বৃহস্পতিবার, ২রা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ -muktinews24(তথ্য মন্ত্রনালয় কর্তৃক নিবন্ধনকৃত, রেজি নং-৩৬)

কিভাবে উচ্চ শিক্ষার জন্য বিদেশে যাওয়া যায় সে বিষয়ে দিক নির্দেশনামূলক বক্তব্য রাখছেন ইঞ্জিনিয়ার

কিভাবে উচ্চ শিক্ষার জন্য বিদেশে যাওয়া যায় সে বিষয়ে দিক নির্দেশনামূলক বক্তব্য রাখছেন ইঞ্জিনিয়ার
ছাদেকুল ইসলাম রুবেল গাইবান্ধাঃ
ইঞ্জিনিয়ার আবু জাহিদ নিউ। ৯০ এর দশকে উচ্চ শিক্ষার জন্য পাড়ি জমান যুক্তরাষ্ট্রে।এরপর পরিবার নিয়ে সেখানেই বসবাস।প্রবাসে থেকেও চিন্তা ভাবনার পুরোটাই জন্মভূমিকে নিয়ে।পলাশবাড়ী,সাদুল্লাপুর ও পীরগঞ্জের শিক্ষার্থীরা  কিভাবে উচ্চ শিক্ষার জন্য বিদেশে যেতে পারবেন সেই দিক নির্দেশনামূলক বক্তব্য দিচ্ছেন তিনি।
সোমবার সাদুল্লাপুর উপজেলার কামারপাড়া বালিকা বিদ্যালয়,কামারপাড়া বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ে কয়েকশত শিক্ষার্থীদের মাঝে পড়াশোনা সহ বিভিন্ন দিকনির্দেশনা, খেলার সামগ্রী বিতরণ করেন ইঞ্জিনিয়ার আবু জাহিদ নিউ। এ সময় শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা বলেন আবু জাহিদ নিউ ভাইয়ের কথা শুনে আমরা উৎসাহ পেলাম, আজ থেকে তার কথাগুলো মেনে চলার চেষ্টা করবো।
তিনি শিক্ষার্থীদের জানান, শিক্ষার্থীরা যদি নিচের নিয়মগুলো পর্যায়ক্রমে বাস্তবায়ন করতে পারে তাহলে, মেধাবী হয়ে প্রতিটি ছাত্র-ছাত্রী দেশের সুনামধন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ালেখা করার সুযোগ সহ আগামীতে বিদেশে ভালো-ভালো বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাবে। এরাই আগামীতে বি,সি,এস ক্যাডার হবে এবং ডাক্তার ও ইঞ্জিনিয়ার হবে।
(১) লানিং ল্যাব গঠন: একজন ক্লাশ টিচার থাকবে এবং কয়েকজন ভালো ছাত্র থাকবে। প্রতিটি শিক্ষককে কমপক্ষে ১ ঘন্টা লানিং ল্যাবে ছাত্র-ছাত্রীদেরকে সাহায্য করতে হবে।
(২) লানিং বডি গঠন: একই ক্লাশের দুইজন শিক্ষার্থীকে বন্ধুত্ব করে দিতে হবে এবং একজন আর একজনকে পড়ালেখায় সাহায্য করবে। টাইম টু টাইম ক্লাশ টিচারকে আপডেট করতে হবে।
(৩) লানিং পেয়ার: উপরের ক্লাশের শিক্ষার্থীর সঙ্গে নিচের ক্লাশের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ভ্রাতিত্ব গড়ে দিতে হবে। প্রতি সপ্তাহে পড়ালেখার খোঁজ খরব নিতে হবে এবং ক্লাশ টিচারকে আপডেট জানাতে হবে।
(৪) গ্রুপ স্ট্যাডি: একটি ক্লাশে যদি ৫০ জন শিক্ষার্থী থাকে, তাহলে সেই ক্লাশে ১০টি গ্রুপ করতে হবে। প্রতিটি গ্রুপে একটি করে ভালো শিক্ষার্থী দিতে হবে। ১ ঘন্টা ক্লাশের জায়গায় টিচার ১৫ মিনিট ক্লাশ নিবে এবং বাকী ৪৫ মিনিট গ্রুপ মনিটরিং করবে ও ক্লাশের পড়া ক্লাশেই শেষ করবে।
(৫) ‘এ’-ডে ও ‘বি’-ডে এবং ৫ দিনে পরীক্ষা হবে: সপ্তাহে ৮টি ক্লাশকে ২ ভাগে ভাগ করতে হবে। ‘এ’-ডে তে ৪টি ক্লাশ এবং ‘বি’-ডে তে ৪টি ক্লাশ নিতে হবে। এতে করে ছাত্র-ছাত্রীদের উপর ক্লাশের চাপ কম পড়বে। সপ্তাহের প্রতি বৃহস্পতিবার শেষ দিনে ক্লাশ টেস্ট হবে।
