বিয়ে বাড়িতে স্বামী সবার সামনে মারধর করায় স্ত্রীর আত্মহত্যা
মুক্তিনিউজ২৪ ডট কম ডেস্ক : ভাসুরের ছেলের গায়ে হলুদের অনুষ্ঠানে সবার সামনে স্বামীর গালাগালি ও মারপিট সহ্য করতে না পেরে চন্দনা বেগম (৩৬) নামে এক গৃহবধূ আত্মহত্যা করেছেন। রোববার (৪ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে চন্দনার মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে পাঠায় পুলিশ। শরীয়তপুরের নড়িয়া পৌরসভার খলিফা পাড়া গ্রামের আজহার খলিফার মেয়ে চন্দনা বেগম শনিবার বিকেলে ঢাকার একটি হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেছেন। এর আগে গত শুক্রবার রাতে ঘাস মারার বিষাক্ত ওষুধ খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিলেন তিনি। পুলিশ ও নিহতের পরিবার সূত্রে জানা যায়, ২০০৫ সালে চন্দনা বেগমের শরীয়তপুর পৌরসভার বাঘিয়া গ্রামের নুরুল ইসলাম চৌকিদারের সঙ্গে পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই বিভিন্ন তুচ্ছ বিষয় নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া লেগেই থাকত। গত শুক্রবার রাতে নুরুল ইসলাম চৌকিদারের ভাইয়ের ছেলের গায়ে হলুদের অনুষ্ঠান ছিল। চন্দনার সেই সেই অনুষ্ঠানে যাওয়া নিয়ে প্রথমে চন্দনা ও নুরুলের মধ্যে বাগবিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে সবার সামনে চন্দনাকে বকাঝকা ও মারপিট করেন নুরুল ইসলাম। সকলের সামনে স্বামীর এমন আচরণ ও মারপিট সহ্য করতে না পেরে ঘরে গিয়ে ঘাস মারারা ওষুধ খেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়লে চন্দনাকে তার স্বজনরা শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে নিয়ে যায়। চিকিৎসক উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করে। সেখান থেকে অন্য একটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে শনিবার বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় চন্দনা বেগম মারা যায়। মৃত চন্দনা বেগমের বড় ভাই হান্নান খলিফা ঢাকা পোস্টকে বলেন, বিয়ের পর থেকেই তুচ্ছ বিষয় নিয়ে চন্দনাকে তার স্বামী মারধর করত। গায়ে হলুদের অনুষ্ঠানে সকলের সামনে গালাগালি করে মারধর করার অপমান সহ্য করতে না পেরে বিষাক্ত ওষুধ খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করে চন্দনা। পরে ঢাকার একটি হাসপাতালে নিলে সেখানে মারা যায়। নুরুল ইসলামের কারণেই আমি আমার বোনকে হারিয়েছি। চন্দনাকে আত্মহত্যার প্ররোচনা দেওয়ায় নুরুল ইসলামের বিচার চাই আমি। বিষয়টি নিয়ে পালং মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মেজবাহ উদ্দিন আহমেদ ঢাকা পোস্টকে বলেন, গত পরশু দিন স্বামী-স্ত্রীর ঝগড়াঝাটিকে কেন্দ্র করে চন্দনা ফসলি জমির ঘাস মারার ওষুধ খেয়ে ফেলে এক গৃহবধূ। গতকাল ঢাকায় তার মৃত্যু হয়েছে। আজ চন্দনার মরেদহ শরীয়তপুরে নিয়ে আসা হলে ময়নাতদন্তের জন্য সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। রিপোর্ট পেলে পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।