শুক্রবার, ২০শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ -muktinews24(তথ্য মন্ত্রনালয় কর্তৃক নিবন্ধনকৃত, রেজি নং-৩৬)

উৎপাদনে ফিরল বড়পুকুরিয়া তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের তৃতীয় ইউনিট

উৎপাদনে ফিরল বড়পুকুরিয়া তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের তৃতীয় ইউনিট

পার্বতীপুর(দিনাজপুর) প্রতিনিধিঃ
দিনাজপুরের বড়পুকুরিয়া কয়লাভিত্তক তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের ২৭৫ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন তৃতীয় ইউনিট ৬ দিন বন্ধ থাকার পর উৎপাদনে ফিরেছে। নতুন ওয়েলপাম্প স্থাপন করে আজ রবিবার দুপুর ১টা ৫৯ মিনিট থেকে উৎপাদন শুরু হয়েছে।
তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রে এই ইউনিট ২৭৫ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন হলেও দৈনিক ২০০-২২০ মেগাওয়াট বিদুৎ উৎপাদিত হচ্ছে। যা জাতীয় গ্রিডে যোগ হচ্ছে। এটি চালু রাখতে দৈনিক ২২০০-২৩০০ মেট্রিকটন কয়লার প্রয়োজন হবে।
এর অগে গত ৬ সেপ্টেম্বর থেকে তৃতীয় ইউনিটটি চালু হলেও যা দুই দিন পর ৯ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় ওয়েল পাম্প নষ্ট হওয়ার কারণে উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায়। এদিকে গত ১২ সেপ্টেম্বর রাত থেকে ১ নম্বর ইউনিট থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু করা হয়েছে। এ ইউনিটটি ১২৫ মেগাওয়াট ক্ষমতা সম্পন্ন হলেও, সেটি থেকে প্রতিদিন ৬০-৬৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে। যা জাতীয় গ্রিডে যোগ করা হচ্ছে। এটি চালু রাখতে ৮০০-৯০০ মেট্রিকটন কয়লার প্রয়োজন হচ্ছে। এতে করে বর্তমানে গড়ে দুটি ইউনিট থেকে ২৮৫ মেগাওয়াট বিদুৎ এই কেন্দ্রটি থেকে জাতীয় গ্রীডে যোগ হচ্ছে। যা উত্তরাঞ্চলের লোডশেডিং অনেক আংশে কমে আসবে বলে আশা প্রকাশ করেন কর্তৃপক্ষ।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বড়পুকুরিয়া কয়লাভিত্তিক তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের ৫২৫ মেগাওয়াট ক্ষমতা সম্পন্ন বিদুৎকেন্দ্রটি উৎপাদন কার্যক্রম পরিচালনা করেন চীনা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান হারবিন ইন্টারন্যাশনাল। ২০২০ সাল থেকে ২৫ সাল পর্যন্ত পাঁচ বছরের চুক্তি মোতাবেক আগামী বছর তাদের মেয়াদ শেষ হবে। বড়পুকুরিয়া কয়লা খনির সরবরাহকৃত কয়লার উপর নির্ভর করে এই তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রটি।
তবে, তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রটি ৫২৫ মেগাওয়াট ক্ষমতা সম্পন্ন তিনটি ইউনিটের হলেও বেশিরভাগ সময়ই দুটি ইউনিট থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হয়। বাকি একটি ইউনিট ওভারহোলিংয়ের জন্য বন্ধ থাকে। এরমধ্যে চলতি বছরের জুলাইয়ের শেষ দিকে বন্ধ হয়ে যায়। ২৭৫ মেগাওয়াট ক্ষমতা সম্পন্ন ৩ নম্বর ইউনিটের উৎপাদন। ১ মাস ৬ দিন বন্ধ থাকার পর গত ৬ সেপ্টেম্বর থেকে ৩য় ইউনিটটি চালু হলেও যা দুই দিন পর ৯ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় ওয়েল পাম্প নষ্ট হওয়ার কারণে আবারও উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায়। সেটি ৬দিন বন্ধ থাকার পর আজ রবিবার দুপুর ১টা ৫৯মিনিট থেকে উৎপাদন শুরু হয়েছে। এ ইউনিটটি ২৭৫ মেগাওয়াট ক্ষমতা সম্পন্ন হলেও দৈনিক ২০০-২২০ মেগাওয়াট বিদুৎ উৎপাদিত হচ্ছে। যা জাতীয় গ্রীডে যোগ হচ্ছে।
এদিকে ৬ সেপ্টেম্বর ১ নম্বর ইউনিটটিও সংস্কারকাজের জন্য বন্ধ করা হয়েছিল। গত ১২ সেপ্টেম্বর রাত থেকে ১ নম্বর ইউনিট থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু করা হয়েছে। এ ইউনিটটি ১২৫ মেগাওয়াট ক্ষমতা সম্পন্ন হলেও, সেটি থেকে প্রতিদিন ৬০-৬৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে। যা থেকে মেগাওয়াট গ্রিডে যোগ করা হচ্ছে। ফলে রংপুর বিভাগের আট জেলা লোডশেডিং অনেক আংশে কমে আসবে।
অপরদিকে ২০২০ সালের নভেম্বর থেকে কেন্দ্রের ১২৫ মেগাওয়াট ক্ষমতা সম্পন্ন ২ নম্বর ইউনিট বন্ধ রয়েছে। যা থেকে উৎপাদন হতো ৬৫-৭০ মেগাওয়াট । সূত্র মতে, বর্তমানে বড়পুকুরিয়া কোল ইয়ার্ডে কয়লা মজুত রয়েছে ২ লাখ ৫০ হাজার মেট্রিকটন। বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি থেকে দৈনিক কয়লা সরবরাহ করা হয় প্রায় ৩ থেকে সাড়ে তিন হাজার মেট্রিক টন। তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রটির তিনটি ইউনিট চালু রেখে স্বাভাবিক উৎপাদনের জন্য দৈনিক প্রায় ৪ হাজার ৮০০ মেট্রিক টন কয়লার প্রয়োজন। তবে, তিনটি ইউনিট একই সঙ্গে কখনো চালানো হয়নি।
বড়পুকুরিয়া তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রধান প্রকৌশলী প্রকৌশলী মো. আবু বকর সিদ্দিক বলেন, ২০২০ সালের নভেম্বর থেকে ১২৫ মেগাওয়াট ক্ষমতা সম্পন্ন ২ নম্বর ইউনিটটি বন্ধ রয়েছে। চায়না থেকে নতুন ওয়েলপাম্প এনে স্থাপন করে রবিবার দুপুর ১টা ৫৯ মিনিটে ২৭৫ মেগাওয়াট ক্ষমতা সম্পন্ন তৃতীয় ইউনিট থেকে উৎপাদন শুরু হয়েছে। যা থেকে ২০০-২২০ মেগাওয়াট বিদুৎ উৎপাদন করে জাতীয় গ্রীডে যোগ হচ্ছে। বর্তমানে গড়ে দুটি ইউনিট থেকে ২৮৫ মেগাওয়াট বিদুৎ এই কেন্দ্রটি থেকে জাতীয় গ্রীডে যোগ হচ্ছে বলে জানান তিনি। এতে করে উত্তরঞ্চলের লোডশেডিং অনেক আংশে কমে আসবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।

বিভাগ
শেয়ার করুন

মতামত লিখুন