কুড়িগ্রাম-৩ আসনে চলছে প্রচারণা, সরগরম কর্মী-সমর্থকরা
কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি:
আসন্ন দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে উত্তরের জেলা কুড়িগ্রাম-৩ আসনে জমে উঠেছে প্রচারণা। এ পর্যন্ত কোন ধরণের অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়াই নির্বিঘ্নে প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন কর্মী-সমর্থকরা। তবে ভোটের ফলাফল নিয়ে সংশয় রয়েছে প্রার্থী ও ভোটারদের মাঝে।
জেলার একমাত্র উপজেলা নিয়ে গঠিত উলিপুর উপজেলায় রয়েছে একটি পৌরসভা এবং ১৩টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত। তিস্তা, ব্রহ্মপুত্র ও ধরলা নদী দ্বারা বেষ্টিত এ আসনে ভোটার রয়েছে তিন লাখ ৪৭ হাজার ২৬১ জন। এর মধ্যে পুরুষ এক লাখ ৭১ হাজার ৫৭০জন এবং নারী এক লাখ ৭৫ হাজার ৬৯১জন। ভোট কেন্দ্র-১৩৯টিতে ৮০৬টি ভোটকক্ষ রয়েছে। নির্বাচনের দায়িত্ব পালন করবেন ১৩৯জন প্রিজাইডিং, ৮০৬ জন সহকারী প্রিজাইডিং ও ১৬১২জন পোলিং কর্মকর্তা।
এ আসনে ৭জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন। তারা হলেন, আওয়ামী লীগের সৌমেন্দ্র প্রসাদ পান্ডে গবা (নৌকা), জাতীয় পার্টির আব্দুস সোবহান (লাঙ্গল), তৃণমূল বিএনপির আব্দুল বাতেন(সোনালী আঁশ), ন্যাশনাল পিপলস পার্টির মোসাদ্দেকুল আলম (আম), কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের হাবিবুর রহমান (গামছা), বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের অ্যাড.সাফিউর রহমান (নোঙ্গর) এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী ডা.আক্কাছ আলী সরকার(ট্রাক)।
সাতজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলেও মাঠে রয়েছেন আওয়ামীলীগের সৌমেন্দ্র প্রসাদ পান্ডে গবা , জাতীয় পার্টির আব্দুস সোবহান এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী আক্কাছ আলী সরকার। নামকাওয়াস্তে অন্যদের পোস্টার মাইকিং থাকলেও তেমন গণসংযোগ চোখে পড়েনি।
সরেজমিনে দেখা গেছে, উপজেলার প্রতিটি হাট বাজার, অলিগলি, দোকানের সামনে ও ফাঁকা জায়গা পোস্টারে ছেয়ে গেছে। সেই সঙ্গে চলছে প্রার্থীদের উঠান বৈঠক, আলোচনা সভা, মিছিল ও গণসংযোগ। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত প্রার্থী ও কর্মীদের তৎপরতা চললেও উত্তাপ ছড়ায়নি ভোটের মাঠ।
হাতিয়া ইউনিয়নের বাসিন্দা সাইফুল ইসলাম বলেন, এই আসনে আমরা যোগ্য প্রার্থী দেখে ভোট দিবো। যেন সে এলাকার উন্নয়নে কাজ করে।
আরেক ভোটার আবুল হোসেন বলেন,এখানে আওয়ামী লীগ ও স্বতন্ত্র প্রার্থীর মধ্যে হাড্ডা হাড্ডি লড়াই হবে। সে ক্ষেত্রে নিরপেক্ষ নির্বাচন চাই আমরা ভোটাররা।
আরেক জন ভোটার মকবুল মিয়া বলেন, ভোট নিয়ে আমাদের মধ্যে সংশয় রয়েছে। কেননা সব দলের অংশ গ্রহণ না থাকায় অনেকেই ভোট দানে অনিচ্ছুক।
জাতীয় পার্টির প্রার্থী আব্দুস সোবহান বলেন,দেশ যে গতিতে উন্নয়নে এগিয়ে গেছে। ঠিক সেই গতিতে আমাদের উলিপুর উপজেলা পিছিয়ে পড়েছে। সাধারণ ভোটারের মতো আমার মধ্যেও সংশয় রয়েছে যে,ভোট সুষ্ঠু হলেও ফলাফল ঠিক থাকবে কিনা? সেই ক্ষেত্রে সরকার ও নির্বাচ কমিশনের নিকট আহবান করছি যে ভোট ও ফলাফল সঠিকভাবে হয় সে মোতাবেক কাজ করা। জনগণ আমাকে যদি ভোট দিয়ে নির্বাচিত করে। তাহলে আমার প্রথম কাজ হবে অনুন্নত উলিপুরকে উন্নত করা।
স্বতন্ত্র প্রার্থী ডা. আক্কাছ আলী সরকার বলেন,ভোট সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হবে প্রধানমন্ত্রীর এমন আশ্বাসে আমি প্রার্থী হয়েছি।আল্লাহ আমাকে জনগণের ভোটে নির্বাচিত করলে উলিপুরে ইন্ডাস্ট্রি গড়ে তুলে বেকারত্ব দূর করব। দারিদ্র্যপীড়িত এই অঞ্চলের মানুষকে রংপুর-ঢাকা গিয়ে যেন চিকিৎসা নিতে না হয়। সেজন্য উলিপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এবং জেলার জেনারেল হাসপাতালকে আধুনিকায়ন ও মেডিকেল কলেজে রূপান্তরিত করার জন্য কাজ করবো। সেই সাথে উলিপুরকে একটি স্মার্ট উপজেলা হিসেবে গড়ে তুলতে যা যা প্রয়োজন সব করা হবে।
আওয়ামীলীগের প্রার্থী সৌমেন্দ্র প্রসাদ পান্ডে গবা বলেন, বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা আমাকে এ আসনে মনোনয়ন দিয়েছেন। দলীয় কিছু গ্রুপিং থাকলেও আমাকে প্রার্থী করায় ৮০ভাগ গ্রুপিং মিটে
গেছে। বাকি টুকুও কেন্দ্রীয় এবং জেলা কমিটির হস্তক্ষেপে দূর হবে। কেননা আওয়ামীলীগ মানে এক পরিবার।সেই মোতাবেক দলীয় নেতাকর্মীসহ আমি প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছি। জনগণ ভোট দিয়ে আমাকে নির্বাচিত করলে নদী ভাঙন রোধ, যানজট নিরসন, বেকারত্ব দূরীকরণসহ যাবতীয় সমস্যার সমাধান করবো।
এ বিষয়ে জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক সাইদুল আরীফ বলেন, ভোট সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী পর্যাপ্ত রয়েছে। ভোটারদের নিরাপত্তা এবং ভোটের মাঠে সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সব ধরণের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।#