আদমদীঘিতে গরুর ল্যাম্পিস্কিন রোগের প্রাদুর্ভাব শতাধিক গরু আক্রান্ত
এএফএম মমতাজুর রহমান
আদমদীঘি (বগুড়া) প্রতিনিধি ঃ
গত ২ সপ্তাহের ব্যবধানে বগুড়ার আদমদীঘিতে শতাধিক গরুর ল্যাম্পিস্কিন রোগ দেখা দিয়েছে। গরুর এ রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দেওয়ায় কৃষক ও খামারিরা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। চরম আতঙ্কে রয়েছে উপজেলার কৃষক ও খামারিরা। এ রোগের ঔষধ বা টিকা বাজার বা উপজেলা প্রাণী সম্পদ কার্যালয়েও পাওয়া যাচ্ছেনা বলে ভ’ক্তভোগিরা অভিযোগ করেছেন। ফলে উপজেলার বিভিন এলাকায় দিন দিন এই রোগর প্রাদুর্ভাব ছড়িয়ে পড়ছে। এ অবস্থা চলতে থাকলে আগামীতে এ ভাইরাস ভয়াবহ আকার ধারন করবে বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন।
উপজেলা প্রাণীসম্মদ অফিস সূত্রে জানা গেছে,আদমদীঘি উপজেলায় গরুর খামার রয়েছে ১ হাজার ৬১টি, ডেইরি ফার্ম রয়েছে ৫টি, উপজেলার বিভিন্ন কৃষকের গোয়ালে দেশি জাতের গরু রয়েছে ৫৪ হাজার ২৪৭টি, সংকর জাতের গরু রয়েছে ৩০ হাজার ১২৩টি। তবে কি পরিমান গবাদি পশু এ রোগে আক্রান্ত হয়েছে, সেই পরিসংখ্যান নেই উপজেলা প্রানী সম্পদ অফিসে।
উপজেলার বিভিন্ন খামার মালিক ও কৃষকরা জানিয়েছে, এ রোগে আক্রান্ত গরুর শরীরে প্রচন্ড জ¦র আসছে। কয়েক দিন পর গরুর চামড়ায় বসন্তের মতো দাগ দেখা দিচ্ছে এবং ধীরে ধীরে সেখানে তের সৃষ্টি হচ্ছে। গরু খাওয়া-দাওয়া ছেড়ে দুর্বল হয়ে পড়ছে।
চিকিৎসকদের মতে,এসব লণ নিশ্চিত লাম্পি স্কিন ডিজিজের। এ রোগে পশু মারা যাওয়ার হার ১-৩ শতাংশ। আক্রান্ত গবাদি পশুর চোখ দিয়ে পানি ঝরে চোখ অন্ধ হয়েও যেতে পারে। মশা-মাছির এবং খাবারের মাধ্যমে এক গরু থেকে আরেক গরুতে এ রোগ ছড়ায়। আক্রান্ত গাভির দুধেও এ ভাইরাস বিদ্যমান। তাই আক্রান্ত গাভির দুধ খেয়ে বাছুর আক্রান্ত হতে পারে। প্রধানত বর্ষার শেষে,শরতের শুরুতে অথবা বসন্তের শুরুতে এ রোগ দেখা দেয় এবং ছড়িয়ে পড়ে। উপজেলার নশরৎপুরের কৃষক আজিজার রহমান জানান, কয়েক দিন আগে তার নিজের ৩টি গরুর এ রোগ দেখা দিয়েছিল। চিকিৎসা করার পর এখন গরু ভাল আছে। তবে ওষুধ পেতে কষ্ট হয়েছে। উপজেলা সদরের কৃষক তপনকুমার সরকার জানান,তার ১টি গরুর গায়ে জ্বর সহ গরুর গায়ে চামড়ায় বসন্তের মতো দাগ সৃষ্টি হয়েছে। জ্বরের ট্যাবলেট খাওয়াচ্ছি কিন্তু কোন লাভ হচ্ছে না।
উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ আমিরুল ইসলাম বলেন, এ রোগের কিছুটা ওষুধের সংকট আছে। তবে ওষুধের চাহিদা জানিয়ে উর্ব্ধতন কর্তৃপকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। তিনি আরো বলেন, আক্রান্ত গরুকে ভিটামিন-সি জাতীয় খাবার এবং নিয়মিত জ¦রের ট্যাবলেট নিয়ম মেনে দিতে হবে। আক্রান্ত পশুকে এলএসডি ভ্যাকসিন দিতে হবে। এ বিষয়ে আমরা মাঠ পর্যায়ে কৃষক ও খামারিদের বিভিন্ন পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি।