শুক্রবার, ৩রা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ -muktinews24(তথ্য মন্ত্রনালয় কর্তৃক নিবন্ধনকৃত, রেজি নং-৩৬)

পার্বতীপুর বালিকা বিদ্যাপীঠ উচ্চ বিদ্যালয়ের আয়োজনে দিনব্যাপী পিঠা উৎসব

পার্বতীপুর বালিকা বিদ্যাপীঠ উচ্চ বিদ্যালয়ের আয়োজনে দিনব্যাপী পিঠা উৎসব

মিলন পারভেজঃ নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে দিনাজপুরের পার্বতীপুর বালিকা বিদ্যাপীঠ উচ্চ বিদ্যালয়ে পিঠা উৎসব অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার (৭ ডিসেম্বর) সকালে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মাহমুদুর রহমানের উদ্যোগে দিনব্যাপী এ উৎসব অনুষ্ঠিত হয়। শিক্ষার্থীদেরকে দেশের ঐতিহ্যের সঙ্গে পরিচয় করে দিতে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ শিক্ষার্থীদের নিয়ে বিভিন্ন কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করে। তারই ধারাবাহিকতায় এদিন অনুষ্ঠিত হয় এ পিঠা উৎসব। দেশি বাহারি পিঠা প্রদর্শনীর মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের দেশীয় সংস্কৃতির সঙ্গে পরিচয় করানো হয়।
সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, পৃথক পৃথক বুথে নানা রকম পিঠাপুলির পসরা সাজিয়ে রাখা আছে। এর মধ্যে কতিপয় পিঠা একেবারেই নতুন আবার কিছু অতি পরিচিত। প্রতিটা পিঠার ওপরে লেখা আছে পরিচিতি নাম। এসব পিঠার নামও বেশ বাহারি। শিক্ষার্থী ও অতিথিরা ঘুরে ঘুরে দেখছেন এসব স্টল। জানছেন নতুন নতুন পিঠা সম্পর্কে। স্কুলের আরেক পাশে চলছে নৃত্য ও সংগীত পরিবেশন। সেখানে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাই দেখাচ্ছেন নৃত্য, শোনাচ্ছেন মত মাতানো গান। পুরো স্কুল মাঠ রূপ নিয়েছে অনিন্দ্য মিলনমেলায়। মেলায় ১০টি পৃথক স্টলে ছিলো ভাপাপুলি, দুধপুলি, আওলা কেশরি, পুলি, ঝিনুক, পাটিসাপটা, জামাই সোহাগী, গোলাপ, চিতই, কানমুচরি, পায়েস, পুডিং, তেল পিঠা, দুধ চিতই, ফুল পিঠা, ক্ষির, মুঠা পিঠা, রস গোলাপ ও কেকসহ প্রায় অর্ধশতাধিক পিঠাপুলি। পিঠা উৎসব উপলক্ষে শিক্ষার্থী, শিক্ষক-শিক্ষিকা, অভিভাবকদের আগমনে গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি উপেক্ষা করেই স্কুল প্রাঙ্গণ মিলন মেলায় পরিণত হয়। নেচে-গেয়ে, হই-হুল্লোড় করে সকলে দিনটি পার করেন। শিক্ষার্থীদের গান ও নৃত্য পিঠা উৎসবে আসা অথিতিদের মুগ্ধ করে। পিঠা উৎসবের উদ্বোধন করেন পৌর মেয়র আমজাদ হোসেন, এসময় তার সাথে ছিলেন, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান আমিরুল মোমেনিন মোমিন ও রুকশানা বারী রুকু, মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ আবুল হাসনাত খান, পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি মোশারফ হোসেন সমাজ, বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি রজব আলী এবং বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ।
পিঠা উৎসবের উদ্বোধনকালে পার্বতীপুর পৌর মেয়র আমজাদ হোসেন বলেন, পিঠা খাওয়ার দাওয়াতের প্রচলন এদেশের গ্রাম্য সংস্কৃতির অংশ। শীতের সকালে এক বাড়িতে পিঠা বানিয়ে পাড়ার মানুষকে খাওয়ানো এখনো গ্রাম্য রীতি। আত্মীয়-স্বজনকে দাওয়াত দিয়ে কিংবা জামাই আপ্যায়নে পিঠার বেশ কদর রয়েছে আমাদের দেশে। মোশারফ হোসেন সমাজ বলেন, মা-ভাবী কিংবা বোনদের হাতে বানানো পিঠার স্বাদ যেমনটা মধুর তেমনি মধু মাখা তাদের হাসি মানুষের মাঝে প্রাণের সঞ্চার ঘটায়, আনন্দে উদ্ভাসিত হয় মন। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মাহমুদুর রহমান বলেন, এই উৎসব পার্বতীপুরে একটি ব্যতিক্রম ঘটনা, আমরা আমাদের শিক্ষার্থীদের সংস্কৃতির অংশ সম্পর্কে জানাতে এ পিঠা উৎসবের আয়োজন করেছি। প্রতি বছর এ উৎসব চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন তিনি।
স্কুলটির ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি রজব আলী বলেন, এত লোকের সমাগম হবে ভাবতেই পারিনি। এই আয়োজনে আমাদের স্কুল মিলনমেলায় রূপ নিয়েছে। আগামীতে আরও বড় পরিসরে ব্যতিক্রমী এই আয়োজনের উদ্যোগ নেয়া হবে। উৎসবে জানা-অজানা পিঠা সম্পর্কে জানতে পেরে এবং স্বাদ গ্রহণ করতে পেরে খুশি অতিথি, অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা। পিঠা উৎসবে আনন্দে মেতে থাকা দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী তানসিম বলেন, এখানে এসে আমরা অনেক আনন্দ পাচ্ছি। অনেক রকম পিঠা খেতে পারছি। আমাদের অনেক ভালো লাগছে। সুকন্যা নামে নবম শ্রেণির আরেক শিক্ষার্থী বলেন, আমাদের স্কুলে এই প্রথম এত সুন্দর একটা আয়োজন করেছে। এখানে অনেক রকম পিঠার সঙ্গে পরিচিত হলাম। নতুন নতুন পিঠা খেলাম। অনেক ভালো লাগছে। এমন ব্যতিক্রম আয়োজনে খুশি অতিথি, অভিভাবক ও স্থানীয়রা। তাদের চাওয়া প্রতি বছরই যেন এমন আয়োজন করা হয়। জামালউদ্দিন নামে এক অভিভাবক বলেন, এমন আয়োজনের মাধ্যমে আমাদের সন্তানেরা হারিয়ে যাওয়া অনেক পিঠা-পুলি সম্পর্কে জানতে পেরেছে।

বিভাগ
শেয়ার করুন

মতামত লিখুন