জেলা সংষ্কারে গণমাধ্যম কর্মীদের সাথে এডভোকেট এবিএম জাকারিয়ার মতবিনিময়
নোয়াখালি প্রতিনিধিঃ বাংলাদেশের প্রচীন ইতিহাস ঐহিত্যবাহী জেলা হিসেবে নোয়াখালী অন্যতম। রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক, প্রবাসী রেমিট্যান্স নোয়াখালীর সন্তানেরা প্রতিনিয়ত অবদান রেখে চলেছেন। তাই নিজ জেলার ইতিহাস বিশ্বের নিকট তুলে ধরতে ও সংষ্কারে জেলার সকল গণমাধ্যম কর্মীদের সাথে মতবিনিময় সভা করেন বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য ও জেলা বাবের ৭ বারের নির্বাচিত সভাপতি এডভোকেট এবিএম জাকারিয়া। এছাড়াও তিনি বর্তমানে সু্বর্ণচর উপজেলা বিএনপির সভাপতি হিসেবে দায়িত্বে রয়েছেন। তিনি গণমাধ্যমকে জানান, জেলা জামে মসজিদের চারপাশে অবৈধ দখলের জন্যে দূর হতে দৃষ্টিনন্দন মসজিদটি এখন আর দেখা যায় না।
দেখেছেন নিশ্চয় আপনারা কোর্ট বিল্ডিং ও পৌর পার্কের চারশাশে অবৈধ দোকানপাট, পাবলিক লাইব্রেরী নিচে না করে উপরের ভবনে স্থাপন করা হয়েছে কাদের অসৎ উদ্দেশ্যে আপনারা এসব অনিয়ম গুলো জাতীর সামনে তুলে ধরবেন আশা করি। ফ্যাসিস্ট হাসিনার আমলে তার দলের লোকজন লুঠেপুটে খেয়েছে। ৫ আগস্টের পর আবার কারা এসব নিয়ন্ত্রণ করছেন আপনারা তা তুলে ধরুন এবং জেলা সংষ্কারে সহায়তা করবেন বলে বিশ্বাস রাখি।
শনিবার (২৩ নভেম্বর) রাতে মাইজদীর একটি রেস্টুরেন্টে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় এ অভিপ্রায় ব্যক্ত করেন জাকারিয়া।
সাংবাদকর্মী সুমন ভৌমিকের এক প্রশ্নের উত্তরে
এবিএম জাকারিয়া বলেন, আমি দীর্ঘদিন বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। দল যদি মনে করে এবং তারুণ্যের প্রতীক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান যদি চান আমি নোয়াখালী-৪ (সদর-সুবর্ণচর) আসনে দলের দায়িত্ব নিতে প্রস্তুত আছি।
তিনি আরও বলেন, ৫ আগস্টের পর বিএনপির একটি পক্ষ চাঁদাবাজি, দখল, লুটতরাজ করেছে এটি সত্য। এরমধ্যে এসব অভিযোগে কয়েকজনকে দল থেকে বহিষ্কারও করা হয়েছে। প্রত্যেক বহিষ্কার দলের চেয়ারম্যান ও দায়িত্বশীল নেতারা খোঁজ নিয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। আরও খোঁজ নিয়ে এ ধরনের অপরাধীদের লাগাম টেনে ধরা দরকার।
স্থানীয় বিএনপিতে বিভাজন রয়েছে কি না জানতে চাইলে বিএনপির কেন্দ্রীয় এ নেতা বলেন, দলে বিভাজন নেই, তবে নেতৃত্বের প্রতিযোগিতা আছে। আমরা সবাই শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের আদর্শে, সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার অনুপ্রেরণায় ও তারুণ্যের অহংকার তারেক রহমানের নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ। তিনি যখন যাকে যেখানে কাজে লাগাবেন আমরা দায়িত্ব পালনে প্রস্তুত আছি।
অ্যাডভোকেট জাকারিয়া বলেন, নোয়াখালী-৪ (সদর-সূবর্ণচর) আসন বিএনপির ঘাঁটি। তবে এখানে বিগত দেড়যুগ ভিন্ন মতের রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে আমাদের কিছু নেতার যোগসাজশে দলের দুর্বলতা প্রকাশ পেয়েছে। এখন আমরা সেই দুর্বলতা কাটিয়ে দলকে শক্তিশালী অবস্থানে নিয়ে যাবো ইনশাআল্লাহ। সেই ক্ষেত্রে আগামীতে দল যাকে মনোনয়ন দেবে আমরা সবাই তার হয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করবো।
জেলা বিএনপির কর্মকাণ্ড নিয়ে জাকারিয়া বলেন, বিগত ৯ বছর জেলা বিএনপি দলের জন্য আশানুরূপ কোনো কাজ করতে পারেননি। দলের মধ্যে প্রত্যেক উপজেলায় বিভাজন। নিজেদের পছন্দের ব্যক্তিকে সমর্থন জোগালেও কিছু ব্যক্তিকে কোণঠাসা করে রেখেছেন। ১৫ বছর আগে যিনি ছাত্রদল করতেন এখন তার বয়স ৩৫। এ ধরনের নেতাদের বিএনপিতে সুযোগ দেওয়া উচিত।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবদুর রহমান বলেন, বিএনপির সুদিনে কিছু অতিথি পাখি বের হয়েছে। এরা দুর্দিনে কাছে ছিল না। জাকারিয়াকে ২০২২ সালে সম্মেলন করে সূবর্ণচর উপজেলা বিএনপির সভাপতি ঘোষণা করেছি। জেলা বিএনপিতে উনার কোনো অবদান নাই। কিছু ব্যক্তির প্ররোচনায় তিনি জেলা বিএনপির বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন।
অন্যদিকে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মো. শাহজাহানকে কল দিলে রহমত নামে একজন ফোন ধরে জাগো নিউজকে বলেন, তিনি অসুস্থ পরে কথা বলবেন। এরপর অনেকবার কল দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।
মতবিনিময় সভায় জেলা বিএনপির উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট কাজী কবির, জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক শহিদুল ইসলাম কিরন, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান মিজান, জেলা মৎস্যজীবী দলের আহ্বায়ক ভিপি আলা উদ্দিন ( আলা), সুবর্ণচর উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট সারোয়ার উদ্দিন দিদার, জেলা বিএনপির অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের শতাধিক নেতা কর্মী ও সমর্থক উপস্থিত ছিলেন।