নতুন অংশীদারের ইঙ্গিত, যে সমীকরণে সরকারে আসতে পারে কংগ্রেস
মুক্তিনিউজ২৪ ডট কম ডেস্ক : প্রাথমিকভাবে পিছিয়ে থাকলেও এখনই সরকার গঠনের আশা ছাড়ছে না কংগ্রেসের নেতৃত্বাধীন ইন্ডিয়া জোট। সেক্ষেত্রে জোটে নতুন অংশীদার যোগ হতে পারে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির খবর অনুসারে, কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী ও মল্লিকার্জুন খারগে বলেছেন, তেলেগু দেশম পার্টি (টিডিপি) এবং জনতা দল ইউনাইটেডের (জেডিইউ) সঙ্গে যোগাযোগের আহ্বান জানানো হয়েছে। আগামীকাল জোটের বৈঠকে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
১৯ এপ্রিল থেকে সাত দফায় ভোটগ্রহণ শেষে মঙ্গলবার (৪ জুন) সকাল থেকে আসছে ভারতের লোকসভা নির্বাচনের ফলাফল। সবশেষ তথ্য অনুযায়ী বিজেপির নেতৃত্বাধীন এনডিএ জোট এগিয়ে থাকলেও সরকার গঠনের কিছুটা আশা রয়েছে ইন্ডিয়া জোটের (কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন)। তবে এজন্য বেশ হিসাব কষতে হবে তাদের।
ভারতীয় সংবিধান মতে— সরকার গঠনের জন্য কোনো দল বা জোটকে অন্তত ২৭২টি আসন পেতে হবে।
কিন্তু সেই দৌড়ে অনেকটাই পিছিয়ে রয়েছে ইন্ডিয়া জোট। তবুও কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন জোটটি ইতোমধ্যে হিসাব কষা শুরু করে দিয়েছে। তারই অংশ হিসেবে জেডিইউ এবং টিডিপিকে পাশে চায় তারা। যদিও ফলাফল বলছে— সরকার গঠনের দৌড়ে অনেকটাই এগিয়ে রয়েছে এনডিএ। সবশেষ তথ্যমতে, ৫৪৩টি আসনের মধ্যে এখন পর্যন্ত ১৬৬ আসনে এগিয়ে রয়েছে এনডিএ।
এদিকে সরকার গঠনের প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়া ইন্ডিয়া জোটও পিছিয়ে নেই। এখন পর্যন্ত ইন্ডিয়া জোট পেয়েছে ১০০টি আসন। বাকি ১২টির মতো আসন পেয়েছে অন্যরা। সেই হিসাবে ক্ষমতাসীন বিজেপির নেতৃত্বাধীন এনডিএ জোটের চেয়ে ৫০টির মতো আসনে পিছিয়ে রয়েছে তারা। এমন পরিস্থিতিতে এনডিএ জোটের ভেতরে-বাইরের বেশ কয়েক নেতার সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করেছে কংগ্রেস।
এরমধ্যে এনডিএ জোটের শরিকদের প্রধান অন্ধ্র প্রদেশে চন্দ্রবাবু নাইডুর তেলেগু দেশম, যারা এখন পর্যন্ত এগিয়ে রয়েছে ১৬ আসনে এবং বিহারে মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারের জনতা দল-ইউনাইটেড (জেডি–ইউ)। নীতীশ কুমার এখন পর্যন্ত এগিয়ে রয়েছেন ১৪ আসনে। তাদের উভয়ের সঙ্গে কংগ্রেস যোগাযোগ করেছে।
হিন্দুস্তান টাইমসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এনডিএ জোটের শরিক অন্ধ্র প্রদেশের তেলেগু দেশম পার্টির (টিডিপি) প্রধান চন্দ্রবাবু নাইডু এবং বিহারের জনতা দল ইউনাইটেডের (জেডি-ইউ) প্রধান নীতীশ কুমারের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন কংগ্রেস প্রধান মল্লিকার্জুন খাগড়ে। এছাড়া ওডিশার নবীন পাটনায়েকের বিজু জনতা দল (বিজেডি) এবং বিহারের লোক জনশক্তি পার্টির (রাম বিলাস) সঙ্গেও কথা হয়েছে তার।
কংগ্রেস নেতাদের আশা— মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী একনাথ শিন্ডেকেও ইন্ডিয়া জোটে যোগ দেওয়ার বিষয়ে রাজি করাতে পারবেন তারা। শিন্ডের নেতৃত্বাধীন শিবসেনা রাজ্যটিতে ১০ আসনে এগিয়ে রয়েছে। শিবসেনার আরেক অংশের নেতা উদ্ভব ঠাকরের সঙ্গেও তাদের কথা হয়েছে।
ফলাফল বলছে— এবারের নির্বাচনে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাচ্ছে না বিজেপি। এতে কিছুটা সুযোগ এসেছে ইন্ডিয়া জোটের হাতে। তবে সরকার গঠন করতে হলে আরও কিছু কাঠখড় পোড়াতে হবে তাদের। বিজেপির নেতৃত্বাধীন এনডিএ জোট ভেঙে ইন্ডিয়ায় ভেড়াতে হবে জেডিইউ এবং টিডিপিকে। এই দুই দল ইন্ডিয়া জোটের সঙ্গে এলে, আরও অন্তত ৩০টি আসন যুক্ত হবে ইন্ডিয়া জোটে।
এর বাইরে অন্য দলগুলোকেও ভেড়াতে হবে নিজেদের তরীতে। এরমধ্যে রয়েছে নবীন পট্টনায়কের বিজেডি, শিরোমণি অকালি দল, এআইমিম, সিকিম ক্রান্তিকারী মোর্চাদের মতো ছোট দল এবং নির্দলরা। বিশ্লেষকদের মতে— এদেরকে নিজেদের দিকে টানতে পারলেই; সরকার গঠন করা সম্ভব ইন্ডিয়া জোটের পক্ষে।
যদিও জোটের নেতা শরদ পওয়ার ইতোমধ্যে বিজেডি নেতা নবীন পট্টনায়ক, টিডিপি প্রধান চন্দ্রবাবু নাইডু এবং জেডিইউ প্রধান নীতীশ কুমারের সঙ্গে আলোচনা সেরে নিয়েছেন। পবন খেড়া বলেছেন, জোট এনডিএ শরিকদের সঙ্গেও যোগাযোগ করছে। তিনি বলেছেন, ‘সরকার গঠন করার বিষয়ে আমরা আত্মবিশ্বাসী।’
তবে এখন পর্যন্ত বিজেপির সঙ্গ ছাড়ার ইঙ্গিত মেলেনি টিডিপি বা জেডিইউয়ের কাছ থেকে। নীতিশ কুমার তো বলেই দিয়েছেন— তিনি এনডিএ জোটেই থাকবেন।