শনিবার, ২৩শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ -muktinews24(তথ্য মন্ত্রনালয় কর্তৃক নিবন্ধনকৃত, রেজি নং-৩৬)

এবার উত্তাপ ছড়াচ্ছে ফলের বাজার ফলের বাজারে আগুন, কেনা এখন বিলাসিতা

এবার উত্তাপ ছড়াচ্ছে ফলের বাজার  ফলের বাজারে আগুন, কেনা এখন বিলাসিতা

 

মাসুদ রানা,খানসামা (দিনাজপুর) প্রতিনিধি; চিনি, ডিম কাঁচামরিচের দাম বাড়ার পর থেকে নিত্যপ্রয়োজনীয় সব জিনিসের দাম একে একে বাড়তে শুরু করেছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে বেড়েছে দেশি ও বিদেশি ফলের দাম। দিনাজপুরের খানসামায় ফলের বাজাগুলোতে উত্তাপ ছড়াচ্ছে। আগে পরিবারের জন্য যারা নিয়মিত ফল কিনতেন, তারা বাজারের তালিকা থেকে পুষ্টিকর এ পণ্যগুলো বাদ দিচ্ছেন। এছাড়া খুব প্রয়োজনে খরচ সমন্বয় করতে একটি-দুটি করে ফল ওজন দিয়ে কিনছেন। দেশীয় ফলেও নেই স্বস্তি। মোটকথা মধ্যবিত্ত এবং গরিবের যেন ফল ধরতেই মানা।

অনেকেই খাওয়া ছেড়ে দিয়েছেন, আবার অনেকেই প্রয়োজনে সীমিত পরিমাণে কিনে খাচ্ছেন। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই কোন ব্যক্তি যদি রোগী দেখতে যান তারাই সাধারণত কিনছেন। এছাড়াও কোন আত্মীয় স্বজনের বাড়ি গেলে এ ফল কিনছেন। ছোট-বড় ফলের দোকানে ভালো মানের বিদেশি ফল তিনশ টাকার নিচে মিলছেনা। দামের আধিক্যতার কারণে অনেক ক্রেতাই বিশেষ করে মধ্যবিত্ত ও নিম্নমধ্যবিত্তরা দাম শুনেই ফলের দোকানের সামনে থেকেই ঘুরে চলে যাচ্ছেন।

মঙ্গলবার (৫ সেপ্টেম্বর) সরেজমিনে উপজেলার খানসামা বাজার ও পাকেরহাট ফলের বাজার ঘুরে দেখা গেছে, মানভেদে প্রতি কেজি আপেল ও কমলা বিক্রি হচ্ছে ২৮০-৩০০ টাকা, প্রতি কেজি সাদা আঙুর ৪০০ ও লালচে আঙুর ৪৬০, ড্রাগন ২৮০-৩৫০ টাকা, বেদনা ৪০০ টাকা, সেহরী ফল ৪৬০-৫০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। মাল্টার কেজি ৩০০ থেকে ৩২০ টাকা, আম প্রকার ভেদে বিক্রি হচ্ছে ১২০-২০০ টাকা, পেয়ারা ৭০-৮০ টাকা,আমড়া ৪০-৫০ টাকা, নারিকেল প্রতি পিস ১০০ টাকা, বড় আনারস ১৫০-১৮০ টাকা জোড়া, ছোট আনারস ১০০ টাকা জোড়া হিসেবে বিক্রি হচ্ছে। একই চিত্র অনান্য ফলের বাজারগুলোতে দেখা যায়।

অনেকেই ব্যক্ত করছেন মনের কথা। তারা বলেন, অসহনীয় দামের কারণে এখন আর ফল কেনা হয় না। নিত্যপণ্যসহ সংসারের অন্যান্য খরচ বেড়েছে। তাই খুব দরকারে একটি-দুটি করে ফল নিয়ে ওজন মেপে যে টাকা হয় সেভাবে ফল কিনতে হচ্ছে। আপেল কমলা কেনা বাদ দিয়েছি অনেকদিন আগেই। এত টাকা দিয়ে ফল কিনে খাওয়া আমাদের মতো মধ্যবিত্ত মানুষজনের এখন বিলাসিতা। ফলের বাড়তি দামের কারণে একান্ত প্রয়োজন বা অতিথি আপ্যায়ন ছাড়া ফল কেনা হয়না। বাচ্চারা খেতে চাইলে দুইটা-তিনটা করে কিনে নিয়ে যাই।

ফলের দোকানে ক্রেতা আসছেন, তবে কিনছেন না অনেকেই, আবার কেউ কেউ দরদাম করছেন, আর কেউ কেউ দাম শুনে কিছু না বলে চলে যাচ্ছেন।

খানসামা বাজারে ফলের দোকানে ঘুর ঘুর করছেন আলম নামে ব্যক্তি, তাকে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, ‘যে ফলের দাম। দাম করতেই ভয় পাচ্ছি। আমরা গরিব মানুষ ফল খাওয়া এখন বিলাসিতা। তারপরও রোগী দেখতে যাব, না কিনে উপায় নেই।’

পাকেরহাট বাজারে ফল কিনতে আসা মোরসালিন বলেন, ‘আমার ভাতিজি অসুস্থ। তার জন্য কিছু ফল কিনতে আসছিলাম কিন্ত ফলের বাজার যে এত চড়া বেশি কিনতে পারলাম না তাই ১৩০টাকায় ৫০০ গ্রাম আপেল ও ৩৫ টাকায় ১০০ গ্রাম সবুজ আঙ্গুর ফল কিনে নিয়ে যাচ্ছি।’

খানসামা বাজারের ফল বিক্রেতা আবু সায়েম বলেন, ‘ভাই বর্তমানে অনেক দাম কিনতে হয়, তাই বাধ্য হয়ে বেশি দামে বিক্রি করছি। আমরা সামান্য মুনাফায় ফল বিক্রি করি কেননা এগুলো পচনশীল পণ্য। একই কথা জানান আরেক ফল বিক্রেতা রফিকুল।’

পাকেরহাট বাজারের ফল বিক্রেতা শাহীন জানান, ‘পাইকারি বাজার থেকে আমরা যে দরে ফল আনি, কিছু লাভে তা বিক্রি করি। এর আগে ফলের দাম আরও বেশি ছিল। এখনতো কমে গিয়েছে, আর এগুলো কাঁচা মালের মতই কখনো দাম বেশি আবার কখনো দাম কম। তিনি আরো জানান,এই সপ্তাহে শুধুমাত্র কমলার দাম বেড়ে গেছে আর অন্যান্য ফলের দাম কমেছে।’

বিভাগ
শেয়ার করুন

মতামত লিখুন