শুক্রবার, ২১শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ -muktinews24(তথ্য মন্ত্রনালয় কর্তৃক নিবন্ধনকৃত, রেজি নং-৩৬)

তিস্তার মহাপরিকল্পনা ন্যায্য হিস্যা দাবি নিয়ে করণীয় শীর্ষক গণ শুনানি অনুষ্ঠিত 

তিস্তার মহাপরিকল্পনা ন্যায্য হিস্যা দাবি নিয়ে করণীয় শীর্ষক গণ শুনানি অনুষ্ঠিত 
ইব্রাহিম আলম সবুজ রাজারহাট কুড়িগ্রাম প্রতিনিধিঃ
রোববার ৯ ফেব্রুয়ারি বিকেলে কাউনিয়ার তিস্তা সেতু পাড়ে তিস্তা মহাপরিকল্পনা ন্যায্য হিস্যা দাবি নিয়ে করনীয় শীর্ষক গণ শুনানি অনুষ্ঠিত হয়।
এ গণশুনানীতে কুড়িগ্রামের রাজারহাট ও  লালমনিরহাটের তিস্তা তীরবর্তী মানুষ তাদের দুঃখ, দূদর্শার কথা দুই উপদেষ্টাগণ কে জানিয়েছেন।
গণশুনানি অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন   পানিসম্পদ, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান এবং যুব ও ক্রিড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঈয়া।
স্থানীয় সরকার ও যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া বলেছেন, গত সরকার ভারতের সঙ্গে নতজানু হয়ে কেবল ছবি তুলেছে, কিন্তু তিস্তা নিয়ে কোনো কথা বলেনি। আমরা অন্তর্বর্তী সরকার পররাষ্ট্র নীতির ক্ষেত্রে প্রথম থেকেই জোরদার আছি। আমরা তিস্তার ন্যায্য হিস্যা দিতে ভারতকে বাধ্য করব। রোববার বিকালে কাউনিয়ার তিস্তা সড়ক সেতু ও ব্রিজের পাশে তিস্তা নিয়ে করণীয় শীর্ষক শুনানিতে অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
আসিফ মাহমুদ আরও বলেন, তিস্তার চরে বিভিন্ন আবাদি ফসল নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এখানে কোল্ড স্টোরেজ নাই, তাই এখানে বেশি করে কোল্ডস্টোরেজ করা হবে। তাহলে কৃষকের ফসল নষ্ট হবে না। এখানে কাউনিয়া থেকে লালমনিরহাট ব্রিজের কাজ আমি থাকতেই শুরু করতে চাই। এখানে দেখেছি শিক্ষার হার কম, তাই এখানে কয়েকটি লাইব্রেরি স্থাপনের কাজ হাতে নিয়েছি।
পানিসম্পদ, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ান হাসান বলেন, চলতি ২০২৫ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে তিস্তা মহাপরিকল্পনা চুড়ান্ত প্রস্তুত করা হবে। ইতিপূর্বে চায়নার সাথে যে তিস্তা মহাপরিকল্পনা চুক্তি হয়েছিল তা টেক সই হতো না তাই পরিকল্পনায় কী থাকবে কী থাকবে না এজন্য পানি উন্নয়ন বোর্ড এবং আপনাদের মতামত নিয়ে আবারো পাওয়ার চায়না  এ প্রকল্প পরিকল্পনা গ্রহন করবে।  এ অঞ্চলের ৪৫ কিলোমিটার নদী ভাঙন এলাকা তার মধ্যে ২২ কিলোমিটার বেশি নদী ভাঙন প্রবণ এলাকা তাই মার্চ মাসের মধ্যে টেন্ডার আহ্বান করে নদী ভাঙন রোধে কাজ শুরু করার জন্য আমি পানি উন্নয়ন বোর্ড কে নির্দেশ দিয়েছি। তিনি আরো বলেন, তিস্তা কোন দেশের একক নদী না। কেউ যদি মনে করে তিস্তা কারো একক নদী তা হবে তাদের ভু়ল ধারনা। তিনি বলেন কেউ যদি আমাদের বন্ধু হয় তা হলে বর্ষা কালে পানি ছাড়ার আগে কেন আমাদের জানান না। তিনি আরো বলেন অর্ন্তবর্তী কালীন সরকারের কাছে  আপনাদের অনেক প্রত্যশা কিন্ত আমাদের কাছে তেমন অর্থ নেই তবু তিস্তা পরিকল্পনা বাস্তবায়নে আমরা উদ্যোগ গ্রহন করেছি।
গণশুনানিতে অংশ নিয়ে জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্যসচিব আখতার হোসেন বলেন, তিস্তার পারে যারা বাস করছে, তাদের একেকজনের বাড়ি ৫-৬ বার ভেঙেছে। রবীন্দ্রনাথ বলেছেন হাঁটু পানি, আপনারা দেখেন সেখানে হাঁটু পানিতে নাই। সবাই শুধু সান্ত্বনা দিয়েছে, কিন্তু ২০২৫ সালেই এর একটা সমাধান চাই।
নদী একটা সভ্যতার বিকাশ ঘটায়। নদী হবার কথা ছিল আশীর্বাদ, কিন্তু হয়েছে দুঃখ। আখতার হোসেন আরও বলেন, ভারত আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করে বাংলাদেশের সঙ্গে ছিনিমিনি খেলছে। তিস্তার পানি নিয়ে ভারত যে টালবাহানা করেছে, দরকার হলে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বিচারের সম্মুখীন হয়ে তিস্তার পানির ন্যায্য হিস্যা চাই। তিস্তা নদীর মাটি খনন করে দুপাড়ে দিয়ে জমি রক্ষা করে।
তিস্তার পারে হাসপাতাল নাই, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান তেমন নাই। যখন একজন মা বাচ্চা প্রসব করবে তখন তাকে ঘোড়ার গাড়ি করে, কোনোরকম আনা হয়। তাই অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে বিনীত অনুরোধ তিস্তার সমাধান চাই।
বিভাগ
শেয়ার করুন

মতামত লিখুন