স্পিননির্ভর আফগানিস্তান ভারতে ভিন্ন কিছু করে দেখাতে চায়
মুক্তিনিউজ২৪ ডট কম ডেস্ক : ম্যাচ উইনার রশিদ খানের নেতৃত্বে আফগানিস্তানের স্পিন বিভাগ বেশ শক্তিশালী। ভারতের ধীরগতির ও টার্নিং উইকেটে সে কারণেই এবারের বিশ্ব কাপে ভিন্ন কিছু করে দেখাতে মুখিয়ে আছে যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশটি।
বিশ্ব জুড়েই টি-টোয়েন্টি ফর্মেটে অন্যতম আগ্রহের নাম রশিদ খান। এই ফর্মেটে বিশ্ব র্যাঙ্কিংয়ের বোলার হিসেবে শীর্ষ নামটিও তার, ওয়ানডেতে তিনি আছেন র্যাঙ্কিংয়ের পঞ্চম স্থানে।
কিন্তু রশিদকে ছাড়াও আফগান দলে আরও কয়েকজন তারকা স্পিনার আছেন। মোহাম্মদ নবী, মুজিব উর রহমান, নুর আহমেদ যেকোনো সময়ই বড় কোনো দলের বিপক্ষে দলকে জয় উপহার দেওয়ার ক্ষমতা রাখে। তবে ৫০ ওভারের ক্রিকেটে পেস আক্রমনের সীমাবদ্ধতা ও ব্যাটিংয়ে ধারাবাহিকতার অভাবে আফগানিস্তান খুব বেশি দূর এগোতে পারছে না। এ বছর ৯ ম্যাচে তারা মাত্র দুটিতে জয়ী হয়েছে। সম্প্রতি এশিয়া কাপের তারা প্রথম রাউন্ডের বাধা টপকাতে পারেনি। অধিনায়ক হাশমতুল্লাহ শাহিদী ব্যাটারদের ব্যর্থতাকেই বাজে পারফরমেন্সের কারণ হিসেবে সামনে নিয়ে এসেছেন। জুলাইয়ে বাংলাদেশে তিন ম্যাচ সিরিজে জয়ী হয়েছিল আফগানরা। শাহিদী বলেছেন, ‘গত দুই বছর আমরা ভাল ক্রিকেট খেলছি। কিন্তু গত চার থেকে পাঁচ ম্যাচে আমরা সাধ্য অনুযায়ী পারফর্ম করতে পারিনি।’
এরপরও ভারতে দলের ঘুড়ে দাঁড়ানোর ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসী আফগান অধিনায়ক, ‘এশিয়া কাপ আমাদের জন্য একটি সতর্ক বার্তা ছিল। একই সঙ্গে এর অর্থ এই নয় যে আমরা ভাল খেলিনি। বিশ্ব কাপের জন্য আমরা পুরোপুরি প্রস্তুত, আশা করছি এখানে ফলাফলও ভিন্ন হবে। আমার দলের ওপর পূর্ণ আস্থা আছে।’
সাম্প্রতিক ব্যর্থতা সত্ত্বেও ঘরের মাঠে আফগান দলের প্রচুর সমর্থক আছে। গত কয়েক দশকে যুদ্ধ বিধস্ত আফগানিস্তানে পুরো জাতিকে একত্রিত করেছে একমাত্র তাদের ক্রিকেট। দ্বিতীয়বারের মত বিশ^কাপে অংশ নিতে যাবার আগে শাহিদী বলেছেন, ‘আমাদের সমর্থকরা সব সময়ই আমাদের পাশে ছিল। তাদের প্রতি আমরা সবাই কৃতজ্ঞ। তাদেরকে কিছু দেওয়ার সর্বোচ্চ চেষ্টা আমরা করবো। দেশের মানুষ আমাদের কাছে অনেক কিছু আশা করছে। তারা চায় আমরা যেন ভালো খেলে ভারতে কিছু করে দেখাতে পারি।’
২০১১ বিশ^কাপ বাছাইপর্ব থেকে আফগানিস্তান ক্রিকের উত্থান। কিন্তু ওই আসরে সুপার এইটে কানাডার কাছে হেরে পরবর্তীতে আর বিশ^কাপে খেলা হয়নি। চার বছর পর অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডের মাটিতে অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপে প্রথমবারের মতো আফগানরা খেলতে আসে। মূল আসরে তাদের মতো সহযোগী আরেক দেশ স্কটল্যান্ডকে পরাজিত করলেও বাকি পাঁচ ম্যাচে হেরে যায়। ২০১৯ বিশ্বকাপ শুরু হবার মাত্র দুই মাস আগে অধিনায়ক আসগর আফগনাকে বরখাস্ত করা হলে ওই আসরটা তাদের মোটেই ভাল কাটেনি। গুলবাদিন নাইবের অধীনে খেলতে নেমে ইংল্যান্ডে ৯টি ম্যাচেই তারা পরাজিত হয়েছিল।
ভালো ফর্মে থাকা সত্ত্বেও বিতর্কিতভাবে ওই সময় নাইবকে অধিনায়কের পদ থেকে সরিয়ে দেয়া হয়ছিল।
শাহিদী আশা করছেন আগামী ৭ অক্টোবর বাংলাদেশের বিরুদ্ধে বিশ^কাপের প্রথম ম্যাচেই তারা নিজেদের প্রমান করতে পারবেন। এ সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘বিশ্বকাপের প্রতিটি ম্যাচই গুরুত্বপূর্ণ। সেখানে জয়ী হতে পারলে বাড়তি আত্মবিশ্বাস ও অনুপ্রেরণা পাওয়া যায়।’
আফগানিস্তানের বাকি ম্যাচগুলো যে দলের বিপক্ষে তাদের কখনোই ওয়ানডেতে তারা পরাজিত করতে পারেনি।
ফজলহক ফারুকি ও আজমাতুল্লাহ ওমারজাইয়ের সাথে নাভিন-উল হকের ফিরে আসা দলের পেস আক্রমনকে কিছুটা হলেও শক্তিশালী করেছে। ওপেনার রাহমাতুল্লাহ গুরবাজ ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগে(আইপিএল) খেলার অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে ভাল কিছু করার আশা করছেন । মিডল অর্ডারে রয়েছেন ইব্রাহিম জারদান, শাহিদী, নবী ও নাজিবুল্লাহ জারদান।