উলিপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ
উলিপুর (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি : কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রোগীদের জন্য রান্না করা খাবার, উৎকোচের বিনিময় বিল প্রদানসহ বিস্তর অভিযোগ তার বিরুদ্ধে। এসব বিষয় জানাজানি হলে হাসপাতাল স্টাফদের মাঝে মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়।
জানা গেছে, গত ২৮ এপ্রিল স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃমোহাম্মদ হারুন অর রশীদ উলিপুর হাসপাতালে যোগদান করেন। যোগদানের পর থেকে তিনি বিভিন্ন অনিয়ম দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়েন।
অভিযোগ, স্বাস্থ্য কর্মকর্তা হারুন অর রশীদ হাসপাতালে রোগীদের খাদ্য সরবরাহকারী ঠিকাদারের কাছ থেকে বিল স্বাক্ষর বাবদ প্রতি মাসে চার হাজার টাকা করে উৎকোচ গ্রহণ করেন। এ ছাড়া রোগীদের জন্য রান্না করা মাছ-মাংস প্রতিদিন তাকে দুই পিস করে দিতে হয়। শুধু তাই নয় রোগীদের জন্য বরাদ্দকৃত ডিম, দুধ এবং কলাতেও ভাগ বসান এই কর্মকর্তা। বিষয়টি জানাজানি হলে হাসপাতালের স্টাফদের মাঝে মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়।
একটি সূত্র জানায়, সম্প্রতি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেরামতের কাজ নামমাত্র করে নিয়ে ঠিকাদারের লোকের কাছ থেকে আর্থিক এবং তার বাসার জন্য ও অফিসের জন্য দুটি এসি কিনে নিয়েছেন। এ ছাড়া বেশিরভাগ সময় ব্যক্তিগত কাজে তিনি সরকারি গাড়ি ব্যবহার করেন বলেও অভিযোগ দীর্ঘদিনের।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে হাসপাতালের কয়েকজন স্টাফ বলেন, কখনও শুনিনি রোগীদের জন্য রান্না করা মাছ-মাংস ডাক্তার খায়। এটা আমাদের জন্য লজ্জার বিষয়।
হাসপাতালে রোগীদের খাদ্য সরবরাহকারী ঠিকাদারের ম্যানেজার দিপু বলেন, রোগীদের জন্য মাছ-মাংস রান্না করা হলে (স্বাস্থ্য কর্মকর্তা হারুন অর রশীদ) কে দুই পিস করে দিতে হয়। এ ছাড়া বিলে স্বাক্ষর করে নিতে প্রতি মাসে তাকে চার হাজার করে টাকা দিতে হয় । টাকা ছাড়া বিল পাস করেন না।
এ বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাঃ মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, সামান্য একটু তরকারি শুধুমাত্র পরীক্ষা করা হয়, এক পিস দুই পিস না। তবে আমার বিরুদ্ধে এরকম কোনো অভিযোগ থাকলে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে জানাতে পারে। তদন্তে দোষী সাব্যস্ত হলে আমার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিবে কর্তৃপক্ষ।
কুড়িগ্রাম সিভিল সার্জন ডাঃ মন্জুর-এ-মুর্শেদ জানান, এরকম কোনো অভিযোগ আমার কাছে আসেনি। তবে রোগীদের খাবার দেওয়ার আগে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ খাদ্য পরীক্ষা (টেস্টিং ফুড) করে দেখবেন। এ বিষয়ে কেউ লিখিত বা মৌখিক অভিযোগ করলে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।