বৃহস্পতিবার, ৫ই ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ -muktinews24(তথ্য মন্ত্রনালয় কর্তৃক নিবন্ধনকৃত, রেজি নং-৩৬)

সোনা চোরাচালান চক্রের হোতা সৈয়দপুরের জাবেদ গ্রেফতার শহর জুড়ে তোলপাড়

সোনা চোরাচালান চক্রের হোতা সৈয়দপুরের জাবেদ গ্রেফতার শহর জুড়ে তোলপাড়

সৈয়দপুর (নীলফামারী) প্রতিনিধি: গোয়েন্দা পুলিশের হাতে গ্রেফতারের মাধ্যমে দেশের সোনা চোরাচালান চক্রের মূলহোতা নীলফামারীর সৈয়দপুর শহরের জাবেদ আকতারের গোপন তথ্য ফাঁস হয়ে পড়েছে। সাংবাদিক পরিচয়ের আড়ালে জাবেদ যে, এতবড় অপরাধের সাথে জড়িত তা জানতে পেরে শহর জুড়ে তোলপাড় শুর” হয়েছে।
জাবেদ সাংবাদিক পরিচয়ে তদবির বাণিজ্য করতো। থানা-পুলিশ ও স্থানীয় কতিপয় ব্যবসায়ীর কাছের মানুষ হিসেবে আলাদা গুর”ত্ব পেয়ে আসছে। এর আড়ালে তিনি যে সোনা চোরাচালান চক্রের মূলহোতা এবং তার সাথে সৈয়দপুরের বেশ কয়েকজন লাগেজ পার্টি হিসেবে সম্পৃক্ত বলে গুঞ্জন থাকলেও তা প্রমাণের অভাবে এতদিন সরাসরি প্রকাশ হয়নি।
সম্প্রতি ৬ কোটি টাকার সোনাসহ শাহজালাল বিমানবন্দরে আটক এক ব্যক্তির স্বীকারোক্তিতে বেরিয়ে আসে এ হোতার আসল পরিচয়। এঘটনায়কৃত মামলার প্রেেিত গত শনিবার (৩০ নভেম্বর) রাতে ঢাকার ডিবি পুলিশ এসে সৈয়দপুর থেকে তাকে আটক করে নিয়ে গেছে।
শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থানার একজন সাব-ইন্সপেক্টরের (তদন্তকারী কর্মকর্তা) গত ২৭ নভেম্বর তারিখে সিএমএম আদালতে দাখিলকৃত রিমান্ড আবেদন সূত্রে জানা যায়, সৈয়দপুরের ধলাগাছ এলাকার জিয়াউল ইসলাম (৫৮) সিঙ্গাপুরে চিকিৎসা শেষে দেশে ফেরার পথে গত ১৩ আগস্ট রাত সাড়ে ১০টায় বিমানবন্দর পুলিশের হাতে আটক হন। তল্লাশিকালে তার ব্যাগে অবৈধভাবে নিয়ে আসা ১২টি স্বর্ণবার পাওয়া যায়। যার ওজন ৫ কেজি ৯শ’ ৮০ গ্রাম। যার বাজারমূল্য প্রায় ৬ কোটি টাকা। ধৃত জিয়াউলকে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠায় পুলিশ।
গত ২৭ নভেম্বর জিয়াউলকে রিমান্ডে নিলে তিনি ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দেন। তাতে বেরিয়ে আসে স্বর্ণচোরাচালানের আসল রহস্য। স্বীকারোক্তিতে তিনি জানান, স্বর্ণ চোরাচালানের মূলহোতা সৈয়দপুর শহরের নতুন বাবুপাড়ার বাসিন্দা মো. জামিল আক্তারের ছেলে মো. জাবেদ আকতার। শহরের কতিপয় ব্যবসায়ী ও সৈয়দপুর থানা পুলিশ তাকে সাংবাদিক হিসেবে চিনেন। পাসপোর্টে তার ঠিকানা নতুন বাবুপাড়া উল্লেখ করা হলেও তিনি শহরের ইসলামবাগ সের” হোটেল এলাকায় শ্বশুড়বাড়িতে বসবাস করতেন।
