শনিবার, ২৩শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ -muktinews24(তথ্য মন্ত্রনালয় কর্তৃক নিবন্ধনকৃত, রেজি নং-৩৬)

পণ্য আমদানি কমলেও বাড়ছে বাণিজ্য ঘাটতি

পণ্য আমদানি কমলেও বাড়ছে বাণিজ্য ঘাটতি

মুক্তিনিউজ২৪ ডট কম ডেস্ক : নানা উদ্যোগ নিয়ে পণ্য আমদানি কমানো গেলেও রপ্তানি আয়ও কমে গেছে। এ কারণে বাণিজ্য ঘাটতি বাড়ছে। চলতি ২০২২-২০২৩ অর্থবছরের প্রথম ৭ মাসে (জুলাই-জানুয়ারি) পণ্য বাণিজ্য ঘাটতি যেখানে ছিল ১ হাজার ৩৩৮ কোটি ৮০ লাখ ডলার। এক মাসের ব্যবধানে ৮ মাসের হিসেবে (জুলাই- ফেব্রুয়ারি) তা ৫০ কোটি ডলার বেড়ে ১ হাজার ৩৮২ কোটি ৮০ লাখ ডলার হয়েছে। পণ্য বাণিজ্য ঘাটতি বেড়ে যাওয়ায় ঋণাত্মক হয়ে পড়েছে চলতি হিসাবের ভারসাম্য। বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ হিসাবে আলোচ্য ৮ মাসে চলতি হিসাবের ভারসাম্য হয়েছে ঋণাত্মক প্রায় ৪৩৯ কোটি ডলার।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, আমদানি ব্যয় কমাতে নানা পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। এতে কমে গেছে আমদানি ব্যয়। কিন্তু এর পরেও কাঙ্খিত হারে রপ্তানি আয় না হওয়ায় বাণিজ্য ঘাটতি বেড়ে যাচ্ছে।

বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, আমদানি ব্যয় কমাতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে নানা পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। বিলাসজাত পণ্যের আমদানিতে নিরুৎসাহিত করা হয়েছে। ৩০ লাখ ডলারের পণ্য আমদানিতে তদারকি করা হচ্ছে। শতভাগ মার্জিন দিয়ে পণ্য আমদানিতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। ব্যাংকিং খাতে ডলার সঙ্কটের কারণে পণ্য আমদানির জন্য ব্যবসায়ীরা কাঙ্খিত হারে পণ্য আমদানি করতে পারছে না। সব মিলেই সামগ্রিক আমদানি কমে গেছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ প্রতিবেদন থেকে দেখা যায়, ৮ মাসে পণ্য আমদানির প্রবৃদ্ধি হয়েছে ঋণাত্মক প্রায় সাড়ে ১০ শতাংশ, যেখানে আগের অর্থবছরের একই সময়ে ছিল প্রায় ৪০ শতাংশ। সামগ্রিক আমদানি কমলেও কাঙ্খিত হারে রপ্তানি আয় হচ্ছে না। এতেই বাণিজ্য ঘাটতি বেড়ে যাচ্ছে।

প্রতিবেদনে দেখা যায়, চলতি অর্থ বছরের প্রথম আট মাসে দেশে মোট ৪ হাজার ৮৭৯ কোটি ডলারের বিভিন্ন ধরনের পণ্য আমদানি করা হয়েছে। যেখানে আগের অর্থবছরের একই সময়ে ৫ হাজার ৪৩৭ কোটি ডলারের বিভিন্ন পণ্য আমদানি করা হয়েছিল। সেই হিসাবে ৮ মাসে আমদানির প্রবৃদ্ধি হয়েছে ঋণাত্মক ১০ দশমিক ২৭ শতাংশ। আর আমদানির বিপরীতে চলতি অর্থবছরের ৮ মাসে রপ্তানি হয়েছে ৩ হাজার ৪৯৬ কোটি ডলারের পণ্য। যেখানে আগের বছরের একই সময়ে ছিল ৩ হাজার ১৯৪ কোটি ডলার। সেই হিসাবে রপ্তানি প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৯ দশমিক ৪৫ শতাংশ। এর ফলে বাণিজ্য ঘাটতি হয়েছে ১ হাজার ৩৮২ কোটি ৮০ লাখ ডলার।

সংশ্লিষ্টরা জানান, আমদানি ব্যয় আর কমানো সম্ভব হবে না। কারণ শিল্পের কাঁচামাল আমদানি করতে না পারলে উৎপাদনই ব্যাহত হবে। এ কারণে এ বাণিজ্য ঘাটতি আরও বেড়ে যাবে। শুধু বাণিজ্য ঘাটতিই বাড়ছে না, সেবা আয়ে ঘাটতিও বেড়ে যাচ্ছে।

বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, বাণিজ্য ঘাটতি বেড়ে যাওয়ায় চলতি হিসাবের ভারসাম্যও ঋণাত্মক হয়ে গেছে। কারণ আমদানির তুলনায় রপ্তানি আয় কমে গেলে চলতি হিসাবের ভারসাম্য ঋণাত্মক হয়ে যায়। চলতি হিসাবের ভারসাম্য ঋণাত্মক হওয়ায় বিদেশি বিনিয়োগও কমে যাওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।

এ অবস্থায় বাণিজ্য ঘাটতি কমিয়ে আনতে রপ্তানি পণ্যের পরিধি বাড়ানো এবং নতুন বাজার বের করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি হয়ে পড়েছে বলে অর্থনীতিবিদরা জানিয়েছেন।

বিভাগ
শেয়ার করুন

মতামত লিখুন