বৃহস্পতিবার, ২১শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ -muktinews24(তথ্য মন্ত্রনালয় কর্তৃক নিবন্ধনকৃত, রেজি নং-৩৬)

ভবনে ফাটল; ঝুঁকিতে থানা পুলিশের সদস্যরা

ভবনে ফাটল; ঝুঁকিতে থানা পুলিশের সদস্যরা

খানসামা (দিনাজপুর) প্রতিনিধি: জনগণের জানমালের নিরাপত্তার দায়িত্ব সর্বদা থাকা বাংলাদেশ পুলিশের সদস্যরা দিনাজপুরের খানসামা থানায় ঝুঁকিতে দিন কাটাচ্ছেন। এমনই চিত্র দেখা গেছে ঐ থানা ভবন ঘুরে। খানসামা থানা ভবন ঘুরে দেখা যায়, ভবনের কলাম এবং বীমগুলো ভেঙে রড বের হয়ে গেছে, ছাদের ঢালাই ভেঙে রড ঝুলে পড়েছে। রডগুলোর সক্ষমতা এখন কমে গেছে। থানা ভবনের প্লাস্টার খসে ইট বের হয়ে গেছে, মাঝে মাঝে ছাদের প্লাস্টার এবং ঢালাই ভেঙে পড়ছে। এছাড়া দেয়ালজুড়ে বড় বড় ফাটল। পুলিশ বাহিনী যখন মানবিক পুলিশ হিসেবে জনগণের নিরাপত্তা প্রদানে সর্বদা কাজ করে যাচ্ছেন ঠিক তখনই জীবনের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ ও আতংকের মধ্যে থানা ভবনে কাজ করছে সেই পুলিশ বাহিনীই। প্রাকৃতিক কোন দূর্যোগে বড় ধরনের বিপর্যয় ঘটতে পারে এ থানায়। জানা যায়, খানসামা থানা সৃষ্টি করা হয় ১৮৯১ সালে এবং থানাকে উপজেলায় রূপান্তর করা হয় ১৯৮৩ সালে। ব্রিটিশ আমলে থানাগুলো নদী তীরবর্তী স্থানে হওয়ায় খানসামা থানা আত্রাই নদীর তৈরী উপজেলার গোবিন্দপুর নামক স্থানে এই থানা ভবন নির্মিত হয়েছে । স্থানীয়রা জানায়, ব্রিটিশ আমলে থানা ভবন নির্মাণ হওয়ার পরে সেটি অনুপযোগী হলে ৮০ দশকে পুনরায় ভবন নির্মাণ করা হয়। সেই ভবনে এখন পুলিশ সদস্যরা ঝুঁকিপূর্ণ ভাবে কাজ করে যাচ্ছে। খানসামা থানা পুলিশ সূত্রে জানা যায়, এই থানায় ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি), ইন্সপেক্টর (তদন্ত) উপ-পরিদর্শক (এসআই), সহকারী উপ-পরিদর্শকসহ (এএসআই) ও কনস্টেবল সহ প্রায় ৬০ জন  পুলিশ সদস্য থানা ভবনের নিচতলায় বসে কিংবা অবস্থান করে দায়িত্ব পালন করছেন। দ্বিতীয় তলার ব্যারাকে ৩০ জন পুলিশ সদস্য রাত্রিযাপন করেন। এছাড়া অস্ত্রাগার, হাজতখানা ও মালখানা আছে। সোমবার (১৯ ফেব্রুয়ারী) সকালে সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, খানসামায় মূল সড়কের পার্শ্বেই সীমান প্রাচীরে ঘেরা থানা ভবন। মূল গেট দিয়ে ভিতরে প্রবেশ করতেই চত্বরের পরিচ্ছন্নতা ও ফুল বাগানের সৌন্দর্য এবং ভবনের বাইরের অংশের নতুন রং দেখে ইতিবাচক মনে হবে। কিন্তু ভবনের ভিতরে ঢুকতেই ব্যতিক্রম চিত্র এর বাস্তব অবস্থা ঠিক ‘বাহিরে ফিটফাট আর ভেতরে সদরঘাট’। এই ভবনের খোদ ওসির কক্ষেই ফাটল। অন্যদিকে ইন্সপেক্টর (তদন্ত) রুম, সার্ভিস ডেস্ক, অপারেটর কক্ষ ও অফিসাররা যেসব কক্ষে বসে কাজ করছেন সেখানের রুমের অবস্থা আরো নাজুক। এছাড়াও মূল ভবনের পিছনে অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এর বাসভবন এবং মসজিদের পার্শ্বেই পুলিশ সদস্যদের টিনশেড ভবনও অনেক পুরাতন। সেগুলো সংস্কার করে ব্যবহার করা হচ্ছে। ইন্সপেক্টর (তদন্ত) মনিরুজ্জামান মন্ডল বলেন, সারাদিন মাঠে আইনশৃঙ্খলা রক্ষার কাজ করে থানায় এসে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় থাকি। এতে আমরা মানসিক ভাবে টেনশন থাকি কখন কি হয়? বড় দূর্ঘটনা এড়াতে নতুন ভবন প্রয়োজন।  ভবনের এই দুর্দশার চিত্র তুলে ধরে খানসামা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো: মোজাহারুল ইসলাম বলেন, থানা ভবনের বর্তমান নাজুক অবস্থা সম্পর্কে অবগত করে নতুন ভবন নির্মাণের জন্য ইতোমধ্যে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে জানানো হয়েছে। আশা করি দ্রুত সময়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এবিষয়ে সুদৃষ্টি দিবেন। উপজেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভাপতি ও ইউএনও মোঃ তাজ উদ্দিন বলেন, নতুন ভবনের নির্মাণের জন্য অর্থমন্ত্রী মহোদয়ের সুপারিশক্রমে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে লিখিতভাবে চিঠি পাঠানো হয়েছে। যেন নতুন ভবন নির্মাণের ফলে পুলিশ সদস্যরা নির্বিঘ্নে দায়িত্ব পালন করতে পারেন।

বিভাগ
শেয়ার করুন

মতামত লিখুন