রবিবার, ২৮শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ -muktinews24(তথ্য মন্ত্রনালয় কর্তৃক নিবন্ধনকৃত, যার রেজি নং-৩৬)

১৫ বছর ধরে দুই গ্রামের মানুষের ভরসা নড়বড়ে সাঁকো !

১৫ বছর ধরে দুই গ্রামের মানুষের ভরসা নড়বড়ে সাঁকো !
কুড়িগ্রাম প্রতিনিধিঃ
দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে কুড়িগ্রাম পৌরসভার ৬নং ওয়ার্ডের নামা ভেলাকোপা ও টাপু ভেলাকোপা গ্রামের মানুষদের
নিয়মিত চলাচল করতে হচ্ছে একমাত্র নড়বড়ে এই বাঁশের সাঁকো দিয়ে। দীর্ঘ বছরেও দুই গ্রামের মানুষদের দূর্ভোগ কাটেনি।
বর্ষার শুরুতেই প্রতিবছর গ্রামের মানুষদের দেয়া চাঁদার টাকায় নিয়মিত সংস্কার করতে হয় এই সাঁকোটি। বছরের পর বছর জন-প্রতিনিধিদের আশ্বাস আর সান্তনা পেলেও তাদের কপালে জুটছে না একটি সেতু।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়,
প্রতি নিয়ত জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নড়বড়ে এই সাঁকোটি দিয়ে পার হতে হচ্ছে  খালের দুই দিকের গ্রামের বাসিন্দাদের। পাশাপাশি দুই দিকে মাদ্রাসা ও প্রাথমিক বিদ্যালয় থাকায় শিশু শিক্ষার্থীদেরও ঝুঁকি নিয়ে পার হতে হয়। দুন দিন এখন যেন এক মরণফাঁদ হয়ে উঠছে নড়বড়ে রেলিং বিহীন এই সাঁকোটি। ইচ্ছে না থাকলেও কোন উপায় নেই কেননা বাঁশের চাটাই বিছানো ০২ ফুট প্রস্থ আর ৯০ ফুট দৈর্ঘ্যের সাঁকোটি ছাড়া আর অন্য কোন রাস্তাও নেই। যার ফলে প্রতিনিয়ত চরম হতাশা,ক্ষোভ আর ঝুঁকি নিয়ে রোজ পারাপার হতে হচ্ছে দুই গ্রামের কয়েক হাজার বাসিন্দাদের।
পারাপার নিয়ে জনপ্রতিনিধিদের কাছে হাজারো আবেদন আর অভিযোগ জমা হলেও পৌর কর্তৃপক্ষের অবহেলা আর উদাসীনতাকে দায়ী করছেন দুই গ্রামের বাসিন্দারা।
সাঁকো দিয়ে চলাচলরত রিক্সা চালক খোকন মিয়া বলেন,’রিজার্ভ ছাড়া এইদিকে তেমন একটা ভাড়া মারি না। বাঁশের সাঁকোর উপর দিয়া গাড়ি চালানো খুব রিস্কের। ১৫ বছর আগে এইখানে বাঁধ ছিলো। বানের পানির আসার পর থেকে এইটা খাল হয়্যা গেইছে।’
ভেলাকোপার কদমতলা গ্রামের  ফজলুল করিম ফারাজী বলেন,’আমি প্রতিদিন মোটরসাইকেল নিয়ে এই সাঁকো দিয়ে শহরে চলাচল করি। নড়বড়ে এই সাঁকো পার হতে খুব কষ্ট হয়,মাঝে মধ্যে আতংকে থাকি পানিতে পড়ে যাওয়ার।’
একই এলাকার জাবেদ আলী বলেন,’আমরা গ্রামবাসী চাঁদা তুলে এই বাঁশের সাঁকোটি তৈরি করেছি। সারা বছর এই সাঁকো দিয়ে পারাপার হতে গিয়ে দূর্ভোগে পড়তে হয়। তাছাড়া হঠাৎ কেউ অসুস্থ হলে এ বাঁশের সাঁকো দিয়ে হাসপাতালে নেয়া দুষ্কর হয়ে যায়। আমরা দ্রুত একটা ব্রীজ চাই।’
কলেজ শিক্ষার্থী সালমা আক্তার বলেন,’শহরে কলেজে যেতে ঝুঁকি নিয়ে পার হতে হয় এই বাঁশের সাঁকো দিয়ে। অনেক স্থানের বাঁশের চাঁটাইগুলো পঁচে গেছে। একটি ব্রিজ হলে আমাদের অনেক উপকার হতো।’
১নং কদমতলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক রুহুল আমিন কবির বলেন,’আমরা তো ঝুঁকি নিয়ে স্কুলে যাই। তারপরও দূর্ঘটনার ভয় তো থাকেই। আমাদের স্কুলের কোমলমতি শিক্ষার্থীদের নিয়ে খুব চিন্তা হয়। এখানে একটা ব্রীজ হওয়া জরুরি হয়ে পড়েছে।’
পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী মো.আতিকুর রহমান বলেন,’আমরা এইখানে একটি কার্লভাট করার জন্য মন্ত্রণালয়ে প্রতিনিয়ত চিঠি পাঠাচ্ছি। সমস্যাটা হলো এলজিইডি পৌরসভার ভিতরে কাজ করতে চায় না। আমরা চেষ্টা করছি কোন না কোন ফান্ড থেকে এখানে কালভার্ট নির্মান করার।’
কুড়িগ্রাম পৌরসভার মেয়র মোঃ কাজিউল ইসলাম বলেন,’নামা ভেলাকোপা ব্রীজের চাহিদার বিষয়টি অনেক আগেই ঢাকায় কাগজপত্র পাঠানো  হয়েছে। ঢাকা থেকে অর্থ বরাদ্দ আনার চেষ্টা করছি। ফান্ডের ব্যবস্থা হলেই টেন্ডার করে ওখানে কাজ শুরু করা হবে।’
বিভাগ
শেয়ার করুন

মতামত লিখুন