ঘোড়াঘাটে ভাতিজার ছুরির আঘাতে চাচার মৃত্যু
ঘোড়াঘাট (দিনাজপুর) প্রতিনিধিঃ দিনাজপুরের ঘোড়াঘাটে প্রায় দুই সপ্তাহ আগে ভাতিজার ছুরির আঘাতে আহত হয়েছিলেন আবদুল ওয়াহেদ (৫৫) নামের এক ব্যক্তি। আজ শনিবার (৭ ডিসেম্বর) সকালে দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়।
নিহত আবদুল ওয়াহেদ উপজেলার বুলাকিপুর ইউনিয়ন কলাবাড়ি গ্রামের মৃত অলিমুদ্দিনের ছেলে। এ ঘটনায় নিহত ব্যক্তির ছেলে জাকিরুল ইসলাম (২৯) বাদী হয়ে থানায় একটি মামলা করেছেন। মামলার আসামিরা হলেন নিহতের বড় ভাই আফজাল হোসেনের ছেলে ফরিদুল ইসলাম (২৫), বড় ভাই লাল মিয়া (৬০), আফজাল হোসেন (৬৫), লাল মিয়ার স্ত্রী নিলুফা বেগম (৫৫) এবং আফজাল হোসেনের স্ত্রী ফাতেমা বেগম (৫৫)।
নিহত ব্যক্তির পরিবার ও মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, নিহত আবদুল ওয়াহেদের সঙ্গে জমিসংক্রান্ত বিষয়ে তাঁর বড় ভাই আফজাল হোসেন ও লাল মিয়ার বিরোধ চলছিল। এর জেরে বিভিন্ন সময় আবদুল ওয়াহেদের বড় ভাই ও তাঁদের পরিবারের লোকজন তাঁকে (ওয়াহেদ) প্রাণনাশের হুমকি দিতেন। ২৬ নভেম্বর রাত ৯টার দিকে আবদুল ওয়াহেদ ব্যক্তিগত কাজে বাড়ির বাইরে বের হন। এ সময় এজাহারে নামীয় পাঁচজনসহ অজ্ঞাতনামা আসামিরা হাতে লাঠি, লোহার রড় ও ধারালো ছুরি নিয়ে আবদুল ওয়াহেদের পথরোধ করেন। আবদুল ওয়াহিদ পথরোধের কারণ জানতে চাইলে তাঁর বড় ভাই লাল মিয়ার নির্দেশে বাকি আসামিরা তাঁকে এলোপাতাড়ি মারপিট করতে থাকেন। এ সময় তাঁর ভাতিজা ফরিদুল ইসলাম ধারালো ছুরি দিয়ে আবদুল ওয়াহেদের পেটের ডানপাশে আঘাত করলে তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। এ সময় বড় ভাই লাল মিয়া ধারালো ছুরি দিয়ে আবদুল ওয়াহেদের বাম পায়ের হাঁটুর নিচে আঘাত করেন। পরে বড় ভাই আফজাল হোসেন আবদুল ওয়াহেদের গলা চেপে ধরে শ্বাসরোধ করে হত্যার চেষ্টা করেন। তাঁর ভাবি নিলুফা বেগম ওয়াহেদের কোমরে ও পায়ে আঘাত করেন।
আবদুল ওয়াহেদের চিৎকারে আশপাশের মানুষজন ছুটে এলে আসামিরা ঘটনাস্থল থেকে চলে যান। পরে আবদুল ওয়াহেদকে তাঁর পরিবারের লোকজন উদ্ধার করে স্থানীয় ঘোড়াঘাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করান। সেসময় কর্তব্যরত চিকিৎসক প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে তাঁকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান।
ঘোড়াঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজমুল হক বলেন, ‘গত ২৬ নভেম্বর জমিসংক্রান্ত বিরোধের জেরে আবদুল ওয়াহেদ নামের এক ব্যক্তিকে তাঁর ভাতিজা ফরিদুল ইসলাম ছুরিকাঘাতে আহত করেন। এ ঘটনায় ওই দিন থানায় একটি মামলা হয়। শুনেছি, আজ সকালে আবদুল ওয়াহেদ চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। মামলার আসামিরা পলাতক রয়েছেন। পুলিশের পক্ষ থেকে তাঁদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।’