দুর্নীতি মামলায় নড়াইল পৌরসভার সাবেক চেয়ারম্যান আ’লীগ নেতার ৭ বছরের সাজা বহাল, ৫ কমিশনারেরও একই মেয়াদে সাজা, কারাগারে প্রেরণ
ফরহাদ খান, নড়াইল
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মামলায় নড়াইল পৌরসভার সাবেক চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য অ্যাডভোকেট সোহরাব হোসেন বিশ্বাসের সাত বছরের সাজা বহাল রেখেছেন আদালত। এছাড়া পৌরসভার সাবেক পাঁচ কমিশনারেরও একই মেয়াদে (সাত বছর) সাজা বহাল রয়েছে। বৃহস্পতিবার (২২ আগস্ট) দুপুরে যশোরের স্পেশাল জজ আদালতের বিচারক মোহাম্মাদ শামসুল হকের আদালতে হাজির হলে তাদের সাজা মওকুফের আবেদন (লিভ টু আপিল) বাতিল করা হয়। নড়াইল পৌরসভার সাবেক চেয়ারম্যান সোহরাব বিশ্বাসসহ অন্যদের কারাগারে পাঠানো হয়েছে। সোহরাব নড়াইল জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যানও।
মামলার অন্য দন্ডপ্রাপ্তরা হলেন-নড়াইল পৌরসভার তৎকালীন কমিশনার সৈয়দ মুশফিকুর রহমান বাচ্চু, আহম্মদ আলী খান, রফিকুল ইসলাম, মোহাম্মদ তেলায়েত হোসেন ও শরফুল আলম লিটু। এ মামলায় নড়াইল পৌরসভার সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর বিশ্বাস মারা যাওয়ায় মামলা থেকে অব্যহতি পেয়েছেন।
মামলার বিবরণে জানা যায়, ২০০৯ সালে নড়াইল পৌরসভার রূপগঞ্জ পশুরহাটের হাট-বাজার ইজারা নীতিমালার শর্ত ভঙ্গ করে বাংলা ১৪১১, ১৪১২ ও ১৪১৩ সনের ইজারা মূল্য এক লাখ ৯৬ হাজার ৬৬৫ টাকা আত্মসাত করেন আসামিরা। এ ঘটনায় দুদক সমন্বিত যশোরের সহকারী পরিচালক ওয়াজেদ আলী গাজী বাদী হয়ে ২০০৯ সালের ৭ আগস্ট নড়াইল পৌরসভার ওই সাতজন জনপ্রতিনিধি এবং একজন কর্মচারীর বিরুদ্ধে নড়াইল সদর থানায় মামলা করেন। এ মামলায় ২০১৭ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর বিজ্ঞ স্পেশাল জজ আদালত দন্ডবিধি ৪০৯, ১০৯ এবং ১৯৪৭ সালের ২নম্বর দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫ (২) ধারায় সাতজনকে শাস্তি প্রদান করেন। দন্ডবিধি ৪০৯ ধারায় প্রত্যেককে তিন বছর এবং ৫ (২) ধারায় চার বছর করে শাস্তি প্রদান করেন আদালত। এছাড়া প্রত্যেককে এক লাখ ৯৬ হাজার টাকার জরিমানা করেন।
এ মামলায় পৌরসভার সাবেক অফিস সহকারী মতিউর রহমান মৃত্যুবরণ করায় রায় ঘোষণার সময় তার নাম বাদ দেয়া হয়। এরপর ২০২০ সালের ২৫ নভেম্বর ডেঙ্গুজ্বরে মারা যান সাবেক মেয়র জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্মসাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর বিশ্বাসও।
যশোর জেলা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিটর অ্যাডভোকেট সিরাজুল ইসলাম বলেন, উচ্চ আদালতে করা লিভ টু আপিলে আসামীদের নিন্ম আদালতে হাজিরা দেবার আদেশ দেয়া হয়েছিল। আদালত তাদের লিভ টু আপিল খারিজ করে সাজা বহাল রাখেন। এই মামলায় নিন্ম আদালতের জামিন দেয়ার এখতিয়ার নেই। তারা পরবর্তীতে উচ্চ আদালতে সাজার বিরুদ্ধে লিভ টু আপিল করতে পারবেন।