কলাপাড়ায় সমুদ্র স্বাস্থ্য সুরক্ষা ও প্লাস্টিক দূষণ রোধে জনসচেতনতামূলক সভা
কলাপাড়া (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি: পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে উপকূলীয় অঞ্চলের জীববৈচিত্র্য ও সামুদ্রিক সম্পদ । ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে সচেতন করার লক্ষ্যে ‘বাস্তুতন্তের স্বাস্থ্য রক্ষা এবং জীববৈচিত্র্য উন্নয়ন’ বিষয়ক সচেতনতামূলক সভা অনুষ্ঠিত হয়। সোমবার সকাল ১০ টায় খেপুপাড়া সরকারি মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয় মিলনায়তনে নবম ও দশম শ্রেণির ১৫০ জন শিক্ষার্থীর অংশগ্রহণে এ সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ওয়ার্ল্ড ফিস বাংলাদেশের ইকোফিশ-২ প্রকল্প ম্যানেজার মো. মাহবুবুল ইসলাম। গবেষণা প্রতিষ্ঠান ওয়ার্ল্ড ফিশ, ইউএসএইড এর অর্থায়নে পরিচালিত ইকোফিশ-২ এর আয়োজনে এ সভায় সভাপতিত্ব করেন খেপুপাড়া মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আবদুর রহিম। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন খেপুপাড়া মৎস্য গবেষনা ইন্সটিটিউট এর প্রধান গবেষক ড. মো.আশ্রাফুল হক, সিনিয়র মৎস্য কর্মকতা অপু সাহা, মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের একাডেমিক সুপারভাইজার মো. মনিরুজ্জামান। জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব কমিয়ে আনতে প্রতিনিয়ন নতুন নতুন বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি সংযোজন হচ্ছে এ বিষয়ে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ইকোফিশ’র সহযোগী গবেষক সাগরিকা স্মৃতি। সভায় আলোচকরা বলেন, সমুদ্রের জলের পানির উপাদান পৃথিবীর তৈরি কার্বন-ডাই-অক্সাইডের তিন ভাগের এক ভাগ শোষণ করে সমুদ্র। সমুদ্রের তলদেশে যে ফাইটোপ্লাঙ্কটন আছে তার পরিমাণ ক্রমান্বয়ে হ্রাস পাচ্ছে। ফলে, কার্বন-ডাই-অক্সাইড পৃথিবী পৃষ্ঠে বেড়ে যাচ্ছে। ফাইটোপ্লাঙ্কটন খাদ্য শৃঙ্খলের প্রথম উপাদান এবং জলের চিংড়ি থেকে তিমি পর্যন্ত এর উপর নির্ভরশীল। শাপলাপাতা সমুদ্রের বাস্তুতন্ত্র রক্ষার জন্য যেমন গুরুত্বপূর্ণ তেমনি সমুদ্রের তলদেশের প্লাঙ্কটনও গুরুত্বপূর্ণ। সমুদ্রের এসিডিটি বেড়ে যাওয়ায় সমুদ্রের বাস্তুতন্ত্র হুমকির মুখে পড়েছে। সমুদ্রের দুষণের ৮০ ভাগ ঘটে প্লাস্টিক দিয়ে। গবেষণায় বলছে ২০৫০ সালের মধ্যে প্ল্যাস্টিক মৎস্য সম্পদ ধ্বংস করবে। যা মানুষ ও প্রকৃতির জন্য ভয়াবহ অবস্থা দাঁড়াবে। গবেষকরা বলেন, আমরা যদি আমাদের সমুদ্র স্বাস্থ্য রক্ষা করতে চাই, তাহলে ভৌতিক মৎস্য আহরণ চিহ্নিত করতে হবে। ভৌতিক মৎস্য আহরণ ক্ষতি করছে সমুদ্রের খাদ্য নিরাপত্তা, জেলেদের জীবন, সমুদ্র দূষণ এবং এমনকি মানুষের স্বাস্থ্য। সমুদ্র স্বাস্থ্য রক্ষা পেলে, সুস্থ্য সবল জীবন মিলে। সমুদ্র রক্ষায় নতুন প্রজন্ম পারে সঠিক উদ্যোগ নিতে, পারে এ ধরণী নব রুপে সজ্জিত করতে। তাই নতুন প্রজন্মকে প্রকৃতির সুরক্ষায় এগিয়ে আসতে হবে প্লাস্টিক দূষণ রোধে সমাজ সচেতনতা কার্যক্রমে।