আবাসিক হোটেলে স্ত্রী-সন্তানকে গলা কেটে হত্যা
মুক্তিনিউজ২৪ ডট কম ডেস্ক : বগুড়ার শাজাহানপুরের বনানী এলাকার একটি আবাসিক হোটেল থেকে আশামনি নামে এক গৃহবধূ ও তার ১১ মাস বয়সী ছেলে আব্দুল্লাহেল রাফীর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় জড়িত স্বামী আজিজুল হককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
রবিবার (২ জুন) বেলা ১১টায় উপজেলার বনানী এলাকার শুভেচ্ছা আবাসিক হোটেল থেকে মরদেহ দুটি উদ্ধার করা হয়।
আটক আজিজুল হক বগুড়ার ধুনট উপজেলার হেউটনগর গ্রামের হামিদুল হকের ছেলে। তার স্ত্রী আশামনি বগুড়া শহরের নারুলী তালপট্টি এলাকার আসাদুল ইসলামের মেয়ে।
শুভেচ্ছা আবাসিক হোটেলের ম্যানেজার রবিউল ইসলাম বলেন, শনিবার (১ জুন) রাত ৯টার দিকে আজিজুল নিজেকে মিরাজ এবং তার স্ত্রীকে তমা এবং তাদের বাড়ি রংপুরের পীরগঞ্জ পরিচয় দিয়ে হোটেলের ৩০১ নম্বর কক্ষ ভাড়া করেন।
তিনি বলেন, রবিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে আজিজুল হক রুমে ছেড়ে দেবে বলে ভাড়া পরিশোধ করতে চান। এ সময় আমি তার স্ত্রী-সন্তান কোথায় জানতে চাইলে তিনি বলেন, তারা সকালে চলে গেছে। এ সময় আমি রুম দেখে বুঝে নেওয়ার কথা বললে আজিজুল হক স্ত্রী-সন্তানকে হত্যার কথা স্বীকার করে। আমরা তাকে আটক করে থানায় খবর দেই।
নিহত আশামনির বাবা আসাদুল বলেন, তিন বছর আগে আজিজুল হকের সঙ্গে আশামনির বিয়ে দেই। নাতি হওয়ার আগে থেকেই মেয়ে আমার বাড়িতে থাকে। জামাই দুমাসের ছুটিতে বাড়ি আসে। রোববার তার কর্মস্থলে চলে যাওয়ার কথা ছিল। বৃহস্পতিবার (৩০ মে) জামাই আজিজুল নারুলীতে আমার বাড়ি আসে। এখানে দুদিন থাকার পর শনিবার বিকেলে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে শহরে শপিং করার জন্য বের হয়। রাত ১০টার দিকে আজিজুল হক ফোন করে আমাকে জানায়, আমার মেয়ে ও নাতিকে রিকশায় তুলে দিয়েছে। কিছুক্ষণ পর থেকে আশামনির ফোন বন্ধ পাচ্ছে।
তিনি বলেন, রোববার সকাল থেকে মেয়ের সন্ধান চেয়ে শহরে মাইকিং করি। এরপর সদর থানায় জিডি করতে গেলে বনানীতে হোটেলে মেয়ের নাতির লাশ উদ্ধারের খবর পাই।
শাহজাহানপুর থানার ওসি শহিদুল ইসলাম কালবেলাকে বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, সকাল ১১টায় থানায় ফোন দিয়ে হোটেল কর্তৃপক্ষ মরদেহ পড়ে থাকার বিষয়টি জানায়। তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে আমিসহ অন্যরা পৌঁছাই। তবে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, শনিবার (১ জুন) রাতের কোনো একসময় মা ও তার বাচ্চাটিকে হত্যা করা হয়েছে।
বগুড়া সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এএসপি) সরাফত ইসলাম বলেন, রাতে যে কোনো সময় আজিজুল তার স্ত্রী ও সন্তানকে গলা কেটে হত্যার পর লাশ বস্তাবন্দি করে কক্ষের বাথরুমে রাখে এবং ছেলের মাথা বিচ্ছিন্ন করে সকালে করতোয়া নদীতে ফেলে দেয়। পুলিশের একটি দল মাথা উদ্ধারের জন্য আজিজুলকে সঙ্গে নিয়ে নদীতে তল্লাশি শুরু করেছে। কক্ষ থেকে হত্যার কাজে ব্যবহৃত একটি রামদা এবং একটি চাকু উদ্ধার করা হয়েছে।
ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে বগুড়ার পুলিশ সুপার সুদীপ কুমার চক্রবর্তী কালবেলাকে বলেন, পারিপার্শ্বিক অবস্থা দেখে মনে হচ্ছে আজিজুল হক পূর্বপরিকল্পিতভাবে তার স্ত্রী-সন্তানকে হত্যা করে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আজিজুল হক বলেছেন দাম্পত্য কলহের কারণে তিনি স্ত্রী-সন্তানকে হত্যা করেছেন। এ ঘটনায় আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।