বুধবার, ২২শে জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ -muktinews24(তথ্য মন্ত্রনালয় কর্তৃক নিবন্ধনকৃত, রেজি নং-৩৬)

সদ্য সংবাদ:

রাজারহাটে আদম ব্যবসায়ীর খপ্পরে সর্বশান্ত সোহেলের পরিবার,থানায় মামলা গ্রেফতার এক প্রতারক

রাজারহাটে আদম ব্যবসায়ীর খপ্পরে সর্বশান্ত সোহেলের পরিবার,থানায় মামলা গ্রেফতার এক প্রতারক
 কুড়িগ্রাম প্রতিনিধিঃ আদম ব্যবসায়ীদের প্রতারণার শিকার হয়ে নিঃস্ব হয়েছেন কুড়িগ্রাম জেলার রাজারহাট উপজেলার ফুলবাড়ি উপেনচৌকি এলাকার সোহেল রানা (২৪) নামের এক যুবক। ৪ লাখ টাকার চুক্তিতে লিবিয়া গিয়ে প্রতারণার শিকার হন তিনি। এ বিষয়ে গত ৬ জানুয়ারি প্রতারণার শিকার সোহেল রানা কুড়িগ্রামের রাজারহাট থানায় লিবিয়া প্রবাসী সুমন মিয়াকে প্রধান আসামী করে মোট ৪ জনের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেন, মামলা নং ০৩। মামলা আমলে নিয়ে অভিযান চালিয়ে শাহাজাহান মিয়া (৩২) নামের একজনকে গ্রেফতার করেছে রাজারহাট থানার পুলিশ।
প্রতারণার শিকার সোহেল রানা কুড়িগ্রাম জেলার রাজারহাট উপজেলার ফুলবাড়ি উপনচৌকি এলাকার মৃত আব্দুল খালেক এর ছেলে।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, আদম ব্যবসায়ীদের কোন প্রকার অনুমোদন না থাকার পরও বিদেশে লোক পাঠিয়ে তারা দীর্ঘদিন থেকে এলাকায় প্রতারণা করে আসছেন চার যুবক। তারা  হলেন, কুড়িগ্রাম জেলার রাজারহাট উপজেলার ফুলবাড়ি উপনচৌকি গ্রামের মৃত মজিবর রহমানের তিন ছেলে মোঃ শফিউর রহমান (৩৮) ও মোঃ সুমন মিয়া (২৮),শাহাজাহান মিয়া (৩২) অপর আসামি হলেন  উপজেলার হাড়ি ডাঙ্গা গ্রামের  আহম্মদ আলীর ছেলে মোঃ দুলাল মিয়া (৪৬)।
ভুক্তভোগি সোহেল রানা ও এলাকাবাসীর দাবী গত কয়েক বছরে তাদের প্রতারণার শিকার হয়ে সর্বস্ব হারিয়েছেন কয়েকটি পরিবার
প্রতারণার শিকার সোহেল রানা জানান, প্রবাসী অভিযুক্ত সুমন মিয়া লিবিয়া থেকে তার নিকটাত্মীয় ও ভাইদের মাধ্যমে মানুষকে বিদেশে যেতে উদ্বুদ্ধ করে। অল্প খরচে ভালো মানের কাজের সুযোগ করে দেওয়ার লোভের ফাঁদে  পড়েন তিনি। সোহেলকে লিবিয়ায় ভালো বেতনের চাকরি দেবার শর্তে  ৪ লাখ টাকায় চুক্তিবদ্ধ হয়। চুক্তি অনুযায়ী দুলাল মিয়া ও সুমনের ভাইদেরকে ডেকে পরিবারের মাধ্যমে তাদের হাতে তুলে দেন নগদ ৪ লাখ টাকা। ভিসা হাতে পাবার পর সোহেল বুঝতে পারলো এটা ছিল এক মাসের ভ্রমণ ভিসা। কাজের ভিসার বদলে ভ্রমণ ভিসার বিষয়টি নিয়ে তাদের সাথে কথা বললে তারা লিবিয়ায় পৌঁছার ভিসা পরিবর্তন করে দেবার প্রতিশ্রুতি দেয়। সরল বিশ্বাসে তাদের কথা মতো লিবিয়ায় পৌঁছার পর সোহেলের পৃথিবী অন্ধকার হয়ে আসে। কর্মসংস্থান না পেয়ে বিপাকে পড়েন  এবং সুমন মিয়ার সাথে যোগাযোগ করলে তিনি চাকরি নিয়ে দেবার কথা  বলে অজ্ঞাত একটি ঘরে নিয়ে গিয়ে বিভিন্ন প্রকার নির্যাতন শুরু করে। পরবর্তীতে সোহেলকে  ইতালিতে নিয়ে গিয়ে কাজের ব্যবস্থা করে দেবার আশ্বাস দেয়। তাতে আবার জুড়ে দেয় নতুন শর্ত। দিতে হবে শফিউর রহমানের দুটি ব্যাংক একাউন্টে ১৫ লাখ টাকা। পরে ভুক্তভোগীর পরিবার নিরুপায় হয়ে তাকে ১৫ লাখ টাকা প্রদান করে। প্রতারক চক্রটি এ নিয়ে মোট ১৯ লাখ টাকা গ্রহণ করেন সোহেলকে জিম্মি করে। তারপরেও কাজের ব্যবস্থা করে না দিলে সোহেলের পরিবারের লোকজন চক্রটির সাথে যোগাযোগ করে সোহেলকে দেশে আনার জন্য অনুরোধ করে। পরিবারের আকুতি মিনতির এক পর্যায়ে  প্রতারক চক্র পরিবারের নিকট ৩ শত টাকার ননজুডিশিয়াল ফাঁকা স্ট্যাম্পে সাক্ষর নেয়। এরপর প্রাণে বেঁচে দেশের মাটিতে  অতি কষ্টে ফিরে আসে সোহেল।
সোহেল রানা জানান, আমি বাড়ি আসার পর রাজারহাট বাজারে মোঃ শফিউর রহমান ও  মোঃ শাহাজাহান মিয়ার সাথে দেখা করে টাকা ফেরত চাইলে তারা টাকা ফেরত দিবে না বলে বিভিন্ন হুমকি প্রদান করে আমাকে চড়-থাপ্পর ও কিল ঘুষি মারে। তিনি উক্ত ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবি করে বলেন, প্রতারণার শিকার হয়ে আজ আমি নিঃস্ব। আমি অভিযুক্তদের বিচার ও টাকা ফেরত চাই।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত আদম ব্যবসায়ীদের সাথে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও ব্যর্থ হয় এ প্রতিবেদক।
এ বিষয়ে রাজারহাট থানার অফিসার ইনচার্জ আশরাফুল ইসলাম বলেন, অভিযোগটি আমলে নিয়ে ইতিমধ্যে একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকি আসামিদেরকে গ্রেফতার অভিযান অব্যাহত আছে।
বিভাগ
শেয়ার করুন

মতামত লিখুন