স্ত্রী ইউএনও; ক্ষমতার দাপড়ে সরকারি গাড়ি ব্যবহার করেন স্বামী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক!
নোয়াখালী প্রতিনিধিঃ
ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মুখে গত ৫ আগস্ট স্বৈরাচার শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর সারাদেশে উপজেলা পরিষদের কার্যক্রম পরিচালনার জন্য প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব পান ইউএনওরা। তারই ধারাবাহিকতায় সুবর্ণচর উপজেলা পরিষদের প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন সুবর্ণচর উপজেলা নির্বাহী অফিসার সুরাইয়া আক্তার লাকী। তিনি বিসিএস প্রশাসন ৩৪ ব্যাচের একজন কর্মকর্তা।
স্থানীয় সাংবাদকর্মী ও একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেন, স্ত্রী উপজেলা প্রশাসকের দায়িত্ব পাওয়ার পর হুট করে উপজেলা চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ এ এইচ এম খায়রুল আনম চৌধুরী সেলিমের জন্য কেনা গাড়ি (নোয়াখালী ঘ-১১০০৪২) নিয়ে নিয়মিত বিশ্ববিদ্যালয়ে যাতায়াত শুরু করেন তার স্বামী সহযোগী অধ্যাপক ড. মো. জিয়াউল হক। নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেমস (এমআইএস) বিভাগের চেয়ারম্যান ও ব্যবসা প্রশাসন অনুষদের ডিন হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন দিন কয়েক হলো।
উপজেলা প্রশাসনের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা জানান, উপজেলা থেকে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের দূরত্ব ২৪ কিলোমিটার। ইউএনওর স্বামী গাড়ি ব্যবহার করলেও জ্বালানি ও গাড়ির ড্রাইভারের বেতন বহন করা হচ্ছে উপজেলা প্রশাসনের সরকারি কোষাগার থেকে। আবার ইউএনও হিসেবে সুরাইয়া নিজেও তার জন্য বরাদ্দকৃত গাড়িটিও ব্যবহার করেন নিয়মিত।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে জিয়াউল হক সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, বিষয়টি পুরোপুরি ঠিক নয়। আমি সাধারণত ডিনের গাড়ি ব্যবহার করি। তবে ডিনের গাড়ি না পেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের জরুরি মিটিং থাকলে মাঝেমধ্যে ওই গাড়িটি (উপজেলার গাড়ি) আমাকে নামিয়ে দিয়ে যায়। ড. জিয়াউল হকের কথার মাঝে সত্যতা পাওয়া গিয়েছে গাড়ী তিনি ব্যবহার করেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় একজন শিক্ষক জানান, শিক্ষকদের নৈতিকতা না থাকলে শিক্ষা ব্যবস্থা কখনই ঠিক হবে না। জিয়াউল স্যার ঠিকমতো বিশ্ববিদ্যালয়েও আসেন না। তার স্ত্রী ইউএনও লাকীর ক্ষমতার অপব্যবহার করে উপজেলা পরিষদের গাড়ি ব্যবহার করছেন। এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ে এই শিক্ষককে নিয়মিত ক্লাস ফাঁকি দিয়ে ভ্রমন ও নিজের পারিবারিক কাজে গাড়িটি ব্যবহার করেন বলেও জানাযায় বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে। শিক্ষার্থীদের মাঝে ক্ষোভ বিরাজ করছে শিক্ষককে সময় মতো ক্লাসে না পেয়ে। পড়াশুনার ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষার্থীরা জানান গণমাধ্যকে।
এসব বিষয়ে জানতে, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় একাধিকবার ফোন করা হলেও ইউএনও সুরাইয়া আক্তার লাকী কল রিসিভ করেননি। তাই তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি প্রতিবেদকের।