ভালো কাজের ইচ্ছা যেভাবে কল্যাণ বয়ে আনে
মুক্তিনিউজ২৪ ডট কম ডেস্ক : মানুষের ইচ্ছা থেকেই ভালো বা মন্দ কাজ হয়ে থাকে। মানুষ যখন ভালো কাজের ইচ্ছা করে তখন তা পালন সহজ হয়, খারাপ কাজের ক্ষেত্রে বিবেক অবশ্যই বাধা দিয়ে থাকে তবে এরপরও অনেক মন্দ কাজের জড়িয়ে পড়েন। ভালো বা মন্দ যেই কাজই হোক না কেন- সব নির্ভর করে মানুষের ইচ্ছা শক্তির ওপর।
এ বিষয়ে হাদিসে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘অবশ্যই আমলের প্রতিদান নিয়তের ওপর নির্ভরশীল।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস, ১)
কোনো কিছু করার আগে ভালো-মন্দ ভেবেই সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত। কারণ, ইচ্ছাশক্তি ও কর্মের ওপরই প্রতিদান দেওয়া হবে। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তায়ালা বলেন,
لَا یُکَلِّفُ اللّٰهُ نَفۡسًا اِلَّا وُسۡعَهَا ؕ لَهَا مَا کَسَبَتۡ وَ عَلَیۡهَا مَا اکۡتَسَبَتۡ ؕ
আল্লাহ তায়ালা কাউকে তার সাধ্যের বাইরে দায়িত্ব অর্পণ করেন না। যে ভালো উপার্জন (কাজ) করবে, সে তার প্রতিদান পাবে; এবং যে মন্দ উপার্জন (কাজ) করবে, সে তার প্রতিফল পাবে।’ (সূরা বাকারা, আয়াত, ২৮৬)
এজন্য প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মানুষকে ভালো কাজের প্রতি উদ্বুদ্ধ করেছেন। হাদিসে পাকে ইরশাদ হয়েছে-
হজরত আবু যর রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন যে, ‘আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘যে ব্যক্তি একটি কল্যাণমূলক কাজ করবে তার জন্য রয়েছে অনুরূপ ১০টি কল্যাণমূলক পুরস্কার; এমনকি আমি তা বাড়িয়ে দেব।
আর যে ব্যক্তি একটি মন্দ কাজ করবে তার জন্য রয়েছে অনুরূপ একটি মন্দ প্রতিদান অথবা আমি তাকে ক্ষমা করে দেব (যদি সে অনুতপ্ত হয়ে আমার কাছে ক্ষমা চায় ও ভবিষ্যতে অন্যায় কাজ না করার প্রতিশ্রুতি গ্রহণ করে)
আর যে ব্যক্তি আমার (আনুগত্যের) দিকে এক বিঘত (আধা হাত) এগিয়ে আসবে আমি তার (কল্যাণে) প্রতি এক হাত এগিয়ে আসব।
আর যে ব্যক্তি আমার (আনুগত্যের) দিকে এক হাত এগিয়ে আসবে আমি তার (কল্যাণে) প্রতি এক বাহু (দুই বাহু সমান) এগিয়ে আসব।
আর যে ব্যক্তি আমার (আনুগত্যের) দিকে হেঁটে আসবে; আমি তার (কল্যাণের) দিকে দৌড়ে যাব।
আর যদি কেউ আমার সঙ্গে শিরক না করে (আমার সঙ্গে শরিক বা অংশদার সাব্যস্ত না করে) পৃথিবীসম গোনাহ (পাপ) নিয়ে আমার সামনে হাজির হয় (আমার কাছে ক্ষমা চায় ও তাওবা করে) তবে আমিও তার সামনে অনুরূপ (পৃথিবীসম) বিশাল ক্ষমা নিয়ে হাজির হব।’ (মুসলিম, মুসনাদে আহমাদ, ইবনে মাজাহ)
আরেক হাদিসে হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তার মহান প্রভূর সূত্রে বর্ণনা করতে গিয়ে বলেন, ‘আল্লাহ তায়ালা ভালো কাজ ও মন্দ কাজের সীমা চিহ্নিত করে দিয়েছেন এবং সেগুলো বৈশিষ্ট্যও সুস্পষ্টভাবে বর্ণনা করেছেন।
সুতরাং যে ব্যক্তি কোনো ভালো কাজের সংকল্প করে, কিন্তু তা সম্পাদন করেননি, আল্লাহ তার আমলনামায় একটি পূর্ণ সাওয়াব বা প্রতিদিন লেখার আদেশ দেন। আর (ভালো কাজের) সংকল্প করার পর যদি কাজটি বাস্তবায়ন করা হয়, তবে আল্লাহ তার আমলনামায় ১০ নেকি থেকে শুরু করে ৭০০; এমনকি তার চেয়েও কয়েকগুণ বেশি সাওয়াব দান করেন।
পক্ষান্তরে… যদি কোনো মানুষ মন্দ কাজের ইচ্ছা পোষণ করে, সঙ্গে সঙ্গে তার আমলনামায় গোনাহ লেখা হয় না। তবে যখন সে ব্যক্তি মন্দ কাজ করে তখন শুধু মাত্র একটি মন্দ কাজের জন্য একটি গোনাহ লেখা হয়।’(বুখারি ও মুসলিম)