রবিবার, ২৮শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ -muktinews24(তথ্য মন্ত্রনালয় কর্তৃক নিবন্ধনকৃত, যার রেজি নং-৩৬)

সংবাদ শিরোনামঃ

ভারতের সবচেয়ে নিরাপদ শহর কলকাতা

ভারতের সবচেয়ে নিরাপদ শহর কলকাতা

মুক্তিনিউজ২৪ ডট কম ডেস্ক : ভারতের সবচেয়ে নিরাপদ শহরের তালিকায় শীর্ষে জায়গা করে নিয়েছে দেশটির পশ্চিমবঙ্গের রাজধানী কলকাতা। ভারতের জাতীয় ক্রাইম রেকর্ডস ব্যুরো (এনসিআরবি) তালিকাটি প্রকাশ করেছে।

এ নিয়ে টানা তৃতীয় বছরের মতো ভারতের সবচেয়ে নিরাপদ শহরের তালিকায় শীর্ষস্থান দখল করল শহরটি। মঙ্গলবার (৫ ডিসেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম বলছে, ভারতের প্রধান শহরগুলোর মধ্যে ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ড ব্যুরোর (এনসিআরবি) ২০২২ সালের রিপোর্ট অনুযায়ী দেশের সব থেকে নিরাপদ শহর হওয়ার খেতাব জিতেছে কলকাতা। ২০২১ সালেও এই রিপোর্টে সবচেয়ে নিরাপদ শহরের তকমা ছিল কলকাতার হাতেই। অর্থাৎ নিরাপত্তার নিরিখে ভারতের রাজধানী দিল্লি-সহ অনেক শহরের চেয়ে এগিয়ে রয়েছে কলকাতা শহর। তবে সার্বিক ভাবে নারীদের সঙ্গে হওয়া অপরাধমূলক ঘটনার আঙ্গিকে দেখতে গেলে পশ্চিমবঙ্গের অবস্থা যে খুব ভালো তা বলা যায় না। সেই নিরিখে ভারতে উত্তরপ্রদেশ, মহারাষ্ট্র ও রাজস্থানের পরে চতুর্থ স্থানে রয়েছে পশ্চিমবঙ্গ। এদিকে সার্বিক অপরাধের পাশাপাশি নারীদের সঙ্গে অপরাধের প্রশ্নেও চলতি বছরে ভারতে শীর্ষস্থানে রয়েচে দিল্লি। আর দক্ষিণ এশিয়ার এই দেশটিতে নারীদের ওপরে সবচেয়ে কম অপরাধের ঘটনা নথিভুক্ত হয়েছে কোয়েম্বাটুরে। এনসিআরবি রিপোর্ট বলছে, কলকাতায় ভারতীয় দণ্ডবিধি মাফিক অপরাধের সংখ্যা কমেছে। ২০২০ বা ২০২১ সালের তুলনায় ২০২২ সালে কলকাতায় এই ধরনের অপরাধের বদল নজরে এসেছে। ২০২১ সালে যেখানে ১৩ হাজার ৬৭টি অপরাধের অভিযোগ নথিবদ্ধ হয়েছিল, সেখানে এবার সেই সংখ্যা ১১ হাজার ৩৮টি। দিল্লির ক্ষেত্রে এই সংখ্যা ২ লাখ ৯৮ হাজার ৯৮৮টি। মুম্বাইয়ে ৬৯ হাজার ২৮৯টি এবং বেঙ্গালুরুতে ২৮ হাজার ৬৬৬টি অভিযোগ নথিভুক্ত হয়েছে। প্রতি লাখ জনসংখ্যায় অপরাধের গড় হার সবচেয়ে কম কলকাতা শহরেই (৭৮.২)। জনসংখ্যার নিরিখে ছোট শহর আহমেদাবাদ, পুণে, কোয়েম্বাটুর, সুরাটও অপরাধের হারে এগিয়ে। যেমন রিপোর্ট অনুযায়ী, কলকাতার জনসংখ্যা ১৪.১১ কোটি। সেখানে অপরাধ সংঘটিত হয়েছে ১১ হাজার ৩৮টি। অর্থাৎ, প্রতি এক লাখ জনসংখ্যায় কলকাতায় অপরাধ হয়েছে ৭৮.২টি। কোয়েম্বাটুরে সব থেকে কম অপরাধের ঘটনা (৪ হাজার ৫৪২টি) নথিবদ্ধ হলেও ওই শহরের জনসংখ্যা মাত্র সাড়ে ২১ লাখ। অর্থাৎ, প্রতি লাখ জনসংখ্যায় অপরাধ কলকাতার প্রায় তিন গুণ। তবে চার্জশিট পেশের হারে কলকাতার (৮৮.১) থেকে এগিয়ে কোচি (৯৫.৯) ও কোঝিকোড় (৮৯.৪)। এনসিআরবির রিপোর্টে অবশ্য স্পষ্ট করে দেওয়া হয়েছে, শুধুমাত্র এই পরিসংখ্যান বা রিপোর্টের ভিত্তিতে রাজ্যের সঙ্গে রাজ্যের কিংবা শহরের সঙ্গে শহরের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির তুলনা করা যুক্তিযুক্ত নয়। কারণ, এই রিপোর্ট তৈরি হয় মূলত থানায় দায়ের হওয়া অভিযোগের ভিত্তিতে। পুলিশ বহু ক্ষেত্রে অভিযোগ নথিভুক্তই করতে না চাইলে, অভিযোগের সংখ্যা নিরীক্ষণে কমই হবে। কিন্তু তা সেখানকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির ঠিক প্রতিফলন হবে না। এ প্রসঙ্গে ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়র ব্যাখ্যা, কিছু-কিছু রাজ্যে পুলিশ অভিযোগই গ্রহণ করতে চায় না। ফলে স্বাভাবিক ভাবেই সেই সকল রাজ্যের প্রকৃত অপরাধের পরিসংখ্যান সামনে আসে না। সদ্য প্রকাশিত রিপোর্ট অনুযায়ী, বিশেষ এবং স্থানীয় আইনে অপরাধের সংখ্যাও কলকাতায় তুলনামূলক বেশ কম। ২০২২ সালে কলকাতায় হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন ৩৪ জন। যা অন্য শহরের তুলনায় কম। দুর্ঘটনার কারণে মৃত্যু হয়েছে ২১৭ জনের। দুর্ঘটনায় মৃত্যুর হার ১.৫ শতাংশ, সেটিও ভারতের অন্য শহরগুলোর থেকে কম। ভ্রূণ বা শিশুহত্যার মতো অপরাধ কলকাতায় নথিভুক্ত হয়নি। দিল্লি, মুম্বাইয়ে এমন ঘটনা ঘটেছে যথাক্রমে ৩২টি এবং ১৮টি।

বিভাগ
শেয়ার করুন

মতামত লিখুন