সিলেটে টানা কয়েক দিনের তীব্র গরমে মাত্রাতিরিক্ত লোডশেডিং
সিলেটে প্রতিনিধি : সিলেট বিভাগে টানা কয়েক দিনের তীব্র গরমে বিদ্যুতের লোডশেডিং বেড়েছে। জনজীবনে হাঁসফাঁস অবস্থা বিরাজ করছে মানুষের মাঝে। অন্য সময় গরমে বাইরে বের না হয়ে ঘরে কিছুটা স্বস্তির সুযোগ মিলে। কিন্তু এবার লোডশেডিংয়ের জন্য তাও হচ্ছেনা। ফলে ঘরে বাইরে কোথাও শান্তিতে অবস্থানের সুযোগ নেই নগরবাসীর।
টানা তিন দিন ধরে সিলেটে তাপমাত্রার পরদ ৩৬ ডিগ্রির নিচে নামছেনা। সোমবার সিলেটের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৬ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এর আগে শনিবার ছিল ৩৭ ডিগ্রি এবং আগেরদিন শুক্রবার ৩৬ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছিলো। তীব্র এই গরমের মধ্যে ঘণ্টায়-ঘণ্টায় চলে যাচ্ছে বিদ্যুৎ। সরবরাহ না বাড়লে লোডশেডিংয়ের মাত্রা কমার কোনো সুযোগ নেই বলে বিদ্যুৎ অফিস সূত্রে জানা গেছে। এখন গরম কমার একমাত্র সুযোগ বৃষ্টি। বৃষ্টি না হলে গরম কমবে না, ফলে চাহিদাও কমবে না। এদিকে মৌসুমী বায়ুর সক্রিয়তা কমে যাওয়ায় গরমে বেড়েছে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস। আগামী আরও দুই দিন এই অবস্থা বিরাজ করতে পারে বলে তারা জানায়।
গরমের কষ্ট কয়েক গুণ বাড়িয়ে দিয়েছে বিদ্যুতের যন্ত্রণা। চাহিদার তুলনায় যা পাওয়া যাচ্ছে তা অপ্রতুল বলে মনে করেন নগরবাসী। পিডিব সূত্রে জানা গেছে, রোববার সিলেট অঞ্চলে বিদ্যুতের চাহিদা ছিল ২০৭ দশমিক ৮০ মেগাওয়াট। কিন্তু বিদুৎ সরবরাহ মিলেছে ১৪০ দশমিক ৪৪ মেগাওয়াট। এতে লোডশেডিংয়ের পরিমাণ ছিল ৬৭ দশমিক ৩৫ মেগাওয়াট বা ৩২ দশমিক ৪২ শতাংশ। অন্য দিকে সিলেট জেলায় ১৫৩ দশমিক ১৪ মেগাওয়াট বিদ্যুতের চাহিদার বিপরীতে সরবরাহ মিলেছে ৯৮ দশমিক ১২ মেগাওয়াট। এতে লোডশেডিংয়ের পরিমাণ ছির ৫৫ দশমিক ২ মেগাওয়াট বা ৩৫ দশমিক ৯২ শতাংশ।
এদিকে গরমের তীব্রতায় ছোটোবড়ো সবার হাঁসফাঁস অবস্থা। বাইরে কড়া রোদ, ঘরে নেই বিদ্যুৎ। এই অবস্থায় অনেকেই অসুস্থ হয়ে যাচ্ছেন। এমনকি নামাজের সময়ও থাকছেনা বিদ্যুৎ। এতে মসজিদে মুসল্লীদেরও চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
বিভিন্ন বয়সী বেশ কয়েক ব্যক্তি জানান, সকালে সূর্যের আলো ফুটতেই গরম শুরু হয়। সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে গরমের তীব্রতাও বাড়তে থাকে। তবে দুপুর ১২টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত অসহ্য গরম থাকে। হাওয়া-বাতাস নেই। সন্ধ্যার পর অস্বস্তিকর গুমট হয়ে ওঠে পরিবেশ, রাতেও ভ্যাপসা গরম। এই অবস্থায় নতুন করে শুরু হয়েছে কিছু দিন থেকে বিদ্যুতের যন্ত্রণা। আগে গরমে কাজ না থাকলে বাসায় থাকা যেত কিন্তু এখন বিদ্যুৎ না থাকায় ঘরেও থাকা দায় হয়ে পড়েছে। দুপুর থেকে নিয়ম করে এক ঘণ্টা পর পর বিদ্যুত চলে যাচ্ছে। কোথাও কোথাও বিকেলের দিকে আধাঘণ্টা/পয়তাল্লিশ মিনিট পরই চলে যাচ্ছে বিদ্যুৎ।