মাদ্রাসার সম্পত্তি থেকে মসজিদের তহবিল সংগ্রহ; শিক্ষক শিক্ষার্থীদের সড়ক অবরোধ
ঘোড়াঘাট (দিনাজপুর) প্রতিনিধিঃ দিনাজপুরের ঘোড়াঘাটে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ, শিক্ষক, কর্মচারী, শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও এলাকাবাসী লেখা সম্বলিত ব্যানার নিয়ে রাস্তা অবরোধ ও অবস্থান কর্মসূচী পালন করেছে ঘোড়াঘাট দাখিল মাদ্রাসার ছাত্র শিক্ষক।
বৃহস্পতিবার (৮ নভেম্বর) বেলা ১২ টায় মাদ্রাসার সামনে মহাসড়কে আধাঘন্টা ধরে চলে এই কর্মসূচী।
শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা এসময় জানান, মাদ্রাসার জায়গায় একটি মসজিদ আছে। এলাকার লোকজন নিয়ে মসজিদের আলাদা একটি কমিটি আছে। অন্য দিকে আমাদের মাদ্রাসার বর্তমান পরিচালনা কমিটির সভাপতি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা। গত বুধবার আমাদের সভাপতি ইউএনও স্যার, মসজিদ কমিটি, স্থানীয় লোকজন ও মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ-শিক্ষক মিলে মসজিদের তহবিল সংগ্রহের জন্য আলোচনায় বসা হয়। আলোচনায় সিন্ধান্ত নেওয়া হয় মাদ্রাসা থেকে মসজিদ তহবিলের জন্য প্রতিবছর ৮০ হাজার দিতে হবে। জোড় করে চাপিয়ে দেওয়া দাবির প্রতিবাদে আমরা এ কর্মসূচি পালন করছি।
স্থানীয় লোকজন জানান, আমাদের পূর্ব পুরুষরা এই মাদ্রাসা ও মসজিদ করার জন্য জায়গা দিয়েছেন। সেই সময় এলাকার লোকজন আনুমানিক ৫৫ বিঘা জমি মাদ্রাসার নামে দিয়ে ছিলেন। মাত্র পয়তাল্লিশ পরিবার মিলে এই মসজিদটির খরচ বহন করা হয়। কিন্তু উন্নয়নসহ অন্যান্য খরচের ব্যয়ভার বহন করা আমাদের পক্ষে দিন দিন খুব কঠিন হয়ে পড়ে। তাই এর আগে উভয় পক্ষ আলোচনায় বসা হয়। সিন্ধান্ত অনুযায়ী রেজুলেশনের মাধ্যমে মাদ্রাসার জমির আয় থেকে প্রতি বছরের জুনে ত্রিশ হাজার টাকা মসজিদ তহবিলে দেওয়ার সিন্ধান্ত করা হয়। তাঁরা শুধু মাত্র ২২ সালে ত্রিশ হাজার টাকা দেয়। এরপর দেওয়া বন্ধ করে দেয়। বিষয়টি ইউএনও স্যার কে জানানো হলে, গত বুধবার তিনি সহ মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ ও স্থানীয় লোকজন মিলে আলোচনায় বসা হয়। আলোচনায় গত ২৩ ও ২৪ সাল মিলে পূর্বের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী দুই বছরের ষাট হাজার আর নতুন বছর থেকে আশি হাজার টাকা মসজিদ তহবিলে দেওয়ার সিন্ধান্ত হয়।
তারা আরও জানান, যেহেতু তারা বেতন পান, তাহলে মাদ্রাসার সম্পত্তি থেকে আল্লাহর ঘর মসজিদের তহবিলে দিতে বাঁধা কোথায়? এই সম্পত্তির টাকায় বা কোন কাজে ব্যবহার করা হয়?
এদিকে কর্মসূচি চলাকালে রাস্তার দুপাশে শত শত গাড়ি জমা হয়ে যানজটের সৃষ্টি হয়। খবর পেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রফিকুল ইসলাম ও ঘোড়াঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজমুল হক উপস্থিত হয়ে যানজট নিরসন সহ আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রফিকুল ইসলাম জানান, শিক্ষক শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে আন্দোলনরত শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের কর্মসূচি প্রত্যাহার করে ক্লাসে ফিরে যাওয়ার জন্য বলা হলে তারা ফিরে যায়। এ বিষয়ে স্থানীয় লোকজন, মসজিদ কমিটি ও মাদ্রাসার শিক্ষকগণের সাথে আলোচনা করে পরবর্তীতে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে।