বৃহস্পতিবার, ২১শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ -muktinews24(তথ্য মন্ত্রনালয় কর্তৃক নিবন্ধনকৃত, রেজি নং-৩৬)

মিরাজ যেন টাইগার ব্যাটিংয়ের ‘প্যারাসিটামল’!

মিরাজ যেন টাইগার ব্যাটিংয়ের ‘প্যারাসিটামল’!

মুক্তিনিউজ২৪ ডট কম ডেস্ক :

দেশে সাধারণ মানুষের কোনো রোগ হলেই ওষুধ যেন একটাই! মাথা ব্যথা, পেট ব্যথা কিংবা জ্বর সব রোগের মহা-ওষুধ হিসেবে স্থান করে নেয় ‘প্যারাসিটামল’। বাংলাদেশ ক্রিকেটেও যেন ব্যাটিংয়ের সব সমস্যার সমাধান মেহেদী হাসান মিরাজ। টিম ম্যানেজমেন্টের চিন্তা ভাবনা— মিরাজেই মিলবে স্বস্তি। অন্তত সাম্প্রতিক সময়ে তারই প্রমাণ মিলেছে। মিরাজকে বিভিন্ন পজিশনে ব্যাটে পাঠাতে গিয়ে টাইগারদের পুরো ব্যাটিং লাইন-আপই হয়ে পড়েছে ওলটপালট!

হালকা জ্বর ঠাণ্ডা হলেই কেবল প্যারাসিটামলে মেলে মুক্তি। তবে বড় রোগ হয়ে গেলে কি আর প্যারাসিটামলে মুক্তি পাওয়া যায়? বাংলাদেশ ক্রিকেটেরও বড় রোগেও যে তারই প্রয়োগ করতে দেখা গেছে। এশিয়া কাপ থেকে বড্ড ধুকছে টাইগারদের ব্যাটিং। সাময়িক সময়ে মিরাজকে দিয়ে সফলতা পেলেও, এখন আর তার দেখা মিলছে না। বাংলাদেশের ব্যাটিংয়ের সমস্যা রূপ নিয়েছে বড় রোগে, যার দিতে পারছেন না মিরাজও। তবুও বিশ্বকাপের মতো মেগা আসরেও চলছে সীমা ছাড়ানো পরীক্ষা-নিরীক্ষা!

চলমান বিশ্বকাপে মিরাজ ব্যাট করেছেন ভিন্ন ভিন্ন পজিশনে। কখনো টপ অর্ডার তো আবার কখনও মিডল অর্ডারে। ভারতের বিপক্ষে শেষ ম্যাচের কথাই ধরা যাক। ১৫ ওভারের আগেই দলীয় শতরানের পথে থাকা বাংলাদেশ বেশ ভালো পরিস্থিতিতে ছিল। এরপর সেখান থেকে দলকে টেনে নিতে পারতেন নির্ভরযোগ্য ও অভিজ্ঞ কোনো ব্যাটার। কিন্তু ২ উইকেট হারানোর পর দলের নির্ভারযোগ্য কোনো ব্যাটারকে না নামিয়ে পাঠানো হলো মিরাজকে, ফলাফল ৩ রানেই সাজঘরে ফেরেন এই অলরাউন্ডার।

অতীতে যে মিরাজ আস্থার প্রতিদান দেননি অবশ্য তা নয়। তবে বারবার মিরাজের থেকেই সমস্যার উত্তরণ খোঁজা কিংবা ভালো ইনিংস আশা করাটাও একটু বাড়াবাড়ি কিনা! এভাবে ব্যর্থ হতে থাকলে ভবিষ্যতে মিরাজের ক্যারিয়ারের জন্যই নেতিবাচক পরিস্থিতি তৈরি হয় কিনা সেই প্রশ্ন দেখা দেয়! ক্রিকেট বিশ্লেষক থেকে স্বল্পজ্ঞানের সমর্থকদেরও চাওয়া— মিরাজকে যেকোনো একটা পজিশনে স্থায়ী করা হোক।

