শেরপুরের বিভিন্ন নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি


মুহাম্মদ আবু হেলাল, শেরপুর প্রতিনিধি : শেরপুর জেলায় টানা বৃষ্টিপাত ও ভারতের মেঘালয় থেকে নেমে আসা পানির ঢলে চেল্লাখালী নদীর পানি বিপৎসীমার ১০৬ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। সোমেশ্বরী নদীর পানিও বিপদসীমা ছুঁইছুঁই করছে। অন্যদিকে মহারশি, ভোগাই ও মালিঝি নদীর পানি এখনও বিপৎসীমার নিচে থাকলেও ক্রমাগত পানি বাড়ছে।
মঙ্গলবার (২০মে) সকাল ১০টায় পানি উন্নয়ন বোর্ড শেরপুরের তথ্যমতে চেল্লাখালী নদীর পানি বিপদসীমার ১০৬ সেন্টিমিটার ওপরে, ভোগাই নদী (নকুগাঁও পয়েন্ট) বিপদসীমার ৩৭৯ সেন্টিমিটার নিচে,নালিতাবাড়ী পয়েন্টে ২৫৭ সেন্টিমিটার নিচে এবং পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নদে বিপদসীমার ৬৮৭ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।এদিকে মঙ্গলবার সকাল থেকে দুপুর ২ টা পর্যন্ত থেমে থেমে মাঝারি থেকে ভারি বৃষ্টিপাত অব্যাহত আছে ।
ঝিনাইগাতী উপজেলার ভায়াডাঙ্গা সড়কের কাড়াগাঁও বটতলা বাজার এলাকায় সোমেশ্বরী নদীর পানি রাস্তার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। নির্মাণাধীন চাপাতলী সেতুর উভয় পাশের রাস্তা ভেঙে যাওয়ায় বাগেরভিটা এলাকায় কয়েকটি দোকান ও বোরোধান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ঝিনাইগাতী নয়াগাঁও মাজার সংলগ্ন কবরস্থান এলাকায় ঝুড়ার পানিতে রাস্তা তলিয়ে গেছে। ফলে ক্ষেতের পাঁকা ধান নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন কৃষকরা।বাঁকাকুড়া ও ফুলহারির মধ্যবর্তী এলাকায় পাহাড়ি ঝর্ণার পানি উপচে ফসলের মাঠে পানি ঢুকছে। মহারশি নদীর পানি বেড়েই চলেছে। দীঘিরপাড় ফাযিল মাদ্রাসা এলাকায় নদীর পাড় ভাঙনের ঝুঁকিতে রয়েছে। মালিঝি নদীর পানিও বৃদ্ধি পাওয়ায় নিম্নাঞ্চলগুলোতে পানি ঢুকতে শুরু করেছে।
আবহাওয়াবিদ মোস্তফা কামালের বরাতে জানা গেছে,বুধবার (২১ মে) দুপুর পর্যন্ত হালকা থেকে ভারী বৃষ্টি অব্যাহত থাকতে পারে।
ভারতের আসাম ও মেঘালয় অঞ্চলে বৃষ্টিপাত হলে নালিতাবাড়ীর নদ-নদীতে পানি আরও বাড়তে পারে এবং বন্যার আশঙ্কা দেখা দিতে পারে। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের সতর্কবার্তায় বলা হয়েছে, ২০মে পর্যন্ত জেলার নিম্নাঞ্চলগুলো সাময়িকভাবে প্লাবিত হতে পারে। যা জনজীবন ও কৃষিতে ক্ষতি ডেকে আনতে পারে। জেলা কৃষি বিভাগ এরইমধ্যে কৃষকদের পাকা ধান দ্রুত কেটে উঁচু স্থানে সংরক্ষণের পরামর্শ দিয়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাগুলোতে মাইকিংসহ প্রশাসনিক প্রস্তুতি চলছে।
ঝিনাইগাতী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো.আশরাফুল আলম রাসেল বলেন,“বৃষ্টি ও উজানের পানিতে নদ-নদীর পানি কিছুটা বেড়েছে। তবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। বন্যা মোকাবেলায় সবধরণের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি। সেইসাথে তিনি সকাল থেকে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করেন।
এদিকে জেলা প্রশাসক তরফদার মাহমুদুর রহমান, সীমান্তবর্তী নালিতাবাড়ী, ঝিনাইগাতী ও শ্রীবরদী উপজেলাবাসীদের আতঙ্কিত না হয়ে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন।