ফ্যান বিহীন পলাশবাড়ী পশ্চিম নয়ানপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের ক্লাসরুমে ভোগান্তিতে শিক্ষার্থী শিক্ষক
প্রচন্ড তাপ দাহ চলমান রয়েছে এতে সকল বয়সের মানুষ ব্যাপক ভোগান্তিতে যেমন পড়েছে তেমনি ডেঙ্গুসহ নানা বিধ রোগে শোকে ভুগছে ৷ এ তাপদাহে সবচেয়ে বেশী ভোগান্তিতে পড়েছে ইউনিফরম পড়া কোমলমতি শিক্ষার্থীরা, বিদ্যালয়ে ক্লাস করা যেন দুঃসহ উঠেছে তাদের কাছে । একারণে বিদ্যালয় গুলো শিক্ষার্থীর উপস্থিতি অনেককাংশে কমে গেছে। এ চলমান তাপদাহে যদি ক্লাস রুমে ফ্যান না থাকে তাহলে তো শিক্ষার্থীদের ক্লাস করা অসম্ভব। আর এ অসম্ভবকে সম্ভব করেছে পলাশবাড়ী উপজেলার পশ্চিম নয়ানপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। প্রচন্ড গরমের মধ্যেও শিক্ষার্থীরা শিক্ষকদের নিকট পাঠদান গ্রহন করছেন। এতে শিক্ষক শিক্ষার্থী শরীরের বেয়ে ঘাম ছড়ছে। এমন দুঃসহতার মধ্যেও চলছে বিদ্যালয়টি ক্লাসরুম গুলো । দেখেও দেখছে না পরিচালনা পরিষদ বা উপজেলা শিক্ষা অফিসসহ সংশ্লিষ্টরা । তবে বিদ্যালয়টির অফিস রুম গুলোতে একাধিক ফ্যান চলমান রয়েছে।
গাইবান্ধা জেলার পলাশবাড়ী উপজেলার ১নং কিশোরগাড়ী ইউনিয়নের নদী নালায় ঘেরা পশ্চিম নয়ানপুর গ্রামের কাঁচা ইউপি রাস্তার পাশে অবস্থিত পশ্চিম নয়ানপুর উচ্চ বিদ্যালয়টি ১৯৯৩ ইং সালে স্থাপিত হয়েছে। বিদ্যালয়টিতে জেনারেল ও ভোকেশনাল শাখায় কাগজ কলমে শিক্ষার্থী দেখানো হয়েছে ৩১৪ জন। এছাড়াও শিক্ষক (জেনারেল শাখায়)১২ জন, ভোকেশনাল শাখায় ৯ জনসহ মোট ২১ জন শিক্ষক ও ৪ জন কর্মচারি রয়েছে। বিদ্যালয়টিতে গিয়ে জানা যায়, ৬ ষ্ট শ্রেনীতে ৪২ জন শিক্ষার্থী থাকলেও উপস্থিত পাওয়া যায় মাত্র ১৫ জন,৭ম শ্রেনীতে ৫২ জন শিক্ষার্থী থাকলেও উপস্থিত পাওয়া যায় ১৯ জন, ৮ ম শ্রেনীতে ৩৯ জন থাকলেও ক্লাসে ছিলো মাত্র ৪ জন। ক্লাস রুমে উপস্থিতি শিক্ষার্থীরা গরমে নিজের খাতা ও বই দিয়ে শরীরে বাতাস করছে অপরদিকে গরমে ঘেমে শিক্ষকরা পাঠদান করছে। এছাড়াও ৯ ম শ্রেনীতে ২৬ ও দশম শ্রেনী ১৫ জন, ভোকেশনাল শাখার দুটি ট্রেডের নবম ও দশম শ্রেনীর ৭৮ জন নিয়মিত শিক্ষার্থীর বিদ্যালয়ে কাউকে পাওয়া যায়নি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয়রা জানান,শুধু ক্লাস রুমে ফ্যান না থাকার কারণেই নয়, পরিচালনা পরিষদসহ সংশ্লিষ্টদের তদারকির অভাবে শিক্ষকদের অনুপস্থিতি ও সঠিক সময়ে বিদ্যালয়ে না আসায় বিদ্যালয়টির শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট হয়ে গেছে।
এ বিদ্যালয়টি ক্লাস রুম গুলোতে ফ্যান না থাকার বিষয়ে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আবু বক্কর সিদ্দিক জানান,আমি গত তিন মাস হলো দায়িত্ব নিয়েছি। দায়িত্ব গ্রহনের আগে হতে ক্লাসরুম গুলো ফ্যান না থাকায় গরমের মধ্যে শিক্ষার্থীরা ক্লাস করছে। একারণেই বিদ্যালয়টিতে শিক্ষার্থী উপস্থিতি কমে গেছে। পরিচালনা পরিষদের সাথে আলোচনা করে দ্রুত ক্লাসরুম গুলোতে ফ্যান লাগিয়ে এ দুর্ভোগ দুর করবো,শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের উপস্থিতি শতভাগ নিশ্চিত করবো। এবং আগামীতে বিদ্যালয়টির শিক্ষার সঠিক পরিবেশ ফিরবে বলে আশা ব্যক্ত করেন তিনি।
উপজেলা মাধ্যমিক অফিসার মাহাতাব হোসেন জানান,এ বিষয়টি আমার জানা ছিলো না বা বিদ্যালয়ের কেউ কখনো ক্লাসরুমে ফ্যান না থাকার বিষয়টি জানায়নি। তিনি তৎক্ষণাত ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষককে ফ্যান লাগানোর নির্দেশ করেন ও নিজেও সহযোগীতা করার আশ্বাস প্রদান করেন। পশ্চিম নয়ানপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের সভাপতি ও পলাশবাড়ী উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আলহাজ্ব একেএম মোকসেদ চৌধুরী বিদ্যুৎ জানান, বিদ্যালয়ের ক্লাস রুমে ফ্যান না থাকার বিষয়ে কেউ জানায়নি। দ্রুত প্রতিটি ক্লাসরুমে ফ্যান লাগানো হবে বলে জানান তিনি।