বৃহস্পতিবার, ২১শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ -muktinews24(তথ্য মন্ত্রনালয় কর্তৃক নিবন্ধনকৃত, রেজি নং-৩৬)

সুন্দরগঞ্জের প্রতিবন্ধী বিনোদের কষ্টের জীবন দিনে আয়  ৫০ টাকা

সুন্দরগঞ্জের প্রতিবন্ধী বিনোদের কষ্টের জীবন দিনে আয়  ৫০ টাকা
গাইবান্ধা  সংবাদদাতা:
বিনোদ চন্দ্র গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার তারাপুর ইউনিয়নের ঘগোয়া গ্ৰামের মৃত অশিক চন্দ্রের ছেলে। দুই সন্তান ও স্ত্রী নিয়ে একটি জরাজীর্ণ ঝুঁপড়ি ঘরে বসবাস করেন তিনি।খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বিনোদ চন্দ্র প্রায় দুই যুগ ধরে রাস্তার পাশে সাইকেল, ভ্যান ও রিকশা মেরামত করেন। শারীরিক প্রতিবন্ধী হওয়ায় তার কাছে পরিচিতজনরা ছাড়া অন্যরা আসেন না। পরিচিতদের বিকল সাইকেল আর ফাটা টায়ার মেরামত করে দিনে পারিশ্রমিক পান মাত্র ৫০-৬০ টাকা। এই সামান্য আয় দিয়েই অতিকষ্টে চলে তার সংসার।তার স্ত্রী রেনু বালা অন্যের বাড়িতে কাজ করেন।
স্থানীয়রা জানান, বিনোদ চন্দ্র খুব সহজ-সরল মানুষ। শারীরিক প্রতিবন্ধী হওয়ার পরেও তিনি জীবিকার তাগিদে সাইকেল মেরামতের কাজ করেন। তার কাছে সাইকেল-ভ্যানের ছোটখাটো সমস্যা নিয়ে লোকজন আসেন। এতে দিনে ৫০ বা ৬০ টাকার বেশি আয় হয় না। এ দিয়েই তিনি কোনোমতে সংসার চালাচ্ছেন। কখনো তিনি অন্যের কাছে হাত পেতে সাহায্য চাননি। সরকারি বা বেসরকারিভাবে বিনোদকে কোনো সহযোগিতা করা হলে তিনি একটু সচ্ছল জীবনযাপন করতে পারতেন। স্থানীয় বাসিন্দা সুজন মিয়া  বলেন, বিনোদের কাজের স্থানী কোনো ঠিকানা নেই। বিভিন্ন জায়গায় বসে তিনি সাইকেল মেরামত করেন। এতে যতসামান্য আয় হয়।
আশাদুল ইসলাম নামে এক স্থানীয় বাসিন্দা  বলেন, বিনোদ প্রতিবন্ধী হলেও পরিশ্রমী। সমাজের বিত্তবানদের উচিত তাকে সহযোগিতা করা।বিনোদের স্ত্রী রেনু বালা জাগো নিউজকে বলেন, অভাবের সংসার। স্ত্রী বলেন, তিন মাস পর পর স্বামী প্রতিবন্ধী ভাতা পায়। তিনি আরও বলেন, থাকার একটা ভালো ঘরও নেই। থাকি ঝুঁপড়ি ঘরে। বৃষ্টির দিনে ঘরে পানি ঢোকে। সবাই ঘর পায়, আমরা হতভাগা কোনো ঘর পাই না।প্রতিবন্ধী বিনোদ চন্দ্র বলেন, একদিকে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, অন্যদিকে তেমন কাজকর্ম না থাকায় দিনে মাত্র ৫০-৬০ টাকা আয় হয়। সামান্য আয় দিয়ে কোনোদিন দু-বেলা, দু-মুঠো খাবার জোটে, আবার কোনোদিন জোটানো দায় হয়ে পড়ে।
বিনোদ আরও বলেন, কাজ শেষে বাড়িতে যাওয়ার সময় রাস্তায় কম দামে যে সবজি পাই তা-ই কিনে নিয়ে যাই।তারাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আমিনুল ইসলাম লেবু  বলেন, বিনোদ চন্দ্র দরিদ্র কিন্তু পরিশ্রমী মানুষ। প্রতিবন্ধী ভাতা আর সাইকেল মেরামত করে যা আয় হয় তা দিয়েই অতিকষ্টে তার সংসার চলছে। পরবর্তীতে কোনো অনুদান আসলে তাকে দেওয়া হবে। সুন্দরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ-নূর-এ আলম  বলেন, বিনোদ সম্পর্কে কিছু জানা নেই। খোঁজ নিয়ে দেখবো। সেইসঙ্গে তাকে সহযোগিতাও করা হবে।
বিভাগ
শেয়ার করুন

মতামত লিখুন