শুক্রবার, ১০ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ -muktinews24(তথ্য মন্ত্রনালয় কর্তৃক নিবন্ধনকৃত, রেজি নং-৩৬)

ফুলবাড়ীর ১৪৯ টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার নির্মানের রুপকার সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসার আশরাফুজ্জামান 

ফুলবাড়ীর ১৪৯ টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার নির্মানের রুপকার সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসার আশরাফুজ্জামান 
ফুলবাড়ী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি : ২৬.০৯.২৩
কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার ১৪৯ টি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নির্মিত হয়েছে দৃষ্টি নন্দন শহীদ মিনার। অথচ এক বছর আগে কোন প্রতিষ্ঠানেই ছিলনা ভাষার জন্য দেশের জন্য জীবন উৎসর্গকারী মহান শহীদের স্মরণে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদনের ব্যবস্থা।
আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস, ১৫ ই আগষ্ট জাতীয় শোক দিবস, বিজয় দিবস বা স্বাধীনতা দিবসে কোমলমতি শিশু শিক্ষার্থীদের পুষ্পার্ঘ্য হাতে উপজেলা সদরের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে যেতে হতো পায়ে হেঁটে। নিকটতম প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক শিক্ষার্থীরা এসব কর্মসূচিতে অংশ গ্রহন করলেও দুরত্বের ভয়ে দুরবর্তী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক শিক্ষার্থীরা বরাবরই থাকতো অনুপস্থিত।

কিন্তু এখন প্রতিটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে দৃষ্টি নন্দন শহীদ মিনার নির্মিত হওয়ায় শহীদের স্মরণে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদনে,দুরত্বের প্রতিবন্ধকতা কেটেছে শিক্ষক শিক্ষার্থীদের।

জানা গেছে, কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার ১৪৯ টি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার নির্মানের রুপকার হলেন সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসার মো: আশরাফুজ্জামান। যোগদানের পর থেকে তিনি তার অধীনস্থ ক্লাস্টারের সকল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের অনুপ্রেরণা ও দিকনির্দেশনা দিয়ে শহীদ মিনার নির্মানে আগ্রহী করে তোলেন। ফলশ্রুতিতে এক বছরের মধ্যে ফুলবাড়ী ক্লাস্টারের ২৯ টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে ২৮ টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ব্যবস্থাপনা কমিটি ও স্থানীয়দের অনুদানে নির্মিত হয় দৃষ্টি নন্দন শহীদ মিনার। ফুলবাড়ী ক্লাস্টারের সব কয়টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার নির্মান হওয়া দেখে অন্যান্য ক্লাস্টারের প্রধান শিক্ষকরাও অনুপ্রাণিত হন। শুরু হয় গোটা উপজেলার সকল প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার নির্মান কার্যক্রম। বর্তমানে উপজেলার ১৪৯ টি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার নির্মান কার্যক্রম সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে।
উপজেলার চন্দ্রখানা সরকার পাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আফরুজা আক্তার বলেন, প্রথম যখন আশরাফুজ্জামান স্যার আমার বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার নির্মানের প্রস্তাব দেন, তখন  সরকারী বরাদ্দ না থাকার অজুহাতে আমি এড়িয়ে যাই। কিন্তু পরে ওনার সঠিক দিকনির্দেশনায় আমার আগ্রহ বেড়ে যায়। ওনার অনুপ্রেরণায় স্থানীয়দের অনুদান, শিক্ষকদের অনুদান এবং সরকারী বরাদ্দ থেকে সামান্য টাকা বাচিয়ে মাত্র ৪৫ হাজার টাকা খরচ করে শহীদ মিনার নির্মান করেছি।
এ প্রসঙ্গে সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসার মো: আশরাফুজ্জামান বলেন, ২০২১ সালে যখন এ উপজেলায় যোগদান করি তখন উচ্চ বিদ্যালয় সংলগ্ন প্রাথমিক বিদ্যালয় ছাড়া কোন প্রাথমিক বিদ্যালয়েই শহীদ মিনার ছিলনা। আমি আমার ক্লাস্টারের অধীনস্থ প্রধান শিক্ষকদের শহীদ মিনার নির্মানের ব্যাপারে উদ্বুদ্ধ করতে থাকি। প্রথম প্রথম শিক্ষকরা বিভিন্ন অজুহাতে এড়িয়ে গেলেও হাল ছাড়িনি আমি। পরে ২০২২-২০২৩ অর্থ বছরে প্রধান শিক্ষকরা নিজ নিজ বিদ্যালয় মাঠে স্বল্প পরিসরে শহীদ মিনার নির্মানে রাজী হন এবং  ফুলবাড়ী ক্লাস্টারের ২৮ টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার নির্মিত হয়। একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে স্থান সংকুলান না হওয়ায় শহীদ মিনার নির্মান সম্ভব হয়নি।
উপজেলা শিক্ষা অফিসার আকবর কবীর জানান, সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসার মো: আশরাফুজ্জামানের অনুপ্রেরণা ও দিকনির্দেশনায় ফুলবাড়ী ক্লাস্টারের সকল বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার নির্মানের পর গোটা উপজেলায় এ কার্যক্রম শুরু হয়। আশা করছি আসন্ন বিজয় দিবসে উপজেলার সকল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও শিক্ষকরা নিজ নিজ মাঠে নির্মিত শহীদ মিনারে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন করতে পারবে।
বিভাগ
শেয়ার করুন

মতামত লিখুন