রতিচ্ছবিকে দৃশ্যমানের মধ্যে দিয়ে বিভিন্ন নাটক মঞ্চস্থ করছে তিতুমীর নাট্যদল। শিল্প নন্দনে পাল্টাই জীবন ও জগৎ’ এই স্লোগানকে ধারণ করে ২০১৯ সালের ২৪ আগস্ট প্রতিষ্ঠিত হয় তিতুমীর কলেজের সাংস্কৃতিক সংগঠন ‘তিতুমীর নাট্যদল’। আজ সংগঠনটি চতুর্থ বর্ষ পার করে পঞ্চম বর্ষে পদার্পণ করছে। তিতুমীর নাট্যদল প্রতিষ্ঠার পর থেকে নানাভাবে সাংস্কৃতিক অঙ্গনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। বিভিন্ন নাটক উপস্থাপনের মাধ্যমে সামাজিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক বিষয়ক বিভিন্ন তথ্য উপাত্ত দর্শকের মাঝে তুলে ধরে শিক্ষাথীদের সচেতনতা বৃদ্ধিতে অগ্রণী ভূমিকা রাখছে। দেশের ইতিহাস ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি নিয়ে নাটক মঞ্চস্থ করে তুলে ধরেছেন তিতুমীর নাট্যদল। তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য  নারীদের নিপীড়ন নিয়ে সাধনা এবং ঝিনুক। প্রাকৃতিক দুর্যোগ বিষয়ক প্রতিবিধান প্রমূখ। আজ বেলা ১১টায় তিতুমীর নাট্যদল শহীদ বরকত মিলনায়তনে সাদিয়া রুম্মানের নির্দেশনায় মঞ্চস্থ করেন রবী ঠাকুরের কাদম্বরী। চতুর্থ বর্ষ পূর্তি উদযাপন উপলক্ষে তিতুমীর নাট্যদলের মডারেটর পদার্থ বিজ্ঞানের সহযোগী অধ্যাপক জুয়েনা শবনম বলেন, নাটক জীবনেরই সুদৃশ্য রূপায়ণ।নাটকের মাধ্যমে নাট্যকারের বলিষ্ঠ জীবনবোধ, জীবনাদর্শন ও বাস্তব দৃষ্টিভঙ্গি প্রকাশ পায়। আমাদের শিক্ষার্থীরা নাটকের মতো কঠিন শিল্প নিয়ে কাজ করছে। এটা সত্যিই গৌরবের। অন্যান্য শিল্প যেভাবে আসস্ত করা যায় কিন্তু নাটকের মতো কঠিন শিল্প সেভাবে করা যায় না। এরজন্য চাই কঠোর সাধনা, ইচ্ছা, পরিশ্রম ও অনেক বেশি রিয়ার্সেল। শিক্ষার্থীরা অন্য কাজে সময় ব্যয় করতে পারতো , কিন্তু তারা নাটক করছে। এটা সত্যিই ভালো লাগার বিষয়। তিনি প্রত্যাশা করেন তিতুমীর নাট্যদল আরো নতুন নতুন নাটক মঞ্চস্থ করবে এবং জাতীয় পর্যায়ে সেরা অবস্থানে পৌঁছাবে। তিতুমীর নাট্যদলের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি অলিউল্লাহ তুহিন বলেন, সব অনুভূতি ব্যক্ত করা যায় না। তাও বলি তিতুমীর নাট্যদল আমার প্রতিষ্ঠিত স্বপ্ন, আমার সন্তান, আমার ভালোবাসার কুঠুরি। এখানে এলে, এ সংগঠনের সাথে জড়িত মানুষদের সাথে বসে কথা বললে নিজের সকল দুঃখ কষ্ট ভুলে যাই, এককথায় নতুন করে বাঁচতে শিখি। প্রতিষ্ঠালগ্নের কথা যদি বলি আমি  তখন অনার্স প্রথম বর্ষে পড়ি। ক্যাম্পাসে প্রবেশের পরই অনেক সংগঠনের উপস্থিতি পেলেও থিয়েটার ছিলো না। আমি আগে থেকেই থিয়েটার করতাম সে খিদে থেকেই থিয়েটার সংগঠন করার জন্য বেকুল হয়ে পরলাম। প্রতিষ্ঠালগ্নের পথচলায় বন্ধু আশরাফ, আল-আমীন, ইয়াসিন, রিফাত, ইশিতা না থাকলে হয়তো তিতুমীর নাট্যদল প্রতিষ্ঠা করা কঠিন হয়ে যেতো। কঠিন থেকেও কঠিনতর হয়ে যেতো যদি সালমা বেগম ও জুয়েনা শবনম ম্যাম  সাহায্যের হাত বাড়িয়ে না দিতেন। তিনি আরো বলেন, অভিজ্ঞতার কথা যদি বলি  মিষ্টি  তেঁতো সকল অভিজ্ঞতাই রয়েছে। সকল কিছুতে একদল রক্তের দোষের লোক থাকবেই। ওরা সুন্দর একটা জিনিসকে নষ্ট করার জন্যই হয়তো তৈরি । তবে আমরা এতো এতো ভালোবাসা পেয়েছি, এতো গুণীজনের আদর পেয়েছি, ফলে কুচক্রীরা পেরে উঠেনি এবং উঠেও না। কারন আমরা থিয়েটার কর্মীরা ঝঞ্ঝা, টর্নেডো,সুনামীর মতো উত্তাল। অলিউল্লাহ তুহিন প্রত্যাশা করেন,তিতুমীর নাট্যদল যুগে যুগে আলো ছড়িয়ে যাবে। সমাজের জন্য, দেশের জন্য কাজ করবে। একদিন দেশের গন্ডি পেরিয়ে বিদেশে কৃতিত্বের স্বাক্ষর রাখবে। তিতুমীর নাট্যদলের একনিষ্ঠ নাট্যপ্রেমী যোদ্ধা তাদের কর্মদক্ষতার মাধ্যমে সফলতার মুকুট ছিনিয়ে আনবে। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সরকারি তিতুমীর কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর ফেরদৌস আরা বেগম ও তিতুমীর কলেজের উপাধ্যক্ষ মো. মহিউদ্দিন। অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন, তিতুমীর কলেজের প্রাক্তন অধ্যক্ষ তালাত সুলতানা ,বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার প্রাপ্ত প্রফেসর ড.রতন সিদ্দিকী এবং তিতুমীর কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মো. রিপন মিয়া ও শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুল হক জুয়েলসহ অন্যান্য শিক্ষক ও শিক্ষার্থীবৃন্দ।

বিভাগ
শেয়ার করুন

মতামত লিখুন