কাঠের সেতু পানির নীচে,ভোগান্তিতে দুই জেলার মানুষ
মনোয়ার বাবু,ঘোড়াঘাট (দিনাজপুর) প্রতিনিধিঃ
দিনাজপুর জেলার ঘোড়াঘাট এবং গাইবান্ধা জেলার পলাশবাড়ী উপজেলার সীমানায় করতোয়া নদীর উপর নির্মাণাধীন ব্রীজের পাশে অস্থায়ী কাঠের সেতুর উপর দিয়ে হালকা বৃষ্টিতেই সেতুটির উপর দিয়ে নদীর পানি প্রভাহিত হওয়া শুরু হয়েছে।এতে করে ভোগান্তিতে পড়েছে হাজার হাজার মানুষ।
সরেজমিনে রবিবার গিয়ে দেখা যায়,জীবনের ঝুঁকি নিয়ে তবুও এই কাঠের সেতু দিয়ে পারাপার হতে দেখে গেছে মোটরসাইকেল,বাইসাইকেল এবং সাধারণ নারী-পুরুষকে।প্রতিদিন অন্তত তিন থেকে চার হাজার মোটরসাইকেল এবং দুই থেকে তিন হাজার মানুষ পায়ে হেঁটে পারাপার হয় এই কাঠের সেতু দিয়ে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, নির্মাণাধীন সেতু নির্মাণের আগে শুষ্ক মৌসুমে নাম মাত্র কয়েক ফিট উচ্চাতার নড়ভরে অস্থায়ী এই কাঠে সেতু নির্মান করে সড়ক ও জনপদ বিভাগ।আর এতে করে তৈরী হয় বিপত্তি।ফলে ভরা বর্ষা মৌসুম শুরু আগেই কচুরিপানা ও পানির চাপে অস্থায়ী কাঠের সেতুর একাংশ ভেঙ্গে যায়।তার কয়েক ঘণ্টা পরই এই সেতুর উপর দিয়ে পানি প্রভাহিত হওয়া শুরু হয় এবং ধীরেধীরে পানির উচ্চাতা বৃদ্ধি পাচ্ছে।এতে অস্থায়ী সেতুটি দিয়ে পারাপার একে বারে বন্ধ হয়ে গিয়েছে।দিনাজপুর জেলার ঘোড়াঘাট, হাকিমপুর, বিরামপুর,নবাবগঞ্জ এবং বিভাগীয় শহর রংপুরের সাথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।অপর দিকে নতুন সেতুটি চুক্তি অনুযায়ী আগামী বছরের মে মাসে নির্মান কাজ শেষ হবার কথা।
ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান বলছে,তারা শুধু নতুন ব্রীজ নির্মান করবে।অস্থায়ী বিকল্প সেতু নির্মাণের কোন চুক্তি তাদের সাথে হয়নি। নির্মান করা বিকল্প সেতুটি সড়ক বিভাগ নির্মাণ করেছে।এদিকে সওজ বলেছে পুরাতন বেইলী ব্রীজ ভেঙ্গে নতুন সেতু নির্মাণ প্যাকেজে অস্থায়ী সেতু নির্মাণের কোন অনুমোদন নেই।তবুও সাধারণ মানুষের যাতায়াতের কথা বিবেচনায় তারা ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে অস্থায়ী একটি কাঠের সেতু নির্মাণ করেছে।
অস্থায়ী সেতু দিয়ে হেঁটে পারপারের সময় এক স্কুল শিক্ষক তৌহিদুল ইসলাম এবং সাইকেল আরোহী তপন দাস বলেন, নামেমাত্র একটি অস্থায়ী কাঠের সেতু নির্মান করেছে সওজ। এটি জনগণের সাথে তামাসা করা ছাড়া আর কিছুই না।এখন আমরা হাজার হাজার মানুষ কিভাবে যাতাযাত করবো!খড়া মৌসুমে নদীতে যখন পানি কম ছিলো,তখন নদীর পানি থেকে ২ হাত উচ্চতায় কাঠের সেতু নির্মান করা হয়েছে। বর্ষা মৌসুমে কাঠের সেতুটি ডুবে যাবে এটাই স্বাভাবিক।সেতুটি নির্মানকারীরা জনগণকে ভোগান্তিতে ফেলতে ইচ্ছেকৃত ভাবেই এই কাজটি করেছে।
এদিকে গাইবান্ধা সড়ক ও জনপদ (সওজ) বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী ফিরোজ আখতার বলেন, চলমান ব্রীজ নির্মান প্যাকেজে বিকল্প সেতু নির্মানের কোন ব্যবস্থা নেই। তবুও হেটে যাতায়াতের জন্য একটি অস্থায়ী সেতু আমরা তৈরি করেছিলাম। পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যানের সাথে আলোচনা করে দুটি নৌকা সেখানে দেওয়া হয়েছে জনসাধারণের পারাপারের জন্য। একটু কষ্ট হলেও পারাপারের জন্য সকলকে নৌকা ব্যবহার করতে হবে।
তিনি আরো বলেন, বর্ষা মৌসুমের আগেই নদীর পানি বৃদ্ধি হলে আমাদের করণীয় কিছু থাকে না। নতুন সুপার স্ট্রাকচার ব্রীজ নির্মান কাজ দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে। নতুন ব্রীজের নির্মান কাজ ৪০ শতাংশ সম্পূর্ণ হয়েছে। বর্ষা মৌসুম আসার আগেই ব্রীজটির সর্বশেষ গার্ডার নির্মান শেষ হবে। এতে ব্রীজের নিচ দিয়ে পানি প্রবাহ স্বাভাবিক হবে।