এইচএসসিতেও গোল্ডেন জিপিএ ৫ পেল পা দিয়ে লিখে পরীক্ষা দেয়া মানিক রহমান
ফুলবাড়ী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি :
এইচএসসিতেও গোল্ডেন জিপিএ-৫ পেয়ে সফলতার সাথে উত্তীর্ণ হয়েছে পা দিয়ে লিখে পরীক্ষা দেয়া শারীরিক প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী মানিক রহমান। এ বছর নীলফামারী জেলার সৈয়দপুর সরকারী বিজ্ঞান কলেজের বিজ্ঞান বিভাগ থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল সে। এর আগে ২০২২ সালে কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী জছিমিঞা মডেল সরকারী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েও গোল্ডেন জিপিএ ৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হয় অদম্য মেধাবী এই মানিক রহমান। তার সাফল্যের ধারাবাহিকতায় বাবা মা শিক্ষক শিক্ষিকা সহ সকলেই মুগ্ধ।
মানিক রহমানের বাড়ী কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার সদর ইউনিয়নের চন্দ্রখানা গ্রামে। ওই গ্রামের ব্যবসায়ী মিজানুর রহমান ও সহকারী অধ্যাপক মরিয়ম বেগমের বড় ছেলে সে। শুধু এসএসসি- এইচএসসিতে নয় বাবা-মা ও শিক্ষকদের অনুপ্রেরণায় নিজের আত্মবিশ্বাস ও মনোবলকে কাজে লাগিয়ে পিইসি পরীক্ষায় গোল্ডেন জিপিএ-৫ সহ ট্যালেন্টপুলে বৃত্তি এবং জেএসসিতেও গোল্ডেন জিপিএ-৫ পেয়ে সকলের মুখ উজ্জ্বল করেছিল মানিক রহমান। এছাড়াও পা দিয়ে মোবাইল চালানো এবং কম্পিউটার টাইপিং এ যথেষ্ট পারদর্শী সে। তাই প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে ভবিষ্যতে একজন দক্ষ কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার হতে চায় সে।
মানিকের বাবা মিজানুর রহমান ও মা মরিয়ম বেগম জানান, আমাদের দুই ছেলের মধ্যে মানিক বড়। ছোট ছেলে মাহীম নবম শ্রেণিতে পড়ে। মানিক জন্ম থেকেই শারিরীক প্রতিবন্ধী। তার দুটি হাত নেই, একটি পা অন্যটার চেয়ে অনেকাংশে খাটো। কিন্তু প্রতিবন্ধী হলেও আমরা তাকে প্রতিবন্ধী মনে করি না। হাত না থাকায় ছোট থেকেই আমরা তাকে পা দিয়ে লেখার অভ্যাস করিয়েছি। পা দিয়ে লিখলেও তার লেখা অনেক সুন্দর এবং পড়াশোনায় সে খুবই মনোযোগী। সবাই দোয়া করবেন কম্পিউটার ইন্জিনিয়ার হওয়ার স্বপ্ন যেন তার পূরণ হয়।
মানিক রহমান বলেন, আমার দুটি হাত না থাকলেও আল্লাহর অশেষ রহমত,বাবা মা ও শিক্ষকদের দোয়া এবং অনুপ্রেরণায় আমি পিইসি থেকে এইচএসসি পর্যন্ত সকল পরীক্ষায় গোল্ডেন জিপিএ-৫ পেয়েছি। সকলেই দোয়া করবেন আমি যেন প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে ভবিষ্যতে কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার হতে পারি।
এ প্রসঙ্গে সৈয়দপুর সরকারী বিজ্ঞান কলেজের অধ্যক্ষ আবুল কালাম আজাদ জানান, শারীরিক প্রতিবন্ধী হওয়ার পরও মানিক রহমান আমাদের কলেজ থেকে গোল্ডেন জিপিএ-৫ পেয়েছে। সে যেমন তার বাবা- মায়ের চোখের মনি তেমনি আমাদের চোখের মনি। তার ভাল ফলাফলের জন্য প্রতিষ্ঠানের সকলেই মুগ্ধ ও গর্বিত। দোয়া করি তার স্বপ্নগুলো যেন পুরণ হয়।