রবিবার, ২৮শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ -muktinews24(তথ্য মন্ত্রনালয় কর্তৃক নিবন্ধনকৃত, যার রেজি নং-৩৬)

সংবাদ শিরোনামঃ

কুড়িগ্রামে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি,

কুড়িগ্রামে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি,

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধিঃ
বৃহস্পতিবার থেকে দুধকুমার নদীর পানি হু-হু করে বৃদ্ধি পেয়ে নিম্নাঞ্চল তলিয়ে গিয়ে উঠানে ঢুকেছে পানি। শুক্রবার (১৪ জুলাই) সকালে রান্নাঘরের মেঝে তলিয়ে গেছে। ফলে রান্না বন্ধ হয়ে গেছে।

জিনিসপত্র টানতে দুপুর গড়িয়ে গেছে। শুক্রবার দুপুর দেড়টার দিকে কুড়িগ্রামের সদর উপজেলার যাত্রাপুর ইউনিয়নের পোড়ারচর গ্রামে গিয়ে দেখা যায় গৃহবধু শাপলার বাড়ীর চিত্র। স্বামী বাবুল আলী এক সন্তানকে কোলে নিয়ে আছেন, অপর সন্তানটি তার শরীর ঘেঁষে দাঁড়িয়ে আছে।

শাপলা তখন চালভাজা আর কাঁঠালের বিচি ভাজছেন। দুপুরে এই আহারেই তাদের দিন কেটে যাবে। বন্যা হলেই এমন দুর্দশা হয় এসব পরিবারে।

পার্শ্ববর্তী দক্ষিণ ভগবতীপুর গ্রামের গৃহবধু নার্গিস জানান, চারদিন থেকে পানিবন্ধী হয়ে আছি। কেউ খোঁজখবর নেন না। ঘরের চৌকিতে পানি ওটায় পার্শ্ববর্তী উঁচু বাড়ীতে আশ্রয় নিয়েছেন তারা। এই গ্রামে প্রায় ৪৫/৫০টি বাড়ীতে পানি উঠেছে।

নাগেশ্বরী উপজেলার নুনখাওয়া ইউনিয়নের চর কাফনা গ্রামের নুর বখত জানান, গতকাল থেকে পানির তোড় বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে। নীচু এলাকার বাড়ীঘরে পানি ঢুকতে শুরু করেছে। লোকজন গবাদিপশু নিয়ে শঙ্কায় রয়েছেন।

গৃহবধু নাজমা জানান, চারদিকে পানি থাকায় ঠিকমতো রান্নাবান্না করতে পারছি না। ছেলেমেয়ে দেরকে ভালোমন্দ কিছু খাওয়াতে পারছি না।

কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়নের তথ্যমতে শুক্রবার দুপুর ৩টার রিডিং অনুযায়ী দুধকুমার নদী ৫৪ সে.মিটার, ধরলা নদী ২১ সে.মিটার বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল।

তবে তিস্তা নদীর পানি ব্রীজ পয়েন্টে ২০ সে.মিটার এবং ব্রহ্মপূত্র নদের পানি চিলমারীতে ৩৪ সে.মিটার বিপদসীমার নীচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। যেভাবে পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে তাতে এসব নদীর পানিও বিপৎসীমা অতিক্রম করতে পারে।

এদিকে, দুধকুমার নদীর পানি অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধির ফলে দুধকুমার নদী তীরবর্তী পানি উন্নয়ন বোর্ডের একটি সংস্কারকৃত রাস্তার দু’দিক তলিয়ে গিয়ে লোকালয়ে পানি ঢুকেছে। বন্যা পরিস্থিতির কারণে কুড়িগ্রামে প্রায় ১০ হাজার পরিবার কবলিত হয়েছে বলে জানাগেছে।

এ ব্যাপারে কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, এই পানি বৃদ্ধির অবস্থা ৩ থেকে ৪দিন পর্যন্ত থাকতে পারে। তারপর পানি নেমে যাবে।

কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের কোন বাঁধ বন্যায় ডুবে যায়নি বলে নিশ্চিত করে তিনি জানান, নাগেশ্বরী উপজেলায় একটি সড়ক সংস্কারের কাজ করেছে পাউবো। সেটির দুটি অংশ প্লাবিত হয়ে লোকালয়ে পানি ঢুকেছে।

জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল আরীফ জানান, ইতিমধ্যে উপজেলা গুলোতে ৬৫ মে.টন চাল উপ-বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এছাড়াও আমাদের কাছে ৫৮৫ মে.টন চাল, ১০লক্ষ টাকা ও ১হাজার ৭শ’ প্যাকেট শুকনো খাবার মজুদ রয়েছে। আমরা বন্যার্তদের তালিকা করছি, তালিকা পেলে উপ-বরাদ্দ দেয়া হবে।

শুক্রবার বিভিন্ন বন্যা এলাকা পরিদর্শন করে জেলা প্রশাসক ৮’শ প্যাকেট শুকনো খাবার বিতরণ করেছেন বলে জানিয়েছেন।

 

বিভাগ
শেয়ার করুন

মতামত লিখুন