শুক্রবার, ৩রা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ -muktinews24(তথ্য মন্ত্রনালয় কর্তৃক নিবন্ধনকৃত, রেজি নং-৩৬)

আদালতে ভুয়া নথি দিয়ে অবৈধ ইটভাটা চালনা

আদালতে ভুয়া নথি দিয়ে অবৈধ ইটভাটা চালনা

মুক্তিনিউজ২৪ ডট কম ডেস্ক : পরিবেশ অধিদপ্তর বলেছে, লক্ষ্মীপুরে আইন অমান্য করে গড়ে উঠা অর্ধশতাধিক ইটভাটার বিরুদ্ধে হওয়া রিটের রায় নিজেদের পক্ষে নিতে নকল স্বাক্ষরের নথি আদালতে জমা দিয়েছে ইট ভাটার মালিকরা। এমন কিছু নথি তাদের হাতে পৌঁছেছে। এসব কৃষি জমির মাটি কেটে তৈরি করা হচ্ছে ইট। অবৈধভাবে পোড়ানো হচ্ছে কাঠ। ফলে দিন দিন পরিবেশ ও জীববৈচিত্র বিপন্ন হচ্ছে। বসতবাড়ি ও ইউনিয়ন পরিষদের কাছাকাছি ইটভাটা নির্মাণের স্বাস্থ্যঝুঁকিও বাড়ছে।  এসব ইট ভাটায় কাজ করছে কয়েকশ শিশু শ্রমিক। সাধারণ শ্রমিকের চার থেকে পাঁচ ভাগ কম মজুরি এদের । ফলে দিন দিন বাড়ছে শিশু শ্রমিকের সংখ্যা। এসব ইটভাটার বেশিরভাগেরই নেই পরিবেশ ছাড়পত্র। নিয়ম অনুযায়ী উপজেলা থেকে ৩ কিলোমিটার, সরকার স্বীকৃত সংরক্ষিত, জনবসতিপূর্ণ ও আবাসিক এলাকা, স্কুল-কলেজ, কৃষি জমি, বনাঞ্চল এবং ৫০টির অধিক ফলের গাছ থাকলে সেখানে ইটভাটা স্থাপন করা যায় না। কিন্তু  এসব নিয়ম-কানুন না মেনেই ইটভাটার মালিকরা কৃষি জমিতে প্রতি বছর নতুন নতুন ইটভাটা তৈরি করছে। লক্ষ্মীপুর সদর, চন্দগঞ্জ থানাসহ রামগঞ্জ, রায়পুর, রামগতি ও কমলনগর উপজেলার বিভিন্ন স্থানে গড়ে উঠেছে শতাধিক ইটভাটা। পরিবেশ রক্ষায় সনাতনী পদ্ধতির পরিবর্তে জিগজ্যাগ পদ্ধতিতে ভাটা নির্মাণের জন্য নির্দেশনা থাকলেও ইটভাটা কর্তৃপক্ষ নানান অজুহাতে তা করছে না। ইট পোড়ান চলছে ২০ ফুটের চিমনি দিয়ে।। ভাটাগুলোর পাশে রয়েছে ধানক্ষেত। আর ১০০ থেকে ১৫০ গজের মধ্যে রয়েছে জনবসতি। টিনের ড্রাম চিমনি দিয়ে কাঠ পোড়ানোর ধোঁয়া ছড়িয়ে পড়ছে লোকালয়ে। ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন (নিয়ন্ত্রণ) আইন ২০১৩ অনুযায়ী, আবাসিক এলাকা ও কৃষিজমির এক কিলোমিটারের মধ্যে ইটভাটা স্থাপন নিষিদ্ধ। পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র ও লাইসেন্স ছাড়াই ঘনবসতি এলাকাগুলোতে পরিবেশ দূষণ করে গড়ে উঠেছে অবৈধ ইটভাটা। প্রশাসনের  চোখের সামনেই নিয়ম উপেক্ষা করে শিশু শিক্ষার্থীদের খাটাচ্ছেন শ্রমিক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে । লক্ষ্মীপুরের কমলনগরের মদিনা ইট ভাটায় কাজ করছে ১২-১৪ জন শিশু শ্রমিক। একজন সাধারণ শ্রমিকের তুলনায় শিশু শ্রমিককে নামমাত্র মজুরিতে কাজ করানো হয়। এ বিষয়ে মদিনা ব্রিক ফিল্ডের মালিক আরিফ হোসেনের ভাষ্য,  ‘আমরা তো তাদেরকে জোর করে কাজে আনছি না। তারা কাজ করতে আসে আমরা তাদেরকে কাজ দেয়।’   পরিবেশ ও ফসলি জমি নষ্ট করার বিষয়ে বললে তিনি মন্তব্য করেন, ‘তাহলে তো ইট ভাটা করা যাবে না। পরিবেশ অধিদপ্তরে সহকারী পরিচালক আব্দুল মালেক মিয়া সাংবাদিক অ আ আবীর আকাশকে জানিয়েছেন, ‘এসব ইট ভাটার মালিকরা পরিবেশ অধিদপ্তরের কাগজপত্র নকল করে আদালত রিট করে তাদের পক্ষে মামলায় রায় আনছে। এ ধরনের কয়েকটি কাগজ আমাদের হাতে এসে পৌঁছেছে। তাদের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। লক্ষ্মীপুরের জেলা প্রশাসক সুরাইয়া জাহান জানান, ‘ইট ভাটায় শিশু শ্রমিক ও অবৈধ ইটা ভাটার বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনার জন্য শীঘ্রই মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হবে। কোনও ইট ভাটায় শিশু শ্রমিকরা কাজ করতে পারবে না। যারা শিশু শ্রমিক দিয়ে কাজ করাচ্ছেন তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যাবস্থা নেওয়া হবে।

বিভাগ
শেয়ার করুন

মতামত লিখুন