বৃহস্পতিবার, ২১শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ -muktinews24(তথ্য মন্ত্রনালয় কর্তৃক নিবন্ধনকৃত, রেজি নং-৩৬)

লালমনিরহাটে  আবারও  ভয়াবহ বন্যা হওয়ার আশংকা  নিন্মাঞ্চল প্লাবিত 

লালমনিরহাটে  আবারও  ভয়াবহ বন্যা হওয়ার আশংকা  নিন্মাঞ্চল প্লাবিত 
মোঃ লাভলু শেখ লালমনিরহাট থেকে।।
গত এক সপ্তাহ  ধরে টানা লালমনিরহাটে বৃষ্টি ও উজান থেকে পাহাড়ি ঢলে দেশের বৃহত্তর তিস্তা সেচ প্রকল্পে সোমবার  সকাল ৯ টায় ডালিয়া ব্যারেজে বিপৎসীমার ১৪ সেঃ মিঃ উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হওয়ায় তিস্তার তীরবর্তী বেশ কিছু নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হয়েছে।
রাত-সকাল থেকে পানি বাড়লেও বেলা বাড়ার সাথে সাথে বিকাল ৩ টায় পানির প্রবাহ রেকর্ড করা হয় তিস্তা নদীঃ ডালিয়া পয়েন্ট -পানির সমতল ৫২.০৬ মিটার (বিপদসীমা = ৫২.১৫ মিটার) যা বিপদসীমার ৯ সেঃমিঃ নিচে কাউনিয়া পয়েন্ট – পানির সমতল ২৯.০৯ মিটার, (বিপদসীমা =২৮.৭৫ মিটার) যা বিপদসীমার ৩৪ সেঃমিঃ উপরে। ধরলা নদীঃ শিমুলবাড়ি পয়েন্ট – পানি সমতল ৩০.১৭ মিটার, (বিপদসীমা = ৩১.০৯ মিটার) যা বিপদসীমার ৯২ সেঃমিঃ নিচে। পাটগ্রাম পয়েন্ট – পানি সমতল  ৫৮.৩২ মিটার  (বিপদসীমা =৬০.৩৫ মিটার) যা বিপদসীমার  ২০৩ সেঃমি নিচে। লালমনিরহাটে আজ সকাল ৯. ০০টা থেকে বৃষ্টিপাত  ৩ মিলিমিটার। ফলে নদীর বাম তীরের পানি বন্দী হয়েছে বেশ কিছু পরিবার।
ফলে চরম বিপাকে পড়েছেন পানিবন্দী এসব পরিবারের সদস্যরা। গবাদি পশু-পাখি আর মৎস্য খামারিরাও চরম বিপাকে পড়েছেন।
ব্যারেজ ও নদী তীরবর্তী মানুষ জানান, গত একসপ্তাহ ধরে থেমে থেমে ভারী বর্ষণ আর উজানের পাহাড়ি ঢলে তিস্তা নদীর পানি প্রবাহ বেড়ে যায়। পানি প্রবাহ নিয়ন্ত্রণ করতে তিস্তা ব্যারেজের লালমনিরহাট অংশের সব কটি জলকপাট খুলে দেওয়া হয়েছে। পানি প্রবাহ বেড়ে যাওয়ায় তিস্তার তীরবর্তী ও লালমনিরহাটের ৫ টি উপজেলায় ৩য় বাড়ের মত বন্যা দেখা দিয়েছে এবং নতুন নতুন এলাকা বন্যায় প্লাবিত হয়েছে।
পানিবন্দী পরিবারগুলোর মাঝে শুকনো খাবার ও বিশুদ্ধ পানির সংকট দেখা দিয়েছে। নদীপাড়ের অধিকাংশ পরিবারের সুপেয় পানির টিউবয়েল পানির নিচে ডুবে গেছে। এক বেলা রান্না করে চালিয়ে নিচ্ছেন ২/৩ বেলা।
ফলে নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছেন এসব পরিবার।
লালমনিরহাট সদর উপজেলার খুনিয়াগাছ এলাকার পানি বন্দী এজাজুল বলেন, রাত থেকে পানি বাড়ছে। বিকাল বেলা থেকে আবার পানি কমতে শুরু করেছে। পানি নেমে গেলেও দূর্ভোগ বেড়েছে।
আদিতমারীর মহিষখোচা এলাকার মাজেদুল ইসলাম বলেন, নদীপাড়ের নিম্নাঞ্চলগুলো প্লাবিত হয়েছে। অনেক পুকুর ডুবে মাছ ভেসে গেছে। পুকুরের মাছ রক্ষায় চারদিকে নেট জাল দিয়ে রক্ষার চেষ্টা করছি। তবে পানি আরও বাড়লে কয়েক লাখ টাকার মাছ ভেসে যাবে। পুকুরের মাছ নিয়ে চরম দুশ্চিন্তায় রয়েছেন এ মৎস্য চাষি।
হাতীবান্ধা উপজেলার গড্ডিমারী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম‌্যান আবু বক্কর সিদ্দিক শ‌্যামল ও পাটিকাপাড়া ইউনিয়ন চেয়ারম‌্যান মজিবুল আলম সাহাদাত জানান, তাদের ইউনিয়নের নতুন করে বেশ কিছু এলাকার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। ক্রমে বাড়ছে পানিবন্দি পরিবারের সংখ্যা। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন মহলকে অবগত করা হয়েছে বলেও জানান তারা।
পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) তিস্তা ব্যারেজ ডালিয়া শাখার নির্বাহী প্রকৌশলী আসফা উদ দৌলা বলেন, কয়েক দিনের ভাড়ি বৃষ্টি আর উজানের ঢলে তিস্তার পানি প্রবাহ বেড়েছে। তাই সবগুলো জলকপাট খুলে পানি প্রবাহ নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। রাত-থেকে পানি বাড়লেও বিকাল ৩ টায় পানি প্রবাহ বিপদসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ উল্যা বলেন, তিস্তা ব্যারেজ পয়েন্টে সকালে পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হলেও বিকালে তা নেমে বিপদসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। জরুরি প্রয়োজনসহ যে কোনো পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে প্রস্তুতি নেওয়া রয়েছে। আমরা ইউনিয়ন চেয়ারম্যান ও ইউএনওদের মাধ্যমে সকল পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি।
বিভাগ
শেয়ার করুন

মতামত লিখুন