(৬) প্যারেন্টস ডে: প্রতিটি ছাত্র-ছাত্রীর অভিভাবককে  মাসে কমপক্ষে ২ দিন বিদ্যালয়ে আসতে হবে। শিক্ষক অভিভাবককে তার সন্তানের প্রগ্রেস রিপোর্ট অবহিত করবে।
(৭) প্যারেন্টস মোটিভেশন সেশন: শিক্ষিত অভিভাবকদের নিয়ে একটি ভলেন্টিয়ার টিম গঠন করতে হবে। উক্ত অভিভাবকরাই বাচ্চাদের সময় সময় এসে মোটিভেট করবে। দুর্বল ছাত্র-ছাত্রীদের উৎসাহ প্রদান করবে।
(৮) প্যারেন্টস কাউন্সিলিং: বিপদগামী ছাত্র-ছাত্রীদেরকে ডেকে এনে পুনরায় স্কুলে পুনঃবাসন করতে হবে।
(৯) ফ্রি-হ্যান্ড রাইটিং: সারাদিনের কার্যক্রম রাতে এসে লিখতে হবে ফ্রি-হ্যান্ড ইংরেজিতে। যে শব্দ পারবে না, তা বাংলায় লিখে রাখতে হবে।
(১০) ইংলিশ মুভি: ইংলিশ মুভি দেখতে হবে। এতে করে ল্যাংগুয়েজ কমে আসবে।
(১১) ইংলিশ নিউজ পেপার পড়া: বাসায় ইংলিশ নিউজ পেপার পড়তে হবে, এতে করে রিডিং এ্যাবিলিটি বেড়ে যাবে।
(১২) ডিসিপ্লিন হতে হবে: প্রতিটি শিক্ষার্থী নিজেই নিজের বস। প্রতিটি মিনিট এবং প্রতিটি সেকেন্ডের জবাবদিহিতা নিজেকেই করতে হবে।
(১৩) হাতের তালুতে শব্দ লিখতে হবে: প্রতিদিন হাতের তালুতে ৫টি করে ইংরেজি শব্দ লিখতে হবে। ৫টি বাক্য লিখতে হবে। রাতে এসে নিজের ডায়রীতে লিখতে হবে। এতে করে প্রতিটি শিক্ষার্থী ভোকাবেলেটি বাড়বে।
(১৪) স্টুডেন্ট কাউন্সিল: স্টুডেন্ট কাউন্সিল তৈরী করতে হবে এবং ভিপি, জি.এস নির্বাচন করতে হবে। বিনয়ের সাথে  শিক্ষকদের নিকট থেকে নিজেদের অধিকার নিজেদেরকে আদায় করে নিতে হবে।
(১৫) প্রতিটি শিক্ষার্থী একটা করে শিক্ষক: একটি বিদ্যালয়ে যদি ৩০০ জন শিক্ষার্থী থাকে এবং ১৫ জন শিক্ষক থাকে, তার মানে ৩১৫ জন শিক্ষক। এতে করে শিক্ষকদের উপর চাপ কম পড়বে এবং পড়ালেখা ৩১৫ জনের মাঝে ভাগ হয়ে যাবে।
(১৬) প্রধান শিক্ষক: প্রধান শিক্ষকের চেয়ারটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এগুলো বাস্তবায়ন করতে হবে। ভিপি, জি.এস এর সাথে সমন্বয় করে কাজগুলো বাস্তবায়ন করতে হবে।
(১৭) ফজরের নামাজ পড়তে হবে: ফজরের নামাজ পড়ে লেখাপড়া শুরু করলে ৪ ঘন্টা বেশি পাবে এবং সেইসাথে নিজেই নিজের সাথে কথা বলবে এবং ১ মিনিটে ১০টি পয়েন্ট লিখবে এবং সারাদিন তা বাস্তবায়ন করবে।
(১৮) উদ্যোক্তা হতে হবে: ছোট থেকে উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে উঠতে হবে।
(১৯) টোফেল এবং আইএলটিএস-এর জন্য প্রস্তুতি নিতে হবে: প্রস্তুতি নিতে হবে।
(২০) মিথ্যা কথা বলা যাবে না: কোন সময় মিথ্যা কথা বলা যাবে না। তাছাড়া মিথ্যা বলা মহাপাপ।
(২১) শেয়ারিং এন্ড কেয়ারিং: পড়ালেখাসহ যেকোন জিনিস অবশ্যই শেয়ারিং এবং কেয়ারিং হতে হবে।
(২২) টিম ওয়ার্ক এবং ড্রিম ওয়ার্ক: “দশে মিলে করি কাজ হারি জিতি নাহি লাজ”- তাই সবাই মিলেমিশে একসাথে কাজ করতে হবে। এছাড়াও ওয়েল ম্যানার, ওয়েল বিহ্যাব, বড়দের সম্মান ও ছোটদের স্নেহ করতে হবে, সমাজ সুন্দর করতে তোমাদেরকেই অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে। বন্ধু অথবা শয়তানের কু-মন্ত্রনায় নেশাজাতীয় দ্রব্য গ্রহণ করা যাবে না।
পরে সাদুল্লাপুরের বেশ কয়েকটি এলাকায় উদ্যোক্তা তৈরির বিষয়ে বক্তব্য রাখেন তিনি।
বিভাগ
শেয়ার করুন

মতামত লিখুন