রাজারহাটে শিক্ষকের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির মামলা
ইব্রাহিম আলম সবুজ রাজারহাট কুড়িগ্রাম প্রতিনিধিঃ
কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলার চাকিরপশার ইউনিয়নের হযরত উম্মে হাবিবা (রা:) বালিকা নূরানী ও হাফিজিয়া মাদ্রাসার শিক্ষক মোঃ আব্দুর রহিম ওরফে মামুনের বিরুদ্ধে সুমাইয়া আক্তার (১১) নামের এক ছাত্রীকে শ্লীলতাহানির অভিযোগে থানায় মামলা করেছে শিক্ষার্থীর মা। অভিযুক্ত শিক্ষক মামুন ওই মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক হাবিবুর রহমানে শ্যালক বলে জানা যায়।
এঘটনায় মাদ্রাসার অন্যান্য শিক্ষার্থী-অভিভাবক ও এলাকাবাসীর মধ্যে চরম অসন্তোষ বিরাজ করছে। এলাকা জুড়ে বইছে সমালোচনার ঝড় ও ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে।
গত শনিবার ১৮ অক্টোবর রাতে রাজারহাট থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন ওই ছাত্রীর মা লাইজু বেগম।
অভিযোগে বলা হয়েছে, গত ৩ই অক্টোবর ২০২৪ ইং তারিখে রাজারহাট সরকারি মীর ইসমাইল হোসেন ডিগ্রী কলেজ মাঠের ওয়াজ মাহফিল চলাকালীন সময় রাত ৮ঃ৩০ মিনিটে আব্দুর রহিম ওরফে মামুন সুমাইয়াকে তার রুমে মোবাইলের চার্জার নিয়ে আসতে বলে। পরে সে চার্জার নিয়ে আসলে শিক্ষার্থী সুমাইয়াকে তার কক্ষে একা পেয়ে পিছন থেকে জাপটে ধরে এবং শরীরের বিভিন্ন স্পর্শকাতর জায়গায় স্পর্শ করে ও যৌন নিপীড়নের চেষ্টা করেন। এমতবস্থায় ওই ছাত্রী চিৎকার ও কাঁন্নাকাটি করলে তাকে ছেড়ে দেয় মামুন। ছেড়ে দিয়ে বাড়ীতে এবিষয়ে জানাতে নিষেধ করে। শ্লীলতাহানির শিকার ওই ছাত্রীর বাবা মা জীবিকার তাগিদে ঢাকায় থাকার কারণে সে কাউকে জানাতে পারেনি। পরে ঘটনার পর মাদ্রাসা ছুটি হলে বাড়িতে এসে গত ১৫ অক্টোবর উক্ত বিষয়টি মুঠোফোনে তার মাকে জানায়। মেয়ের শ্লীলতাহানির ঘটনা শুনে লাইজু বেগম ঢাকা থেকে বাড়িতে এসে বাদি হয়ে সুবিচারের প্রত্যাশায় রাজারহাট থানায় অভিযোগ দায়ের করেন।
ভুক্তভোগীর দাবি তারা মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক হাবিবুর রহমান ও তার স্ত্রী হাফেজা শিক্ষিকা মোছাঃ মাহমুদা বেগম (৪০) এর কাছে অভিযোগ দায়ের করলে তারা বিষয়টি ধামাচাপা দিয়ে দায়সারা ভাবে সমাধানের চেষ্টা করে।
শ্লীলতাহানির শিকার সুমাইয়া খাতুন ১২ পাড়া কোরআনের হাফেজা। তিনি সাংবাদিকদের বলেন,আমি ঘটনার রাতে দায়িত্ব প্রাপ্ত হাফেজাকে এ বিষয়ে জানালে তিনি কাউকে জানাতে নিষেধ করেন। সুমাইয়া আরও বলেন এর আগে এমন ঘটনা আরও বেশ কয়েকবার ঘটিয়েছে মামুন।
এ বিষয়ে জানতে গিয়ে দেখা গেল মাদ্রাসার প্রধান গেটে তালা ঝুলানো। সাইনবোর্ডে উল্লেখিত নাম্বারে ফোন দিলে কথা হয় প্রধান পরিচালক আব্দুর রহমানের সাথে। তিনি বলেন আমি আমার মা ও পরিবারের অন্য সদস্যরা মিলে ঘটনার আগের দিন থেকে রংপুরের একটি হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য অবস্থান করছি। শিক্ষার্থী শ্লীলতাহানির ঘটনা সম্পর্কে বললেন,পূর্ব শত্রুতার জের ধরে একটি পক্ষ আমাদেরকে হেনস্তা ও চরিতার্থ করার স্বার্থে মিথ্যে মামলায় ফাঁসানোর চেষ্টা করছে। আব্দুর রহমান আরও বলেন, তারা আমাদের নিকট বিভিন্ন সময় টাকা দাবি করলে টাকা না দেওয়ায় আমাদের উপর আরও ক্ষিপ্ত হয়।
রাজারহাট থানার অফিসার ইনচার্জ রেজাউল করিম রেজা বলেন, শ্লীলতাহানির ঘটনায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন মতে একটি মামলা রুজু হয়েছে। পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ হতে আসামি গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যহত রয়েছে।