যদিও মিরাজকে নিয়ে তাদের মতো ভাবছেন না জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক রাজিন সালেহ।  মিরাজের ব্যাটিং অর্ডার নিয়ে জানিয়েছেন তাকে ওপরের দিকে খেলানোই ভালো। কেননা সেখানে তরুণ এই অলরাউন্ডারের যোগ্যতা নিয়ে কারও সংশয় নেই।

রাজিন বলছিলেন, ‘এটা ডিপেন্ড করে দলের কম্বিনেশনের ওপর। এখন দল বুঝছে আসলে তাকে কোথায় খেলাবে, সেক্ষেত্রে দোষ দেওয়ারও কিছু নেই। এটা বুঝতে হবে যে সে যেখানে রান করছে তাকে সেখানেই সুযোগ দেওয়া উচিত। মিরাজকে আসলে ব্যবহার করাই লাগে, আমার মনে হয় তাকে ওপরে খেলালেই ভালো খেলে সে। মিরাজ যদি ৭-৮ ব্যাট করে, তাহলে তাকে মিস-ইউজ করা হবে। আসলে যেখানে সে রান পাচ্ছে সেখানেই খেলানো উচিত। সেটা মিরাজের ভবিষ্যতের জন্যও ভালো হবে।’

এদিকে, দীর্ঘদিন ধরে দলের চার নম্বর পজিশনে ব্যাট করে আসছেন মুশফিকুর রহিম। তবে কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহে আসার পর আর তাকে ওই পজিশনে দেখা যাচ্ছে না। নতুন করে তিনি খেলছেন ৬ নম্বর পজিশনে। কিন্তু অনেকের মতে বিশ্বকাপেও চার নম্বর পজিশনে মুশফিককেই খেলানো উচিৎ। অতীতে চার নম্বরে নিজেকে প্রমাণ করেছেন মিস্টার ডিপেন্ডেবল-খ্যাত এই ব্যাটার।

রাজিনও চাচ্ছেন মুশফিককে চারে খেলাতে, ‘মুশফিক সাধারণত চারে ব্যাট করে। তবে বিশ্বকাপ বড় আসর, সেখানে কোচেরও কিছু মতামত থাকে। এখানে অভিজ্ঞ কাউকে দরকার, যে কারণে চারে মুশফিককে দেওয়াই ভালো হবে। সে সফল এই পজিশনে, যার জায়গায় তাকে ফেরানো উচিৎ।’

আগামী ২৪ সেপ্টেম্বর মুম্বাইয়ের ওয়ানখেড়ে স্টেডিয়ামে দক্ষিণ আফ্রিকার মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ দল। সেমিফাইনালের দৌড়ে টিকে থাকতে টাইগারদের জন্য এই ম্যাচটি অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ। ইতোমধ্যে ৪ ম্যাচ খেলে সাকিব আল হাসানের দল জিতেছে কেবল একটিতে। যা তাদের সেমিতে ওঠার প্রক্রিয়া কঠিন করে তুলেছে। যে কারণে এই ম্যাচে জয়ের বিকল্প নেই।

তবে দক্ষিণ আফ্রিকার মতো বড় দল বলে কথা, তাই রাজিন সালেহ আসন্ন ম্যাচটিতে টেম্বা বাভুমার দলকেই এগিয়েই রাখছেন, ‘আফ্রিকা কিন্তু বড় দল, আর আমরা শেষ ম্যাচেও ভালো করিনি। তবে তারাও সর্বশেষ ম্যাচে নেদারল্যান্ডসের কাছে হেরেছিল। আফ্রিকাই এগিয়ে থাকবে তবুও। এটা গোল বলের খেলা, দেখা যাক।’

বিভাগ
শেয়ার করুন

মতামত লিখুন