একাধিক নারীর সঙ্গে পরকীয়া, বাধা দেওয়ায় স্ত্রীকে খুন
মুক্তিনিউজ২৪ ডট কম ডেস্ক : কক্সবাজার জেলার পেকুয়ার মেয়ে ইয়াসমিন আক্তার (২২)। চার বছর আগে ভালোবেসে একই জেলার মহেশখালীর ছেলে জোবাইর উল্লাহকে বিয়ে করেন। বিয়ের পর কিছুদিন ভালোভাবে সংসার কাটলেও পরকীয়া তাদের ঘর করেছে এলোমেলো। এর মধ্যে তিন বছরের এক কন্যা সন্তানও রয়েছে তাদের। তবুও একাধিক মেয়ের সঙ্গে পরকীয়ায় লিপ্ত ছিলেন জোবাইর।
পরকীয়ার কথা জেনে যাওয়ায় তাদের মাঝে শুরু কলহ। এই জেরে গত ২২ মে চট্টগ্রাম শহরের চকবাজারের বাসায় স্ত্রী ইয়াসমিনকে গলা টিপে হত্যা করেন জোবাইর। এরপর তিন বছরের মেয়েকে নিয়ে আত্মগোপনে যান জোবায়ের। তবে, শেষ রক্ষা হয়নি তার।
রোববার (৯ জুন) চকবাজার থানা পুলিশের জালে ধরা পড়েছেন তিনি। আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন জোবায়ের। পেশায় প্রাইভেটকার চালক জোবাইর স্ত্রীর হত্যার বর্ণনাও দিয়েছেন।
সোমবার (১০ জুন) এ বিষয়ে চকবাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ওয়ালী উদ্দিন আকবর বলেন, স্ত্রী হত্যা মামলায় জোয়াইরকে আনোয়ারা থানাধীন মালঘর বাজারের পাশে আকবর কলোনি এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ১৬৪ ধারার জবানবন্দিতে তিনি স্ত্রীকে খুনের বিষয়টি স্বীকার করেন।
তিনি বলেন, বিয়ের পর তাদের দাম্পত্য জীবন কিছুদিন সুখে-শান্তিতে কাটলেও জোবাইর একাধিক পরকীয়ায় আসক্ত হয়ে পড়েন। এতে করে ইয়াছমিনের সঙ্গে তার প্রায়ই ঝগড়া লাগতো। কথায় কথায় ইয়াসমিনকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করত জোবাইর। ইয়াছমিন তার সংসারের সুখের কথা চিন্তা করে সবকিছু মুখ বুঝে সহ্য করে আসছিলেন।
গত ২২ মে রাতে ইয়াছমিন তার মা ফাতেমাকে ফোন করে জানান যে, তার স্বামী জোবাইর তাকে মারধর করেছেন। ইয়াছমিন আগে আদালতে স্বামী জোবাইরের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা দায়ের করেছিলেন। আদালতে সেই মামলার হাজিরার আগেই জোবাইর তাকে মেরে ফেলবেন বলে হুমকি দিচ্ছেন— মাকে ফোনে এগুলো জানান ইয়াসমিন।
ওসি বলেন, গত ২৩ জুন সকালে জোবাইল ভাড়া বাসার মালিক ইমাম সাহেবকে ফোন করে বলেন যে, আমি আপনার বিল্ডিংয়ের তৃতীয় তলার চার নম্বর রুমের ভাড়াটিয়া। আমার রুমে কিছু একটা হয়েছে। জানালার পাশে চাবি রাখা আছে, আপনি এসে পুলিশকে খবর দেন। তখন বাড়িওয়ালা জোবাইরের বাসার সামনে গিয়ে জানালার পর্দা সরিয়ে দেখতে পান যে, ইয়াসমিন আক্তার রুমের মেঝেতে অচেতন অবস্থায় পড়ে রয়েছে। বিছানার চাদর এলোমেলো ও দুইটি বালিশ ছড়ানো ছিটানো অবস্থায় রয়েছে। বাড়িওয়ালা ইয়াছমিনকে পড়ে থাকতে দেখে সন্দেহ হলে তিনি চকবাজার থানা পুলিশকে খবর দেন।
চকবাজার থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
ওসি আরও বলেন, জোবাইর পূর্ব পরিকল্পিতভাবে ইয়াছমিনকে পারিবারিক কলহের জেরে শিশু কন্যার সামনে শ্বাসরোধে হত্যা করে রুমের মেঝেতে ফেলে রাখে। এরপর শিশু কন্যাকে নিয়ে দরজায় তালা মেরে পালিয়ে যান।