রবিবার, ২৮শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ -muktinews24(তথ্য মন্ত্রনালয় কর্তৃক নিবন্ধনকৃত, যার রেজি নং-৩৬)

বগুড়ার নন্দীগ্রামে প্রবল বৃষ্টিপাতে বেশি ক্ষতির কবলে মরিচ চাষিরা

বগুড়ার নন্দীগ্রামে প্রবল বৃষ্টিপাতে বেশি ক্ষতির কবলে মরিচ চাষিরা
 জিল্লুর রয়েল, নন্দীগ্রাম (বগুড়া)  : বগুড়ার নন্দীগ্রাম প্রবল বৃষ্টিপাতে বেশি ক্ষতির কবলে মরিচ চাষিরা। প্রবল বৃষ্টিপাত ও উজান থেকে পানি নেমে আসায় নাগর নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে গুলিয়া কৃষ্ণপুর স্কুল সংলগ্ন বাঁধ ধসের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। বৃষ্টির পানিতে ডুবে মারা গেছে প্রায় ৭০০ মুরগি ও অনেক পুকুর ডুবে ভেসে গেছে মাছ।
জানা গেছে, নন্দীগ্রাম উপজেলায় প্রবল বৃষ্টিপাতে ও উজান থেকে নেমে আসা পানিতে নাদর নদীর ব্যাপক পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। দিনদিন পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় গুলিয়া কৃষ্ণপুর স্কুল সংলগ্ন নাগর নদীর বাঁধ ধসের আশঙ্কা করছেন গ্রামবাসী। এতে কৃষকদের দিন কাটছে চরম হতাশায়। উপজেলার কৃষকরা বুক ভরা আশা ও চোখ ভরা স্বপ্ন নিয়ে শক্ত হাতে মাঠে নেমেছিলেন। হাজার হাজার টাকা খরচ করে আমন ধানের পাশাপাশি মরিচ চাষ করে কৃষকরা।
মরিচ ক্ষেতে পানি জমে থাকায় দুশ্চিন্তায় পড়েন চাষীরা। মরিচগাছ রক্ষায় শ্যালো মেশিন দিয়ে পানি সেচ দিলেও একটু পড়েই আবার পানিতে ডুবে যায় মরিচগাছ।
এদিকে উপজেলার কল্যাণনগর গ্রামে নন্দীগ্রাম পৌরসভার সাবেক মেয়র কামরুল হাসান সিদ্দিকী জুয়েলের মুরগির খামারে পানি ঢুকে সোনালি জাতের ৫০০ ও ব্রয়লার জাতের ২০০ মুরগি মারা গেছে।
 অন্য মুরগিগুলো বেঁচে থাকলেও অবস্থা ভালো নয়। সেখানে তার পুকুর ডুবেও প্রায় ৫ লাখ টাকার মাছ ভেসে গেছে। এতে তার প্রায় ৯ লাখ টাকা ক্ষতি হয়েছে বলে তিনি জানান। তার মতো উপজেলার অনেক পুকুর ডুবে মাছ ভেছে গেছে।
এছাড়া উপজেলা ও পৌরসভায় বৃষ্টির পানি আটকে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। এতে করে ৩ শতাধিক পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়ে। বাসা-বাড়ির সামনে হাঁটু পানি। কিছু কিছু বাড়িতে পানি ঢুকে গেছে। আর এই প্রবল বৃষ্টিপাতে ভেঙে গেছে কাঁচা ঘরবাড়ি। তবে হতাহতের কোনো খবর পাওয়া যায়নি।
মরিচ চাষিরা জানান, কয়েক দিন টানা বৃষ্টি হওয়ায় বেশির ভাগ মরিচ ক্ষেতে পানি জমে যায়। সেইসব মরিচের জমিতে শ্যালো মেশিন দিয়ে পানি সেচ দেয়া হয়। তারপরেও বৃষ্টির পানি ও আশপাশের জমির পানি চুয়ে আসে। এতে অনেক ক্ষেতের মরিচগাছ মরে যায়। কিছু জমির মরিচগাছ বেঁচে থাকলেও সেগুলোতে মরিচ নেই বললেই চলে। আবার কিছু ক্ষেতের মরিচগাছ বেঁচে গেলেও সেগুলো ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর ফলে এ উপজেলায় কাঁচা মরিচের ফলনে বিপর্যয়ের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
উপজেলার ভাটগ্রামের মরিচ চাষী আক্কাস আলী বলেন, হাটে মরিচের দাম বেশি কিন্তু বৃষ্টিতে মরিচগাছের সর্বনাশ হয়ে গেছে।  জমিতে মরিচগাছ থাকলেও তাতে মরিচ নেই। তিনি এবার ৩ বিঘা জমিতে মরিচ চাষ করেছিলো। তার মরিচগাছ লাগানো থেকে শুরু করে এ পর্যন্ত ২ লাখ ৫২ হাজার টাকা ব্যয় হয়েছে। বাজারে মরিচের দাম বেশি হলেও জমিতে মরিচগাছ নষ্ট হওয়ায় হাসি নেই তার মতো অনেক মরিচ চাষিদের।
এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা গাজীউল হক বলেন, এবার নন্দীগ্রাম উপজেলায় ৩১০ হেক্টর জমিতে মরিচ চাষ হয়েছে। বৃষ্টিতে মরিচ ক্ষেতে পানি জমে যায়। তবে সঙ্গে সঙ্গে মরিচ চাষিরা শ্যালো মেশিন দিয়ে পানি সেচ দেওয়ায় মরিচগাছ পুরোপুরি নষ্ট হয়নি।
বিভাগ
শেয়ার করুন

মতামত লিখুন