একটি সূত্র জানায়, সোনা চোরাচালান কারবারি জাবেদ আকতার মূলহোতা হলেও এ সিন্ডিকেটের সাথে বিচালীহাটি রোডের একজন গালামাল ব্যবসায়ী, শহীদ ডা. জিকর”ল হক রোডের একজন স্টিল আসবাবপত্র ব্যবসায়ী ও শাহ হোটেলের মালিকপরে কেউ জড়িত থাকতে পারেন। কারণ জাবেদ আকতারের সাথে ছিল তাদের দহরম মহরম। সবসময়ই তাদের সাথেই ওঠাবসা করতো।
ঢাকায় আটক জিয়াউল হকের ধলাগাছ বাসায় গেলে তার ছেলে জাহিদ হোসেন বলেন, আমার বাবার মের”দন্ডের হাড়ের সমস্যা ছিল। জাবেদ আকতার আমার বাবাকে সিঙ্গাপুরে চিকিৎসার প্রলোভন দিয়ে পাসপোর্ট ও ভিসা করে দেয়। আমাদের না জানিয়েই আমার বাবাকে তিনি সিঙ্গাপুরে পাঠান। পাসপোর্টে আমার বাবার মোবাইল নম্বরের পরিবর্তে কৌশলে জাবেদ আকতারের মোবাইল নম্বর উল্লেখ করা হয়েছে। যা আমি বিমানবন্দর থানায় গেলে জানতে পারি। তিনি আরও বলেন, আমার বাবা একজন সহজ-সরল মানুষ। তিনি বৃদ্ধ ও অসুস্থ। জাবেদ আকতার আমার বাবাকে ফাঁসিয়েছে।
একটি সূত্র জানায়, পাসপোর্ট তৈরিতে সহায়তাকারী শহীদ ডা. জিকর”ল হক রোডের একজন স্টিল আসবাবপত্র ব্যবসায়ীর সাথে জাবেদ আকতারের বেশ সখ্যতা। লেখালেখির যাবতীয় কাজ ওই ব্যক্তির মাধ্যমেই করতো জাবেদ। জিয়াউল হকের পাসপোর্টে তার মোবাইল ফোনের স্থলে অন্য ব্যক্তির তথা জাবেদের মোবাইল নম্বর বসানোর কাজটি ওই ব্যক্তি করে দিয়ে থাকতে পারেন বলে দাবী করে সূত্রটি।
তাছাড়া দেড়মাস আগে বিচালীহাটির গালামাল ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মালিকের সাথে তার এক কর্মচারীর আর্থিক জটিলতা দেখা দিলে তিনি জাবেদ আকতারকে খবর দেন। জাবেদ আকতার নিজেকে ডিবি পুলিশের পরিচয় দিয়ে ভয় দেখিয়ে ওই কর্মচারীকে এই ব্যবসায়ীর চেম্বারে এনে ১৫ লাখ টাকা উল্লেখ করে তিনশত টাকার নন-জুডিসিয়াল স্ট্যাম্পে সই-স্বার নিয়ে দেন। আর ওই স্ট্যাম্পের ড্রাফট করে দেন স্টিল আসবাবপত্র ব্যবসায়ী।
জাবেদ আকতারের সাথে শহরের শাহ হোটেল কর্তৃপরেও বেশ সখ্যতা রয়েছে। হোটেল ব্যবসা শুর”র দিকে তিনি হোটেলের যাবতীয় কেনাকাটায় সহায়তা করতেন এবং ক্যাশ টেবিলেও বসতেন বলে একাধিক সূত্রে জানা গেছে।
ইসলামবাগ সের” হোটেল এলাকার মতিয়ার রহমান নামে এক ব্যক্তি জানান, জাবেদ আকতারের নির্দিষ্ট কোন পেশা ছিল না। কখনো তিনি স্ক্রীণপ্রিন্টের মালামাল ব্যবসায়ী কখনো বা নিজেকে সাংবাদিক পরিচয় দিতেন। কিছুদিন আগে তার মা হাসিনা খাতুন, স্ত্রী মোছা. আরজু ও শ্বাশুড়ি শামিমা খাতুন সিঙ্গাপুর বেড়াতে গিয়েছিলেন। মূলতঃ জাবেদ আকতার এদের মাধ্যমে সিঙ্গাপুর থেকে অবৈধভাবে স্বর্ণ আনিয়েছেন।
জাবেদ আকতার স্বর্ণ চোরাচালান সিন্ডিকেটের মূলহোতা এটা এতোদিনে কেউ আঁচ করতে পারেনি কিন্তু একজন সরল সোজা অসুস্থ ব্যক্তিকে দিয়ে স্বর্ণ আনাতে গিয়ে সবকিছু ফাঁস হয়ে গেল।
জিয়াউল ইসলামের স্বীকারোক্তির স

বিভাগ
শেয়ার করুন

মতামত লিখুন