শনিবার, ২রা নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ -muktinews24(তথ্য মন্ত্রনালয় কর্তৃক নিবন্ধনকৃত, রেজি নং-৩৬)

ঘোড়াঘাটে যে মেলার ঐতিহ্য ৩০০ বছরের

ঘোড়াঘাটে যে মেলার ঐতিহ্য ৩০০ বছরের

মনোয়ার বাবু, ঘোড়াঘাট (দিনাজপুর) প্রতিনিধিঃ

দিনাজপুরের ঘোড়াঘাটে প্রতি বছরের মতো এ বছরও অনুষ্ঠিত হয়েছে দুর্গা পূজার মেলা। পৌরশহরের বড়গলি নামক এলাকায় বিশাল জায়গা জুড়ে এ মেলার আয়োজন করা হয়।

স্থানীয়রা জানান, দুর্গা পূজা উপলক্ষে দশমীর দিন মাত্র এক দিনের জন্য প্রতি বছর এ মেলা বসে। প্রায় ৩০০ বছর ধরে এটি চলে আসছে। এই মেলায় আশেপাশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে বিভিন্ন ধরনের পন্যসামগ্রিই নিয়ে হাজির হন দোকানীরা। বিভিন্ন অঞ্চল থেকে ক্রেতারা ছুটে আসেন। ছোট থেকে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের পদচারণায় মুখরিত হয়ে উঠে এই মেলা।

একদিনের এ মেলায় রকমারি পণ্য, নানা প্রজাতি আর হাতের কারুকাজ খচিত বিভিন্ন পণ্য সামগ্রিক নিয়ে বসে কয়েক শত দোকান । নানা পদের টকমিষ্টি আচার, রসগোল্লা ও খেলনা দোকানের পাশাপাশি রয়েছে, সাঁজ বাতাসা, তালের পাখা,মাটি, লোহা ও বাঁশের তৈরি নানা পদের গৃহস্থালি সামগ্রীসহ  চুড়ি-ফিতা, শরবত, খেলনা, ফাস্ট ফুড,নাগরদোলা। ছোটদের মাটির তৈরি বিভিন্ন ধরনের খেলনা থেকে শুরু করে মাটির কলস, হাঁড়ি, সরা, মটকা, বাসনকোসন, পেয়ালা, সুরাই, ডালা, পিঠে তৈরির ছাঁচ, পুতুল ও নানা রকম পশু, পাখি, মাছ ইত্যাদি পাওয়া যায় এই মেলাতে।

তৎকালীন জমিদার রাঁধা মাধব কুন্ড অষ্টাদশ শতকে দুর্গা পূজা বিসর্জনের দিনে এই মেলার প্রচলন শুরু করেন।  এই পূজাকে কেন্দ্র করেই ৩০০ বছরের আগে থেকে এ মেলা অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। মেলাকে কেন্দ্র করে ধর্ম-বর্ণনির্বিশেষে ঘোড়াঘাটসহ আশেপাশের কয়েক উপজেলাবাসীর মিলনমেলায় পরিণত হয়ে ওঠে।

মেলায় আসা ইফতারুল ইসলাম নামে একজন জানান, মেলায় বিভিন্ন স্থান থেকে আসা প্রায় দুই থেকে তিন শতাধিক দোকান বসেছে। মেলায় বসানো হয়েছে বিনোদনের জন্য নাগরদোলা। নিত্য প্রয়োজনীয় গৃহস্থলী সামগ্রীসহ এমন কোনো জিনিস নেই, যেটা পাওয়া যাচ্ছে না।

জাকির নামে এক দোকানি জানান, তিনি বহু বছর ধরে এই মেলায় দোকান নিয়ে আসছেন। তিনি ছোটদের বিভিন্ন ধরনের প্লাস্টিকের খেলনা বিক্রি করেন। এই মেলায় বেচা-বিক্রি অত্যান্ত ভালো হয়। তাই প্রতি বছর এই মেলার অপেক্ষায় থাকি।

মেলায় আসা নাজমুন নাসরিন, হামিদা পারভিন জানান, তাঁরা প্রতিবছর মেলার জন্য অপেক্ষা করে থাকেন। গৃহস্থলী জিনিসপত্র অনেক কম দামে কেনা যায়। পাওয়া যায় সব ধরনের জিনিসপত্র।

মেলা পরিচালনা কমিটির সদস্য রাজিব কুন্ড জানান, আমাদের পূর্ব পুরুষরা আনুমানিক ৩০০ বছর আগে এই মেলা চালু করেন। যদিও মেলাটি একদিনের কিন্তু দুই-তিন দিন আগে থেকে মেলা জমতে থাকে। প্রতি বছর এই সময় বিভিন্ন অঞ্চল থেকে মেলার স্থানে হাজির হয় ব্যবসায়ীরা। ধর্ম বর্ণের বিভেদ ভুলে হাজার হাজার মানুষ এই মেলায় আসেন। ছোট বড় সব ধরনের মানুষ সারা বছর অপেক্ষা করে থাকে কোনদিন এই মেলা হবে।

বিভাগ
শেয়ার করুন

মতামত লিখুন