হাট-বাজারে লাফিয়ে বাড়ছে শাক- সবজির দাম
গাইবান্ধা প্রতিনিধিঃ জেলার পলাশবাড়ী হাট-বাজারে লাফিয়ে বাড়ছে শাক-সবজির দাম।
গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতিকেজি কাঁচা মরিচে ১২০ টাকা বেড়ে তা বিক্রি হচ্ছে ৩২০ দরে। একইসঙ্গে শাক-সবজিও ক্রয় ক্ষমতার বাইরে। বর্তমানে কাঁচা তরকারি বাজারে এসে অস্থির হয়ে উঠছেন সাধারণ ভোক্তারা। ফলে শ্রমজীবী খেটে খাওয়া মানুষরা চরম বেকায়দায় পড়েছেন। সংসার চালাতে গিয়ে তাদের মাঝে শুরু হয়েছে হাঁসফাঁস।
সোমবার (৭ অক্টোবর) পলাশবাড়ী কালিবাড়ি বাজারসহ বিভিন্ন হাট-বাজার ঘুরে দেখা গেছে, প্রতি কেজি পটল ৬০ টাকা, বেগুন ৬০ টাকা, মুখিকচু ৬০ টাকা, করলা ৭০ টাকা, মূলা ৪০ টাকা, বরবটি ১২০ টাকা, সিম ২০০ টাকা, ঢেঁড়স ৬০ টাকা, তরই ৫০ টাকা, শসা ৬০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ৭০ টাকা, কদোয়া ৪০ টাকা, টমেটো ১২০ টাকা কেজি দামে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া ধনেপাতা শাক ১০০ টাকা, লাউ শাক ৪০ টাকা, লাল শাক ৪০ টাকা ও লাউ ৩০-৪৫ টাকা পিস (প্রকার ভেদে) বিক্রি হচ্ছে। অথচ গত এক সপ্তাহ আগে ওইসব পণ্যের দাম অনেকটা কম ছিল। তবে আলু-পেঁয়াজের দাম স্থিতিশীল রয়েছে।
জানা গেছে কাঁচা মরিচ যেন সোনার হরিণ। প্রতিটি সবজির দাম দ্বিগুণ হারে বেড়ে যাওয়ায় ক্রেতা সাধারণের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে চলে গেছে। ফলে সবজি এখন সাধারণ মানুষের মরণ ফাঁদে পরিণত হয়েছে।
খোঁজ নিয়ে যায়, উত্তর জনপদের জেলা গাইবান্ধা। একসময় এ জেলাটি মঙ্গাপীড়িত হিসেবে পরিচিত ছিল। এই মঙ্গা দুরীকরণে বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে নানা পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়। পরিকল্পনা অনুযায়ী আয়বৃদ্ধিমূলক কর্মকাণ্ড বাস্তবায়নে সেই মঙ্গা নামটি ঘুচিয়ে স্বচ্ছলতা ফিরেছে সকল পেশা-শেণির মানুষের।এর প্রভাবে মধ্যবিত্ত ও স্বল্প আয়ের পরিবারগুলো চরম আর্থিক সংকটে পড়ে। ইতোমধ্যে হু হু করে বেড়ে চলেছে ভোগ্যপণ্য কিংবা নিত্যপণ্য ও বিভিন্ন জিনিসিপত্রের দাম। এমন দামের কারণে একেবারই বেসামাল সাধারণ মানুষ। দিনদিন তাদের ব্যয় বাড়লেও, বাড়ছে না আয়-রোজগার। ফলে সংসার চলাতে হাঁসফাঁস উঠেছে তাদের।
বিদ্যমান পরিস্থিতিতে সাধারণ মানুষের জীবনযাপনে প্রচণ্ড আঘাত হানতে শুরু করেছে। অধিক দামে পণ্যসামগ্রী কেনা ভুক্তভোগীদের বোবা কান্না যেনো দেখার কেউ নেই। অস্থির এই বাজার নিয়ন্ত্রণে সংশ্লিষ্টদের সঠিক তদারকি না থাকলে সাধারণ মানুষ আরও বেকায়দায় পড়তে পারে বলে একাধিক সূত্রে জানা গেছে।
কালিবাড়ি বাজারে সবজি কিনতে আসা একজন ভ্যানচালক ময়নুল ইসলাম জানান, যেভাবে ভোগ্যপণ্যের দাম বেড়েছে, সেতুলনায় আয় বাড়েনি তার। এতে করে পরিবারের চাহিদা পূরণে বাড়ছে ঋণের বোঝা।
মাঠের বাজারের সবজি বিক্রেতা আনোয়ার হোসেন বলেন, বৈরী আবহাওয়ার কারণে কৃষকের মাঠে শাক-সবজি উৎপাদন কম হচ্ছে। এতে আমদানির চেয়ে চাহিদা বেশি থাকায় দাম বেড়েছে প্রায় দ্বিগুণ।
পলাশবাড়ী কৃষি কর্মকর্তা বলেন, সম্প্রতি অতিবৃষ্টিতে সবজির জমিতে পানি উঠায় উৎপাদন কমেছে। এ কারণে কিছুটা দাম বেড়েছে। আবহাওয়া অনকূলে আসলে শাক-সবজির দাম কমতে পারে।
গাইবান্ধার জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের সহকারী পরিচালক আফসানা পারভীন জানান, বাজার নিয়ন্ত্রণে তদারকি অব্যাহত রয়েছে। যারা কৃত্রিম সংকট বা অতিরিক্ত দামে খাদ্যপণ্য বিক্রি করবে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।