শনিবার, ১৯শে এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ -muktinews24(তথ্য মন্ত্রনালয় কর্তৃক নিবন্ধনকৃত, রেজি নং-৩৬)

বিয়ের প্রলোভনে স্বামীকে তালাক দেওয়ার পর এখন সেই প্রেমিকের বাড়িতে বিয়ের দাবিতে অনশন করছেন

বিয়ের প্রলোভনে স্বামীকে তালাক দেওয়ার পর এখন সেই প্রেমিকের বাড়িতে বিয়ের দাবিতে অনশন করছেন

গাইবান্ধা প্রতিনিধিঃ গাইবান্ধার সাদুল্লাপুরে এক তরুণী তার প্রেমিকের বিয়ের প্রলোভনে স্বামীকে তালাক দেওয়ার পর এখন সেই প্রেমিকের বাড়িতে বিয়ের দাবিতে অনশন করছেন। প্রেমিক মোরশেদ মিয়া ঘটনার বেগতিক দেখে আত্মগোপনে চলে গেছেন। গত চার দিন ধরে মেয়েটি মোরশেদের বাড়িতে অনশন চালিয়ে যাচ্ছেন। স্থানীয়দের অভিযোগ, এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে কিছু দায়িত্বশীল ব্যক্তি উভয় পক্ষের কাছ থেকে আর্থিক সুবিধা নিয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) সরেজমিনে উপজেলার রসুলপুর ইউনিয়নের বৈষ্ণবদাস গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, উৎসুক জনতার ভিড়। মেয়েটি বিয়ের দাবিতে অনশন করছেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বৈষ্ণবদাস গ্রামের আনোয়ারুল ইসলামের ছেলে মোরশেদ মিয়ার সাথে একই গ্রামের মেয়েটির প্রায় পাঁচ বছর আগে লেখাপড়ার সুবাদে গভীর প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। প্রায় চার বছর আগে মেয়েটির পরিবার অন্যত্র বিয়ে দেয় এবং তার একটি পুত্রসন্তানও রয়েছে। তবে, মোরশেদ এখনও অবিবাহিত এবং তাদের প্রেমের সম্পর্ক অক্ষুণ্ণ ছিল।

প্রায় সাত মাস আগে মোরশেদের বিয়ের আশ্বাসে মেয়েটি তার স্বামীকে তালাক দেন। এরপর গত ১৩ এপ্রিল সকালে মোরশেদ তাকে বাড়িতে ডেকে আনেন বিয়ের জন্য। কিন্তু এরপরই ঘটে বিপত্তি। ঝামেলা মধ্যে পড়ে পরিবার ও কিছু স্বার্থান্বেষী ব্যক্তির সহায়তায় মোরশেদ পালিয়ে যান। তবে মেয়েটি তার অনশন অব্যাহত রেখেছেন এবং গত চার দিন ধরে বিয়ের দাবিতে মোরশেদের বাড়িতে অবস্থান করছেন। এই ঘটনা এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে এবং শত শত নারী-পুরুষ মেয়েটিকে দেখতে ভিড় করছেন। রহস্যজনক কারণে এখনও পর্যন্ত এই ঘটনার কোনো সমাধান হয়নি বলে জানা গেছে।

স্থানীয়রা বলছেন, যেহেতু মেয়েটির সাথে মোরশেদের প্রেমের সম্পর্ক ছিল, তাই মেয়েটি বিয়ের দাবিতে অনশন করছেন। তারা চান ওই মেয়ের সাথে মোরশেদের বিয়ে হোক। তবে রসুলপুর ইউপি চেয়ারম্যান রবিউল ইসলামের বিরুদ্ধে উভয় পক্ষের কাছ থেকে টাকা নিয়েও বিয়ে সম্পন্ন না করার অভিযোগ উঠেছে। ইতোমধ্যে এই ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে, যা নিয়ে এলাকাবাসী চেয়ারম্যানের উপর ক্ষুব্ধ।

ভুক্তভোগী মেয়েটি বলেন, মোরশেদের সাথে আমার দীর্ঘদিনের প্রেম। ওর কথা মতো আমি আমার স্বামীকে তালাক দিয়েছি। আর বিয়ের জন্য আমাকে ওর বাড়িতে ডেকে এনে সে পালিয়েছে। এখন আমি কোথায় যাব! বিয়ে না করা পর্যন্ত আমি এই বাড়ি ছাড়ব না। তা না হলে আত্মহত্যা করা ছাড়া আমার আর কোনো উপায় নেই।

এদিকে, ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে মেয়েটির মা অভিযোগ করেছেন যে ইউপি চেয়ারম্যান তাদের মেয়ের বিয়ে দেওয়ার জন্য ৫০ হাজার টাকা দাবি করেছিলেন এবং ২০ হাজার টাকা দেওয়ার পরেও চেয়ারম্যান বিয়ে সম্পন্ন করেননি।

এ বিষয়ে প্রেমিক মোরশেদের মা বলেন, আমার ছেলের সাথে ওই মেয়ের কোনো সম্পর্ক নেই। আমি গ্রামবাসীদের কাছে এর বিচার চাই।

সাদুল্লাপুরের রসুলপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান রবিউল ইসলাম বলেন, ছেলের প্রাপ্ত বয়স না হওয়ায় বিয়ে পড়ানো সম্ভব হচ্ছে না। এছাড়া আমি কারও কাছ থেকে কোনো প্রকার টাকা গ্রহণ করিনি।

বিভাগ
শেয়ার করুন

মতামত লিখুন