লালমনিরহাটে খোঁজ মিলেছে কুখ্যাত মাদক সম্রাটের সারাদেশে বিভিন্ন কায়দায় মাদক সরবরাহ
লালমনিরহাট জেলা সংবাদদাতা।।
লালমনিরহাটে খোঁজ মিলেছে কুখ্যাত মাদক সম্রাটের। লালমনিরহাট সদর উপজেলার ৮ নং গোকুন্ডা ইউনিয়নের ৬ নং ওয়ার্ডে তিস্তা সওদাগর পাড়ায় বসবাসকারী বহুল আলোচিত একাধিক মাদকদ্রব্য মামলার আসামী মাদক সম্রাট শহিদুল ইসলাম (৫০)। তিনি ওই এলাকার মৃত নজরুল ইসলামের ছেলে।
আলোচিত মাদক সম্রাট শহিদুল ইসলাম ইতো-মধ্যেই ডিবি, পুলিশ, র্যাব-ও লালমনিরহাট সদর থানা পুলিশের হাতে কয়েকবার মাদকদ্রব্য’ এর বড় বড় চালানসহ গ্রেফতার হয়ে দীর্ঘদিন কারাভোগ করে জামিনে বেরিয়ে এসে ওই এলাকায় আবারও গড়ে তুলেছেন মাদকদ্রব্য’এর সম্রাজ্ঞ্য। তাই নিজ এলাকায় তিনি মাদকের সম্রাট নামে পরিচিত লাভ করেছেন।
মাদক সম্রাট শহিদুল ইসলামের অন্যতম মাদকদ্রব্য’ এর বড় যোগানদাতা তারই আপন ছোট ভায়রা কুড়িগ্রাম জেলার ফুলবাড়ি উপজেলার পশ্চিম ফুলমতি গ্রামের মোঃ মুকুল (ওরফে) মকু মিয়ার ছেলে আর এক কুখ্যাত মাদকদ্রব্য
হিরোইন, গাঁজা, ফেনসিডিল ও ইয়াবার ব্যবসায়ী ( মাদক ডিলার)তাইজুল ইসলাম। যার নামে ফুলবাড়ি থানায় কয়েকটি মাদকদ্রব্য মামলা চলমান রয়েছে । মামলা গুলো হলো-ফুলবাড়ি থানা এফআইআর নং-৩৬/১৮৬ জিআর নং-১৮৬/১৮ তারিখ ২৪ জুন ২০১৮ ইং, ১৯ (১) এর ৩ (ক) ১৯৯০ সালের মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন। এফআইআর নং-১৭/২৬২ জিআর নং-১৬২/২০১৯ তারিখ-২৪ জুন ২০১৯ ইং, এফআইআর নং-৫/৬২ তারিখ- ১৪জুন ২০১৯ইং ৩৬ (১) ১৪ (ক) মাদকদ্রব্য আইন ২০১৮, এফআইআর নং-৩৬/ ১৮৬ জিআর নং-১৮৬/১৮ তারিখ-২৪ জুন ২০১৮ ইং ১৯ (১) এর ৩(ক)১৯৯০ সালের মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন। এফআইআর নং-১৫ জিআর নং-৪৭/১৪ সহ আরও কিছু মামলা চলমান।
মাদকদ্রব্য’র যোগানদাতা তাইজুল ইসলাম ও মাদক সম্রাট শহিদুল মিলে লালমনিরহাট জেলা থেকে শুরু করে কুড়িগ্রাম জেলাসহ দেশের প্রতিটি জেলা ও উপজেলায় মাদকদ্রব্য’র বড় বড় চালান আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিয়ে বিভিন্ন কায়দায় পাচার করে আসছে। এতে করে ধ্বংস হচ্ছে যুব সমাজ, আর মাদকদ্রব্য পাচারের টাকা দিয়ে শহিদুল ও তার ভায়রা তাইজুল ইসলাম তৈরি করছে কোটি টাকার বাড়ি, কয়েক লক্ষ টাকার গাড়িসহ নামে- বেনামে সম্পদের পাহাড়।
মাদক সম্রাট শহিদুল ইসলাম জানান,তাইজুল ইসলাম আমার ছোট ভায়রা। তার সাথে আমার একটা নিবিড় সম্পর্ক। আমি হাফ প্যান্ট পড়া থেকে জেল খেটেছি, মামলার ভয় পাইনা। আমার নামে ৩ টি মাদক মামলা চলমান। পুলিশ বলেন, র্যাব বলেন, ওসি বলেন, কেউ আমার কিছু করতে পারবে না। পুলিশের আইজিপিতে লোক আছে আমার, আমি ১০০ লোক মারলেও কেউ কিছু করতে পারবে না। আমার নামে দুর্নীতি দমন কমিশন ( দুদকে) অভিযোগ দিয়েও কিছু করতে পারেনি আর পুলিশ কি করবে। আমি শহিদুল ইচ্ছা করলে অনেক কিছু করতে পারি প্রচুর ক্ষমতা আমার। বাংলাদেশে অনেক বড় জ্যাক আছে এমনটি দাবি তার। তবে ৩ টি মামলা তার বিরুদ্ধে মিথ্যা এটিও দাবি করেন তিনি।
তিনি আরও দাবি করেন দীর্ঘ ১৮ বছর থেকে আমি কাপড়ের ব্যবসা করে আসছি। আমার ২/৪ কোটি টাকা থাকতেই পারে। বর্তমানে পারিবারিক সমস্যার কারনে কাপড়ের ব্যবসা বন্ধ রয়েছে। ঠিক এভাবেই কথা গুলো বলেন শহিদুল ইসলাম।
ওই এলাকার কয়েকজন জানান, শহিদুল ইসলাম ভয়ানক লোক, কেননা যারা মাদক ব্যবসায়ী তারা খারাপ মানুষই হয়। তার দাপটে এলাকায় কেউ তার বিরুদ্ধে কথা বলার সাহস পায় না। তার এতো সম্পদের আয়ের উৎস কি? অবৈধ সম্পদের পাহাড় করেছে, তথ্য বেড় করে আইনের আওতায় নেওয়ার জোর দাবী এলাকাবাসীর।
গোকুন্ডা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুর রশিদ টোটন জানান, আমার ইউনিয়নে এতো বড় মাদকের সম্রাট আছে তা আমার জানা ছিল না। একজন মাদক ব্যবসায়ীর কথা শুনেছি। এ বিষয়ে সামনে আইনশৃঙ্খলা মিটিং এ মাদক বন্ধের কথা উপস্থাপন করা হবে।
লালমনিরহাট সদর থানা’র ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি এরশাদুল আলম এ বিষয়ে বলেন, বাংলাদেশে অনেক বড় বড় অপরাধী রয়েছে তার তুলুনায় শহিদুল ইসলাম পুলিশের কাছে কিছুই না। তার বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য’র একাধিক মামলা চলমান। আমরা তার উপর নজর রেখেছি খুব শীঘ্রই শহিদুলের পুরো গ্যাং-কে আইনের আওতায় আনা হবে।