শনিবার, ৪ঠা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ -muktinews24(তথ্য মন্ত্রনালয় কর্তৃক নিবন্ধনকৃত, রেজি নং-৩৬)

পেটের ক্ষুধা তো ঠান্ডা বুঝে না

পেটের ক্ষুধা তো ঠান্ডা বুঝে না

মুক্তিনিউজ২৪ ডট কম ডেস্ক :  খুব ঠান্ডা বাড়ছে। হাত-পা অবশ হয়ে অসছে। কিন্তু কি করম, পেটের ক্ষুধা তো ঠান্ডা বুঝে না। তাই ভোর-সকালত কাজত বের হইছু’। এভাবেই বলছিলেন পঞ্চগড়ের মোজাম্মেল হোসেন নামের চা চাষি। একই কথা বলেন ভ্যানচালক হাসমত আলীও। মঙ্গলবার (৯ জানুয়ারি) সকালে ঘন কুয়াশায় ঠান্ডার প্রকোপের কাহিল হয়ে এ কথা বলেন তারা। কয়েকদিনের শৈত্যপ্রবাহের পর আবহাওয়ার থার্মোমিটারের স্কেলে গতকালের চেয়ে কমেছে তাপমাত্রা। হিমেল বাতাস ও বরফ শিশিরে কাঁপছে উত্তরের হিমাঞ্চল জেলা পঞ্চগড়। মঙ্গলবার সকাল ৯টায় তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে ১১ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ভোর ৬টায় একই তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে। গতকাল সোমবার (৮ জানুয়ারি) তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছিল ১৩ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা গতকালের চেয়ে ২ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা কমেছে। সকালে তাপমাত্রার রেকর্ডের তথ্যটি ঢাকা পোস্টকে জানান জেলার প্রথম শ্রেণির আবহাওয়া অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রাসেল শাহ। গতকাল বোরবার (৭ জানুয়ারি) সকাল ৯টায় তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছিল ৮ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ভোর থেকে সূর্য ঢাকা রয়েছে। বাতাসের গতি বেগ বেশি হওয়ায় শীতের তীব্রতা বৃদ্ধি পেয়েছে। আর দিনের তাপমাত্রা স্বাভাবিক থাকায় ২৬-২৭ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে রেকর্ড হচ্ছে। আবহাওয়া অধিদপ্তরের দেওয়া তথ্যানুযায়ী, রোববার (৭ জানুয়ারি) ৮ দশমিক ১ ডিগ্রি, শনিবার (৬ জানুয়ারি) ৯ দশমিক ৭, শুক্রবার (৫ জানুয়ারি) ৮ দশমিক ৪, বৃহস্পতিবার (৪ জানুয়ারি) ৮ দশমিক ৫, বুধবার (৩ জানুয়ারি) ৭ দশমিক ৪, মঙ্গলবার (২ জানুয়ারি) ১০ দশমিক ৭ ও সোমবার (১ জানুয়ারি) ১১ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে। জেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, ভোর থেকে ঘন কুয়াশায় ঢাকা পড়েছে জেলার পরিবেশ। কুয়াশার কারণে শহর ও গ্রামের সড়কগুলোতে যানবাহনগুলো হেডলাইট জ্বালিয়ে চলতে দেখা গেছে। ঘন কুয়াশার সঙ্গে ঝরছে হিমশীতল শিশির। শীতের কারণে বিপাকে পড়েছেন নিম্নআয়ের পেশাজীবীরা। ভ্যানচালক, পাথর ও চা শ্রমিক, দিনমজুর থেকে নানান শ্রমজীবী মানুষ। কমে গেছে তাদের দৈনন্দিন রোজগার। পরিবার-পরিজন নিয়ে কষ্টে দিনযাপন করছেন তারা।  গ্রামীণ নারীরা জানান, রোদ উঠলেও ভোর-সকালে কনকনে শীতের কারণে কাজ করতে গিয়ে হাত-পা অবশ হয়ে আসে। ঘরের আসবাবপত্র, বিছানাপত্র, ঘরের মেঝে পর্যন্ত স্পর্শ করলে বরফের মতো ঠান্ডা মনে হয়। ফলে আমাদের মতো নারীদের সকালে কাজ করতে খুব কষ্ট হয়। ফেরদৌসি আক্তার, মার্জিয়া ও সুমন রানাসহ শিক্ষার্থীরা বলেন, আজ খুব ঘন কুয়াশা। তার সঙ্গে শিশির পড়ছে। প্রচন্ড ঠান্ডা লাগছে। প্রাইভেটে যাচ্ছি। বিশেষ করে রাতে ও ভোরে উঠে পড়ালেখা করতে খুব কষ্ট হয় ঠান্ডার কারণে। ভ্যানচালক হাসমত আলী বলেন, প্রচন্ড কুয়াশার মধ্যেই জীবিকার কারণে ভ্যান নিয়ে বেড়িয়েছি। ঠান্ডা বাতাসের কারণে ভ্যান চালাতে গেলে হাতপা অবশ হয়ে আসে। আর কুয়াশার কারণে ভ্যানেও চড়তে চায় না কেউ। তাই কামাই কম, রোজগার তেমন ভালো হচ্ছে।
এদিকে শীতের কারণে নিউমোনিয়া, অ্যাজমা, হাঁপানি, শ্বাসকষ্ট ও ডায়রিয়াসহ শীতজনিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে শিশু থেকে বয়স্ক মানুষ। জেলা ও উপজেলার হাসপাতালগুলোর আউটডোরে ঠান্ডাজনিত রোগীরা চিকিৎসা নিচ্ছেন। চিকিৎসার পাশাপাশি শীতজনিত রোগ থেকে নিরাময় থাকতে বিভিন্ন পরামর্শ প্রদান করছেন চিকিৎসকরা। জেলার প্রথম শ্রেণির আবহাওয়া অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রাসেল শাহ জানান, গতকালের চেয়ে ২ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা কমেছে। মঙ্গলবার (৯ জানুয়ারি) সকাল ৯টায় তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে ১১ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গতকাল সোমবার ১৩ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছিল। উত্তর-পূর্ব বা উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে যে বায়ু প্রবাহিত হয়, সেটি শীতকালের। বাতাসের গতি বেগ বেশি হলে শীতের তীব্রতা বৃদ্ধি পায়। সে অনুপাতে এ অঞ্চলে এখন শীতের তীব্রতা বেশি হচ্ছে। আর দিনের তাপমাত্রা স্বাভাবিক থাকায় ২৬-২৭ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে রেকর্ড হচ্ছে।

বিভাগ
শেয়ার করুন

মতামত লিখুন