লালমনিরহাটে কৃষি প্রযুক্তি ও পুষ্টি মেলা অনুষ্ঠিত


লালমনিরহাট প্রতিনিধিঃ ‘কৃষি উন্নয়নের মাধ্যমে পুষ্টি ও খাদ্য নিরাপত্তা জোরদারকরণ’ প্রকল্পের আওতায় লালমনিরহাটে অনুষ্ঠিত হয়েছে। কৃষি প্রযুক্তি ও পুষ্টি মেলা-২০২৫ । সোমবার ২৬ মে সকাল ১০টায় লালমনিরহাট জেলা শহরের খামারবাড়ি চত্বরে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের আয়োজনে দিনব্যাপী এ মেলার উদ্বোধন করেন লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক এইচ এম রকিব হায়দার।
উদ্বোধনী বক্তব্যে তিনি বলেন, “বাংলাদেশের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কৃষকের অবদান অনস্বীকার্য। আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার। নিরাপদ খাদ্য উৎপাদন ও পুষ্টিমান সমৃদ্ধ ফসল চাষ এখন সময়ের দাবি। কৃষককে প্রযুক্তিগত সহায়তা এবং বাজারজাতকরণে সহযোগিতা করতে পারলে। কৃষি হবে দেশের অন্যতম প্রধান চালিকাশক্তি।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন লালমনিরহাট জেলা পুলিশ সুপার মোঃ তরিকুল ইসলাম। তিনি বলেন, বর্তমান সরকার কৃষিকে আধুনিক। টেকসই ও বাণিজ্যিক খাতে রূপান্তরে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। কৃষকের জন্য সহজ শর্তে প্রযুক্তি ও প্রশিক্ষণ নিশ্চিত করা গেলে উৎপাদন ব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তন আনা হওয়া সম্ভব।
স্বাগত বক্তব্যে কৃষিবিদ মো. শাহ আলম মিয়া বলেন, “দেশে খাদ্য উৎপাদনে সাফল্য এলেও পুষ্টির ঘাটতি এখনো বড় চ্যালেঞ্জ। পুষ্টিকর ও জিঙ্কসমৃদ্ধ ধান,কমলা রঙের মিষ্টি আলু, উচ্চফলনশীল ও ভিটামিনসমৃদ্ধ সবজি চাষে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করতে হবে। পাশাপাশি নিরাপদ ফসল উৎপাদনে জৈব সার ও পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তির ব্যবহারে সচেতনতা জরুরি।
মেলায় সভাপতিত্ব করেন, লালমনিরহাট জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. মো. সাইখুল আরিফিন। তিনি বলেন, ওই মেলার মাধ্যমে কৃষকরা সরাসরি আধুনিক কৃষি প্রযুক্তি, উন্নত জাত, জৈব পদ্ধতি ও রোগবালাই ব্যবস্থাপনা সম্পর্কে হাতে-কলমে ধারণা পাচ্ছেন। এটি শুধু তাদের উৎপাদন বাড়াবে না। বরং নিরাপদ ও পুষ্টিসমৃদ্ধ খাদ্য নিশ্চিত করতেও সহায়ক হবে।
উক্ত মেলায় লালমনিরহাট সদর উপজেলা কৃষি অফিসার খন্দকার সোহায়েল আহমেদ, লালমনিরহাট সদর অতিরিক্ত কৃষি অফিসার এ, কে, এম, ফরিদুল হক সহ জেলার ৫ উপজেলার কৃষি অফিসারগন উপস্থিত ছিলেন।
সরকারি-বেসরকারি ১২টির অধিক স্টলে উন্নত জাতের বীজ, কৃষি যন্ত্রপাতি, জৈব সার, নিরাপদ সবজি, স্মার্ট কৃষি প্রযুক্তি ও ভিডিও উপস্থাপনীর মাধ্যমে কৃষি বিষয়ক বিভিন্ন তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। শিক্ষার্থী, কৃষক, উদ্যোক্তা ও সাধারণ দর্শনার্থীদের পদচারণায় মেলা মুখরিত হয়ে উঠেছে।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (BBS) সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, দেশের মোট শ্রমশক্তির প্রায় ৪০ শতাংশ এখনো কৃষি খাতে নিয়োজিত এবং জাতীয় আয়ে কৃষির অবদান প্রায় ১২ শতাংশ। তবে নগরায়ন ও জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে কৃষির চ্যালেঞ্জ বাড়ছে। ওই প্রেক্ষাপটে পুষ্টি ও নিরাপদ খাদ্যের বিষয়ে সচেতনতা তৈরি এবং কৃষি প্রযুক্তির হালনাগাদ প্রয়োগ সময়োপযোগী পদক্ষেপ।
আয়োজকরা জানান, ওই ধরনের মেলা দেশের কৃষকদের আধুনিক কৃষি প্রযুক্তির সঙ্গে পরিচিত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। একই সঙ্গে এটি খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তা অর্জনের জাতীয় লক্ষ্য বাস্তবায়নে সহায়ক হবে।