সুবর্ণচরে বিদ্যুতের ভেলকিবাজি ও ভুতুড়ে বিলে অতিষ্ঠের প্রতিবাদে মানববন্ধন
নোয়াখালী জেলা প্রতিনিধি:
সুবর্ণচর উপজেলাকে বলা হয় নোয়াখালীর কৃষি ভান্ডার। মানব সভ্যতার দৈনন্দিন জীবনের সাথে বিদ্যুতের প্রভাব রয়েছে সকল ক্ষেত্রে। সুবর্ণচরে বিগত দিনের রেকর্ড ভেঙ্গে বর্তমানে কয়েক গুণ বেশি লোডশেডিং ও বিদ্যুৎ বিলে দিশেহারা জনগণ। গত কয়েক ঠিকমতো বিদ্যুৎ না থাকলেও মাস শেষে অস্বাভাবিক বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করতে হচ্ছে গ্রাহকদের। অতিষ্ঠ গ্রাহকেরা পল্লী বিদ্যুতের অসহনীয় লোডশেডিং ও ভুতুড়ে বিলে জনজীবন কে বিষিয়ে তুলেছে। তাই পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির এসব অনিয়ম ও খামখায়েলির প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছে সুবর্ণচরের সচেতন নাগরিক।
সোমবার (০১লা জুলাই) দুপুরে সুবর্ণচর নাগরিক অধিকার বাস্তবায়ন কমিটির আয়োজনে উপজেলা গোল চত্ত্বরে ঘণ্টাব্যাপী এ মানববন্ধন করেন তাঁরা।
মানববন্ধনকারীরা বলেন, আগের তুলনায় এখন লোডশেডিং বাড়ছে, চলমান এইচএসসি পরীক্ষার সময়ও গতকাল রবিবার বিকেল ৪ টা থেকে রাত ১১ টা পর্যন্ত বিদ্যুৎ ছিল না। এরপর ও কয়েক গুণ বেশি বিদ্যুৎ বিল আসছে। বিদ্যুৎ অফিসে যোগাযোগ করলে অন্য দপ্তরকে দায়ী করে আগামী মাস থেকে সব ঠিক হয়ে যাবে বলে ভেলকিবাজি করে আসছে কর্তৃপক্ষ।
তারপরেও অস্বাভাবিক বিল আসছে। সময়মতো বিল পরিশোধ না করলে বিদ্যুৎ অফিসের লোকজন সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে বাহিনির মতো মাঠে রয়েছেন । বিচ্ছিন্ন সংযোগ পুনরায় সংযোগ নিতে গেলে ভুতুড়ে বিল পরিশোধের পাশাপাশি সংযোগ নিতে গুনতে হচ্ছে বাড়তি টাকা।
মানববন্ধনকারীরা এ অবস্থা থেকে পরিত্রাণের জন্য প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। এ সময় সুবর্ণচরের একাধিক সেচ্ছাসেবী সংগঠন মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারীদের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করেন।
সুবর্ণচর নাগরিক অধিকার বাস্তবায়ন কমিটির সদস্য মোঃ দিদারুল আলম বলেন, ‘সুবর্ণচরের মানুষ ১৬-১৮ ঘন্টা লোডশেডিং এর কবলে পড়ে। আগে আমার বাড়িতে ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা বিল আসত। এ মাসে বিল এসেছে ১ হাজার ৮০০ টাকা। আমরা এই অসহনীয় লোডশেডিং ও ভুতুড়ে বিদ্যুৎ বিল থেকে পরিত্রাণ চাই।’
সলোরিডার কর্মী রিদওয়ান হোসেন বলেন, ‘ সুবর্ণচরে কারখানা না থাকার পরেও অসহনীয় লোডশেডিং দিচ্ছি, খাওয়ার সময় নামাজের সময় বিদ্যুৎ থাকে না, রাতে ঘুমানোর সময় বিদ্যুৎ থাকে না। সারাদিন কর্মব্যস্ত হয়ে বাড়ি ফিরে দেখি বিদ্যুৎ নেই, মোবাইলে চার্জও দিতে পারিনা।
নব প্রত্যয় যুব সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মো. এনামুল হক বলেন, ‘কয়েক মাস ধরে বিদ্যুৎ বিল অনেক বেশি আসছে। লাইনম্যানকে বললে তাঁরা বলেন আর আসবে না, কিন্তু ৬ মাস ধরে অনাকাঙ্ক্ষিত বিল আসছেই।
মোহাম্মদপুর যুব সংগঠনের সভাপতি শরীফ ছালা উদ্দিন বলেন, ‘স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা বলছেন নির্বাচনের পরে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করে সুবর্ণচরের বিদ্যুৎ ব্যবস্থা উন্নতির জন্য কাজ করবেন কিন্তু নির্বাচিত হয়ে তারা তা করেননি বাধ্য হয়ে রাস্তায় নামতে হয়েছে।’
এ বিষয়ে সুবর্ণচর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জোনাল অফিসের ডিজিএম আফজল হোসেন বলেন, ‘এ ধরনের অভিযোগ দুই একটা আমার কাছে আসে। ভুলত্রুটি হতে পারে। আমাদের কাছে এলে অবশ্যই আমরা সংশোধন করে দেব।’
মানববন্ধনে আরো বক্তব্য রাখেন, কবি ও সাংবাদিক হানিফ মাহমুদ, বাদশা আলম, সাংবাদিক খালিদ হাসান মামুনসহ অনেকে।